কলকাতা, 15 ডিসেম্বর : বাতানুকূল কামড়ায় শান্তিনিকেতন যাওয়ার পথে রেলের শৌচালয়ে গিয়ে ধূমপান করতেন । এমন দৃশ্য তাঁর সহযাত্রী অনেকেই দেখেছেন। মহাকরণ, নন্দন চত্বরে ধূমপায়ীদের কথায় "চেইন স্মোকার" ছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। অসুস্থ হওয়ার একদিন আগেও প্রাতঃকৃত্যের সময় সিগারেটে একটান দিয়েছেন। কোনও শক্তি তাঁকে রুখতে পারত না। কিন্তু, আজ হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার সময় চিকিৎসকদের সিগারেট ছাড়ার কথা দিলেন বুদ্ধবাবু ৷ কিছুক্ষণ আগেই হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী । হাসপাতাল থেকে ফেরার সময় চিকিৎসকদের তিনি কথা দিয়ে এসেছেন, এবার আর সিগারেট খাবেন না।
এতদিন বাড়িতে দীর্ঘদিনের কর্মী তপনবাবুই তাঁর ধূমপানের ব্যবস্থা করতেন। এই বয়সেও দিনে একটি করে সিগারেটে একটান দেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। না হলে তিনি প্রাতঃকৃত্য করে স্বস্তি পান না বলে শোনা যায়। সেই সিগারেট আসত আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের মুজাফফর আহমেদ ভবনের এক অফিসকর্মীর কাছ থেকে। 9 ডিসেম্বর হাসপাতালে ভরতি হওয়ার আগের দিন দুপুরেও সিগারেট খেয়েছেন। হাসপাতালে ভেন্টিলেশন থেকে বেরনোর পরের দিন কিছুটা সুস্থ হয়ে নার্সদের কাছে আবদার জানিয়েছিলেন, সিগারেটে একটি টান দেওয়ার। নার্সরা প্রবল আপত্তি জানান।
আরও পড়ুন : হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য
তাঁরা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে বলেন, ফায়ার অ্যালার্ম রয়েছে। ধূমপান করা যাবে না। সেই সময় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী নাকি নার্সদের বলেছিলেন, ফায়ার অ্যালার্ম বন্ধ করে দিন। এক টান দিতেই হবে। এহেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের কাছে সিগারেট ছাড়া একদিন কাটাতে বেগ পেতে হয়। কিন্তু, এবার তাঁর চিকিৎসার জন্য তৈরি মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা তাঁকে অনুরোধ করেছেন সিগারেট না খাওয়ার জন্য। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীও তাঁদের আশ্বস্ত করেছেন, তিনি আর ধূমপান করবেন না।
তবে এমন প্রতিশ্রুতি অতীতে একাধিকবার দিয়েছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। সিগারেট তিনি ছাড়তে পারেননি। এবারও চিকিৎসকদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি কবে ভঙ্গ হবে সেই কথাই ভাবছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের পরিবারের সদস্যরা। কারও কথায় কাজ হবে না, সিগারেট তিনি খাবেনই। এমনটাই মনে করছেন তাঁর ঘনিষ্টদের অনেকে।