কলকাতা, 5 মে: দমদমের পর আবার একটি কামান তোলার কাজ শুরু হয়েছে ফেয়ারলি প্লেস সংলগ্ন স্ট্যান্ড রোডের সামনে। ব্রিটিশ আমলের এই কামানটি উদ্ধার করার পর প্রস্তাবিত মিউজিয়ামে সংরক্ষণ করা হবে বলে জানা গিয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে ওই কামান তোলার কাজ শুরু হলেও শুক্রবার বেলা 2টোর পর থেকে বন্ধ রয়েছে কাজ । জানা গিয়েছে, এক রেল আধিকারিকের আপত্তির কারণে সোমবার পর্যন্ত বন্ধ থাকবে কাজ ।
উল্লেখ্য, ফেয়ারলি প্লেস সংলগ্ন স্ট্যান্ড রোডের পথে যেতে আসতে রাস্তার ওপরে এই কামান পথ চলতি বহু মানুষ দেখেছেন। কিন্তু তার ভূত ভবিষ্যৎ সম্পর্কে কোন ধারণাই কারোর ছিল না। বিষয়টি নজরে আসতেই বৃহস্পতিবার থেকে ওই কামান তোলার কাজ শুরু হয়েছে। এদিনের মাটি খোঁড়াখুঁড়ির কাজের নজরদারিতে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের অ্যাডমিনিস্ট্রেটর জেনারেল অ্যান্ড অফিশিয়াল ট্রাস্টি প্রধান বিপ্লব রায় । ছিলেন বন্দুক, কামান ও পুরনো আগ্নেয়াস্ত্র বিশেষজ্ঞ অমিতাভ কারকুন ও কলকাতা পুলিশের একাধিক পদস্থ কর্তা।
যদিও বেলা বাড়তেই বন্ধ করতে হয় কাজ । কাজে বাধা আসে এক রেলের আধিকারিকের তরফ থেকে । তিনি দাবি করেছেন, ফেয়ারলি প্লেসের ওই নির্দিষ্ট এলাকা রেলের সম্পত্তি। রেলের তরফে কোনরকম অনুমতি নেওয়া হয়নি। ফলে অনুমতি ছাড়া ওই এলাকায় খোঁড়াখুড়ি করলে রেল সম্পত্তিতে কোনরকম সমস্যা দেখা দিলে তার দায় কে নেবে তা নিয়ে সামান্য বিবাদও বাদে। সঙ্গে সঙ্গে রেল কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকেও বসা হয় । এরপর রাজ্যের অ্যাডমিনিস্ট্রেটর জেনারেল এন্ড অফিশিয়াল ট্রাস্টির তরফে জানানো হয়েছে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কামানটি তোলার কাজ সম্পন্ন করা হবে প্রাথমিকভাবে আগামী সোমবার পর্যন্ত খোঁড়াখুড়ির কাজ বন্ধ রাখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: রাজ্যের পরিবহণ ও অগ্নিনির্বাপন দফতর জিতল স্কচ অ্যাওয়ার্ড
বিপ্লব রায় বলেন, "ভারতীয় সংস্কৃতিকে তরুণ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে আন্তর্জাতিক মানের মিউজিয়াম তৈরি হবে কলকাতায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মেয়র ফিরহাদ হাকিম এবং আইনমন্ত্রী মলয় ঘটকের সঙ্গে ইতিমধ্যে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। মধ্যযুগ থেকে শুরু করে ভারতীয় ইতিহাস ও কলকাতার প্রাচীন সভ্যতার ওপর যা ঐতিহাসিক নিদর্শন উদ্ধার করা হয়েছে তা ওই মিউজিয়ামে রাখা হবে। এই ইতিহাসধর্মী সামগ্রীর উপর নতুন প্রজন্মের জ্ঞানের প্রসার ঘটার পাশাপাশি গবেষকরাও এই সমস্ত বিষয় নিয়ে চর্চা করতে পারবেন।"
ফেয়ারলি প্লেসের ওই কামানটির বিষয়ে বিশেষজ্ঞ অমিতাভ কারকুন বলেন, "প্রাথমিক ধারণার ভিত্তিতে মনে হয়েছে কামানটি 10 থেকে 11 ফুট লম্বা হতে পারে। 18 শতাব্দীর শেষের দিকে কামানটি উলম্বভাবে পোঁতা হয়েছে। তৎকালীন সময়ে গঙ্গা এই স্ট্যান্ডার্ডের ধার বরাবর বয়ে গিয়েছে। মূলত যে সমস্ত কামান গোলা বর্ষণের কাজে ব্যবহার করা হত না, সেইগুলো এইরকমভাবে উলম্বভাবেই পোঁতা হত। তবে গোটা কামানটি উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত তার ইতিহাস সঠিক ভাবে বলা সম্ভব নয়।"