কলকাতা, 1 ডিসেম্বর: বিশ্ববিদ্যালের সম্পত্তি ভাঙচুর ও উপাচার্যকে নিগ্রহের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ তুলে আপাতত রাজ্যের বিএড বিশ্ববিদ্যালয় বা বাবাসাহেব আম্বেদকর এডুকেশন ইউনিভার্সিটির নিয়মিত কাজকর্ম স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ । তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে সহমত নন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ৷ তিনি জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত কাম্য নয় ও বাঞ্চিতও নয় ৷ এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শিক্ষা দফতর আইনি পথে এগোতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি ৷
বিশ্ববিদ্যালয়টির তরফে শুক্রবার এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বেসরকারি বিএড ও এমএড কলেজগুলির সঙ্গে যুক্ত কিছু ব্যক্তির কাছ থেকে পাওয়া গুরুতর হুমকির মুখে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব অংশীদারের নিরাপত্তা এবং সরকারি সম্পত্তির ক্ষতির সম্ভাবনা মাথায় রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম স্থগিত করা হল, যতক্ষণ না প্রশাসনিক সহযোগিতায় বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে ততক্ষণ এই সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে ।
এই সংক্রান্ত একটি হুমকির ভিডিও পাওয়া গিয়েছে ৷ সেখানে কাউকে দেখা না গেলেও শোনা গিয়েছে বিভিন্ন ব্যক্তির বক্তব্য। ভিডিয়োটিতে এক বক্তাকে বলতে শোনা গিয়েছে,"আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে অবস্থান- বিক্ষোভ করব । গেটে বাউন্সার আটকাতে এলে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের তালা ভেঙে আমরা ঢুকব এবং আমরা উপাচার্যকে ঘেরাও করে রাখব । প্রয়োজনে ওনাকে তালাবন্ধ করে রাখব।" কারও মুখে আবার 'জঙ্গি আক্রমণাত্মক মনোভাব', কারও মুখে 'আক্রমণাত্মক' হওয়ার কথা। কেউ বলছেন,"ভিতর থেকে তালা মেরে দেব । বা আমরা ওনার রুমে গিয়ে বসে থাকব ।" ওই ভিডিওতেই মলয় নামে এক ব্যক্তিকে উত্তেজিতভাবে 'স্ট্র্যাটেজি'র কথাও বলতে শোনা গিয়েছে ।
উল্লেখ্য, চলতি বছরে 253টি বেসরকারি বিএড কলেজকে পড়ুয়া ভর্তির অনুমোদন দেয়নি এই বিশ্ববিদ্যালয় । যা নিয়ে আইনি লড়াইও চলছে । এরই মধ্যে হুমকির বার্তা পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত কাজকর্ম আপাতত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ । বাবাসাহেব আম্বেদকর এডুকেশন ইউনিভার্সিটির অন্তর্বর্তী উপাচার্য সোমা বন্দ্যোপাধ্যায় এই প্রসঙ্গে বলেন,"বুধবার রাত ১১টা নাগাদ আমরা হুমকির বিষয়ে জানতে পারি । একটি ভিডিওতে বলতে শোনা গিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পত্তি ভাঙচুর করা হবে এবং উপাচার্যকে নিগ্রহ করা হবে। সঙ্গে সঙ্গে পদক্ষেপ নিই। মুখ্যমন্ত্রী, উচ্চশিক্ষা দফতরের পাশাপাশি পুলিশকে জানাই । সিদ্ধান্ত নিই বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত কর্মকাণ্ড আপাতত স্থগিত রাখার । কারণ, বিশ্ববিদ্যালয় খুলে রাখলে যদি কোনও ছাত্র বা কর্মীর উপর কোনও হামলা হয় বা সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি হয়, তার দায়িত্ব কার উপর বর্তাবে ?"
এই বিষয় শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন,"আমি আমার দফতর ঠিকমত চালাতে না পারলে তাতে তালা লাগিয়ে চলে যাবো সেটাতো হয় না । বরং আমার পদত্যাগ করা উচিত । এমন ভাবে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেওয়াকে কোনওভাবেই আমরা সমর্থন করি না। তাছাড়া বিষয়টি আচার্য্যকে জানানো উচিত । কারণ তাঁর কথায় এনারা দায়িত্ত্ব নিয়েছেন। ইতিমধ্যেই আমি দফতরের সঙ্গে কথা বলেছি । দরকার হলে আইনের পরামর্শ নেব ।"
আরও পড়ুন: