কলকাতা, 29 এপ্রিল: বেসরকারি বাস, মিনিবাসের ভাড়া বৃদ্ধি না করা হলে আর পরিষেবা দেওয়া সম্ভব নয়। এবার চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি দিয়েছিল বেসরকারি বাস-মিনিবাস মালিক পক্ষ। পুনরায় রাজ্য পরিবহন দফতর এবং বেসরকারি গাড়ির মালিকদের মধ্যে ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে শুরু হয়েছিল টানাপোড়েন। জয়েন্ট ফোরাম অফ ট্রান্সপোর্ট অপারেটরস এই মর্মে পরিবহন মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীর কাছে দাবিপত্র জমা দেওয়া হয়েছে।
শুধু বাস এবং মিনিবাসই নয়, ভাড়া বৃদ্ধি করতে হবে অ্যাপ ক্যাব এবং পুলকারের ক্ষেত্রেও। তাই জয়েন্ট ফোরাম অফ ট্রান্সপোর্ট অপারেটর্স ব্যানারে বেসরকারি বাস, মিনি বাস, অ্যাপ ক্যাব এবং পুল কার মালিকরাও পরিবহন মন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছিলেন। ভাড়া বৃদ্ধির পাশাপাশি আরও চার দফা দাবিদাওয়া নিয়ে পরিবহনমন্ত্রীকে আর্জিও জানানো হয়েছিল। তবে পরিবহনমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী জানিয়ে দিয়েছেন, আপাতত বৃদ্ধি হচ্ছে না ভাড়া। তাই বাসের ক্ষেত্রে 2018 সালের ভাড়াতেই পরিষেবা দিতে হবে। তবে অন্যান্য দাবিদাওয়াগুলি দফতর বিবেচনা করে দেখা হবে।
এই বিষয় সংগঠনের অন্যতম সদস্য রাহুল চট্টোপাধ্যায় বলেন, "পরিবহন মন্ত্রীকে দাবিপত্র দেওয়া হয়েছে ৷ তিনি জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে ভাড়া বৃদ্ধি করা সম্ভব নয়। তবে তিনি এও বলেছেন যে আমাদের আর্জি তিনি সঠিক জায়গা পর্যন্ত পৌঁছে দেবেন। তাই আমরা আগামী তিন সপ্তাহ অপেক্ষা করব। কিন্তু তারপর যদি হঠাৎ করেই রাস্তা থেকে বাস, মিনিবাস বা অ্যাপ ক্যাবের সংখ্যা হ্রাস পায় তবে সেই ক্ষেত্রে আমরা দায়ী থাকব না।"
আরও পড়ুন: থাইল্যান্ডে দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে যাচ্ছেন অন্ধ্রের প্যারা-শাটলার, আর্থিক সাহায্য রামোজি রাও'য়ের
একইভাবে সংগঠনের আর এক সদস্য ইন্দ্রনীল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "ভাড়া বৃদ্ধি না হওয়ায়, চালকদের মধ্যে গাড়ি চালানোর আর কোনও উৎসাহ নেই। একদিকে জ্বালানির দাম অগ্নিমূল্য অন্যদিকে অ্যাপ ক্যাব সংস্থাগুলি চড়া হারে কমিশন কেটে নিচ্ছে ৷ চালকের হাতে দিনের শেষে কিছুই পরে থাকছে না। তার থেকে মালিককে টাকা দিতে হচ্ছে। এছাড়াও গাড়ির মেরামতের কাজ থেকে শুরু করে পারমিট রিনিউয়াল। একাধিক গাড়ি ঋণ নিয়ে কেনা ৷ এর সঙ্গে নতুন যুক্ত হয়েছে ভেহিকেল ট্র্যাকিং ডিভাইস লাগাবার খরচও। এইসব খরচ মিটিয়ে সংসার চালানো অসম্ভব হয়ে পড়ছে দিনে দিনে।"
অন্যদিকে টানা প্রায় এক বছর হয়ে গেলেও অ্যাগ্রিগেটর গাইডলাইনও চালু করা হচ্ছে না। এই আইন লাগু হলে চালক এবং মালিকদের অনেকটাই সুরাহা হতে পারে। আর্নিং পার কিলোমিটার অর্থাৎ প্রতি কিলোমিটার পিছু ভাড়া নির্দিষ্ট করা না হলে রাস্তায় অ্যাপ ক্যাবের সংখ্যা আরও কমতে থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। চালক ও মালিকপক্ষের দাবি, নন এসি গাড়ির ক্ষেত্রে প্রতি কিলোমিটারে 20 থেকে 21 টাকা করতে হবে এবং এসির ক্ষেত্রে প্রতি কিলোমিটারে 24 থেকে 25 টাকা করতে হবে। বর্তমানে নন এসি র ক্ষেত্রে প্রতি কিমি তে 14 থেকে 15 টাকা আর এসির ক্ষেত্রে 18 থেকে 19 টাকা রয়েছে।
আগে শহর এবং শহরতলিতে প্রায় 30 থেকে 35 হাজার অ্যাপ ক্যাব চলত আর এখন সেই সংখ্যা 10 হাজার এসে ঠেকেছে। শুধু তাই নয়, মোটর ভেহিকেল অ্যাক্ট 1988 সেকশান 67 (i) এর অনুসারে রাজ্য পরিবহন দফতরকে, যাত্রী পরিবহনের ভাড়া বেঁধে দেওয়ার নির্দেশ করা হয়েছে। কিন্তু এই বিষয় পরিবহন দফতর হাত গুটিয়ে বসে রয়েছে বলে অভিযোগ মালিকপক্ষের।