কলকাতা, 13 জুন: উপাচার্যদের নিয়ে কড়া নির্দেশ রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতরের। রাজ্যপালের নিয়োগ করা, অস্থায়ী উপাচার্যের বেতন না-দেওয়ার নির্দেশ দিল শিক্ষা দফতর। সম্প্রতি একটি সাংবাদিক বৈঠক করে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়ে দিয়েছিলেন রাজ্যপালের নিয়োগ করা সমস্ত উপাচার্যদের মানছে না উচ্চশিক্ষা দফতর। তারপরেই তাঁদের বেতন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। সেই বিষয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী। তার কিছুদিন পরেই উচ্চ শিক্ষা দফতর থেকে চিঠি পাঠানো হয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে। তাতেই বেতন ঘিরে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর প্রায় 11টি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অস্থায়ী উপাচার্যের নাম ঘোষণা করেছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তারপরেই রাজ্যপাল ও রাজ্য সরকারের সংঘাত আরও বেড়ে যায়। শিক্ষা দফতরের সঙ্গে কোনওরকম আলোচনা ছাড়াই উপাচার্য নিয়োগ করছেন রাজ্যপাল, বলে অভিযোগ তুলেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তবে এর প্রেক্ষিতে রাজ্যপাল বলেছিলেন আলোচনা মানেই সম্মতি দেওয়া নয়।
আরও পড়ুন: রাজ্যের 11 বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজ্যপালের উপাচার্য নিয়োগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা
তবে এই আলোচনা কবে হয়েছিল তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন শিক্ষামন্ত্রী। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু রাজ্যপালের নিয়োগ করা উপাচার্যদের এই পদ গ্রহণ না-করার অনুরোধও জানিয়েছিলেন। এই নিয়োগ সম্পূর্ণ বেআইনি বলেও জানান তিনি। এরই সঙ্গে আইনি পরামর্শ নেওয়ার কথাও শোনা গিয়েছিল তাঁর গলায়। এসবের মাঝেই এই চিঠি প্রকাশ্যে আসে। যেখানে বলা হয়েছে, শিক্ষা দফতরের সঙ্গে কোনওরকম যোগাযোগ না-করেই এই অস্থায়ী নিয়োগ করা হয়েছে যা একদমই আইনসম্মত নয়। ফলে এই উপাচার্যদের নিয়োগ বৈধ নয়। তাই এই উপাচার্যরা তাঁদের পারিশ্রমিক বা ভাতা তুলতে পারবেন না। এর অন্যথা হলে কড়া ব্যবস্থা নেবে উচ্চ শিক্ষা দফতর।
তবে এর মধ্যেই শিক্ষামন্ত্রীর অনুরোধ না-শুনেই প্রায় সবকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরাই নিজেদের নতুন দায়িত্ব এবং পদগ্রহণ করে নিয়েছেন। শুধুমাত্র গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৌরিন বন্দ্যোপাধ্যায় দক্ষিণ দিনাজপুরের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ হওয়া সত্ত্বেও তিনি দায়িত্ব অস্বীকার করেন। অন্যদিকে, ঠিক এই সময় রাজ্যের প্রাক্তন, বর্তমান ও অন্যান্য উপাচার্যরা রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তাঁদের মতে, রাজ্যপাল অন্যায়কে প্রশ্রয় দিচ্ছেন।
আরও পড়ুন: নিয়ম ভাঙাকে উৎসাহিত করছেন রাজ্যপাল, অভিযোগ প্রাক্তন ও বর্তমান উপাচার্যদের
কারণ নিয়ম অনুযায়ী রাজ্যপাল কখনওই সরাসরিভাবে উপাচার্যের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন না। উচ্চশিক্ষা দফতর মারফত রাজ্যপাল উপাচার্যের মধ্যে যোগ সাধন করবেন। তবে রাজ্যপাল উচ্চশিক্ষা দফতরকে অন্ধকারে রেখেই রাজ্যের উপাচার্যদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন বলেই অভিযোগ তুলেছিলেন তাঁরা। তার মধ্যে উচ্চশিক্ষা দফতরের এই কড়া চিঠি যা আবারও বাড়িয়ে তুলছে রাজ্যপাল ও রাজ্য সরকারের দ্বন্দ্ব।