কলকাতা, 4 জানুয়ারি: সিঙ্গুরের জমি ফেরত নিয়ে রাজ্যের অবস্থান জানতে চাইল কলকাতা হাইকোর্ট । 4 সপ্তাহের মধ্যে রাজ্যকে তাদের অবস্থান জানিয়ে রিপোর্ট জমা দিতে হবে ৷ বৃহস্পতিবার এমনটাই নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ । সিঙ্গুরের জমি ফেরত চেয়ে মামলা হয়েছিল হাইকোর্টে । শুধু জমি ফেরতই নয়, জমিগুলিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে হবে- এমন দাবিও করা হয়েছে ৷
এই দাবি জানিয়ে ভারতীয় শান্তি দল নামে একটি সংগঠন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের দারস্থ হয়েছে । আগে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ছিল, জমিদাতা কৃষকদের ক্ষতিপূরণ-সহ জমি ফেরতের বিষয় বিবেচনা করবে রাজ্য। আবেদনকারীদের দাবি, শীর্ষ আদালতের নির্দেশের পরও রাজ্যের কাছে বহুবার আবেদন করে কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি । তাই তাঁরা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন ।
উল্লেখ্য, 2006 সালের 18 মে পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এবং তৎকালীন শিল্পমন্ত্রী নিরুপম সেনের সঙ্গে বৈঠক করেন টাটা গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান রতন টাটা ৷ এই বৈঠকের মাধ্যমে সিঙ্গুরে ন্যানো গাড়ির কারখানা তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই কারখানা গড়ার জন্য 2006 সালে প্রায় 997 একর জমি অধিগ্রহণ করে রাজ্য সরকার ।
সে সময় বিরোধী নেত্রী ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তিনি জমি অধিগ্রহণের বিরোধিতা করেন এবং প্রায় 400 একর জমি অনিচ্ছুক কৃষকদের ফেরত দেওয়ার দাবি জানান । বিরোধী দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে 2008 সালে বৈঠক করেন রাজ্যের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী । কিন্তু বিরোধী দলনেত্রী তাঁর অনিচ্ছার কথা জানিয়ে অনশন আন্দোলন শুরু করেন ।
প্রবল আন্দোলনের মুখে পড়ে টাটা গোষ্ঠী 2008 সালের অক্টোবর মাসে এই প্রকল্প রাজ্য থেকে সরিয়ে গুজরাতের সানন্দে নিয়ে যাওয়ার কথা ঘোষণা করেন। মামলা সুপ্রিম কোর্টে গড়ায়। শীর্ষ আদালত 2016 সালে কৃষকদের জমি ফেরত দিতে নির্দেশ দেয়। এবার সেই জমি ফিরিয় দেওয়ার প্রসঙ্গে রাজ্যকে অবস্থান জানাতে বলল হাইকোর্ট ৷