কলকাতা, 1 অগস্ট: রাজ্য জাতীয় শিক্ষানীতি মেনে নেয়নি ৷ রাজ্যের পড়ুয়ারা উচ্চশিক্ষায় যাতে অন্য রাজ্যের পড়ুয়াদের থেকে পিছিয়ে না পড়েন বা ভবিষ্যতে তাঁদের যাদে কোনও সমস্যায়য় পড়তে না হয়, সেই কারণে শুধুমাত্র চার বছরের স্নাতক ডিগ্রি কোর্সের বিষয়টি চালু করা হয়েছে ৷ মঙ্গলবার বিধানসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে এমনটাই জানিয়েছেন রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তাঁর সাফ কথা, চার বছরের স্নাতক কোর্সের বিষয়টি মেনে নেওয়া না হলে, আবার বামফ্রন্টের আমলের মত পশ্চাদ অপসারণ হতো। ঠিক সময় কম্পিউটার চালু না করে বামফ্রন্ট যে ভুল করেছিল, সেই একই ভুল করতে চায় না এই সরকার। তাই ছাত্র-ছাত্রীদের স্বার্থের কথা ভেবে চার বছরের স্নাতক কোর্স চালুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিন শিক্ষা মন্ত্রী স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার জাতীয় শিক্ষানীতি মেনে নেয়নি। তার বদলে রাজ্য সরকার নতুন শিক্ষানীতি গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, "জাতীয় শিক্ষানীতি রাজ্য সরকার মেনে নিয়েছে, এই বিষয়ে ভুল ধারণা তৈরি হয়েছে। আসলে তিন বছরের ডিগ্রি কোর্স, চার বছর হওয়াতে অনেকে ভাবছেন রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় শিক্ষানীতি মেনে নিয়েছে। এক্ষেত্রে রাজ্যের গঠিত একটি কমিটির সুপারিশ ছিল। তাই কার্যকর করা হয়েছে। এমনটা না করলে রাজ্যের ছাত্র-ছাত্রীরা সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে সমস্যার মধ্যে পড়তেন। 4 বছরের ডিগ্রি কোর্স চালু না করলে আমাদের 7 লক্ষ ছাত্র-ছাত্রীরা সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতায় অংশই নিতে পারতেন না। এক্ষেত্রে পড়ুয়াদের বাইরের রাজ্যে গিয়ে পড়ার প্রবণতা বেড়ে যেত। যারা আর্থিক ভাবে অস্বচ্ছল, তারা বিপদে পড়তেন। এই সমস্ত কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ৷"
পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, "একাধিক ইস্যুতে জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ে রাজ্যের আপত্তি আছে। একটা বিভ্রান্তমূলক খবর প্রচারিত হচ্ছে। অনেকে বলছেন, রাজ্য সরকার ন্যাশনাল এডুকেশন পলিসি মেনে নিয়েছে। এটা সত্যের অপলাপ বললে কম বলা হবে। রাজ্য সরকার একটা পৃথক স্টেট এডুকেশন পলিসি তৈরি করেছে, যেখানে সমস্ত ভাল ব্যবস্থাগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।"
আরও পড়ুন: 'জেলখাটা লোক', বুদ্ধদেবকে দেখতে এসে নাম না করে কুণালকে নিশানা রাহুলের
প্রসঙ্গত কেন্দ্রীয় শিক্ষা নীতি নিয়ে অবস্থানগত আপত্তি দীর্ঘদিন ধরেই রয়েছে একাধিক রাজনৈতিক দলের। খুব স্বাভাবিকভাবেই রাজ্য চার বছরের অনার্স কোর্স চালু করায়, এই সিদ্ধান্তে কি কেন্দ্রীয় শিক্ষা নীতি অনুসরণ করে নেওয়া হয়েছে, এমন প্রশ্ন উঠেছে নানা মহলে। খুব স্বাভাবিকভাবে এই দিন শাসকদলের বিধায়ক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী হুমায়ুন কবির জানতে চেয়েছিলেন, রাজ্য কি কেন্দ্রীয় শিক্ষানীতি মেনে নিয়েছে। তার এই প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু।