কলকাতা, 27 জুলাই : আমহার্ট স্ট্রিট, গৌরীবাড়ির পর এবার বেহালার সাহাপুর । প্রায় 15 ঘণ্টা ধরে পড়ে থাকল কোরোনায় মৃতের দেহ । মৃতের পরিবারের বাকিরাও সকলে আক্রান্ত । অভিযোগ, এলাকার কাউন্সিলরকেও জানিয়ে কোনও লাভ হয়নি । ঘণ্টার পর ঘণ্টা দেহ পড়ে থাকল বাড়িতেই । দীর্ঘ টালবাহানার পর প্রশাসন থেকে মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হয় সৎকারের জন্য ।
গতরাতে সাহাপুর এলাকায় মৃত্যু হয় 62 বছরের ওই প্রবীণ ব্যক্তির । তিনি কোরোনায় আক্রান্ত ছিলেন ৷ তাঁর পরিবারের বাকি ছ'জনও কোরোনায় আক্রান্ত । ফলে বৃদ্ধের মৃত্যুতে রীতিমতো অসহায় অবস্থা ওই পরিবারের । গতরাতে মৃতের পরিবারের লোকেরা যোগাযোগ করেন কাউন্সিলরের সঙ্গে । অভিযোগ, কাউন্সিলর অশোক মণ্ডল ওই মৃতদেহ বাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়ার কোনও ব্যবস্থা করেননি । ঘটনার জেরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এলাকায় । সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কায় প্রতিবেশীরাও কেউ এগিয়ে আসেননি । দীর্ঘ সময় পরে সক্রিয় হয় পুলিশ । আজ বেলা তিনটে নাগাদ পৌরনিগম ও স্বাস্থ্য দপ্তরের প্রতিনিধিরা আসে দেহ উদ্ধারের জন্য । সাড়ে তিনটে নাগাদ দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় সৎকারের জন্য । পুরো ঘটনায় অমানবিকতার অভিযোগ তুলেছেন এলাকাবাসীরা ।
প্রসঙ্গত গৌরীবাড়িতে দিন কয়েক আগেই কোরোনায় মৃতের দেহ পড়েছিল মিষ্টির দোকানে । এর আগে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন । কিন্তু কোরোনার কারণেই মৃত্যু হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত না হয়ে চিকিৎসক ডেথ সার্টিফিকেট দিতে চাননি । ফলে দেহ ফিরিয়ে আনা হয় । গৌরীবাড়ি এলাকার স্থানীয় এক চিকিৎসককে এরপর খবর দেওয়া হয় । তিনিও গাইডলাইন অনুযায়ী সার্টিফিকেট দিতে চাননি রিপোর্ট আসার আগে । তখন উপায় না দেখে এক মিষ্টির দোকানে মৃতদেহ রেখে দেন কর্মীরা । বিষয়টি জানাজানি হতে ক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকার মানুষজন । মৃত্যুর পরের দিন সকালে তাঁর রিপোর্ট যায় সিঙ্গুরের বাড়িতে । কারণ ওই ল্যাবরেটরিতে তাঁর সিঙ্গুরের বাড়ির ঠিকানা দেওয়া ছিল । রিপোর্টে কোরোনা পজ়িটিভ ধরা পড়ে । এরপর স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্মীরা এস তাঁর দেহ নিয়ে যায় । কিন্তু সাহাপুরের ঘটনায় আগে থেকেই রিপোর্ট পজ়িটিভ ছিল । তারপরও কেন এই অমানবিক আচরণ তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ।