কলকাতা, 24 মে: বঙ্গ বিজেপিতে ফের আসতে পারেন সিদ্ধার্থনাথ সিং । সূত্র মারফত জানা গিয়েছে যে, আগামী নির্বাচনে বঙ্গ বিজেপির অবজারভার দায়িত্বে আসতে পারেন উত্তরপ্রদেশের এই বিজেপি নেতা । সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন । আর বছর ঘুরতে না-ঘুরতেই 2024-এর লোকসভা নির্বাচন । বাংলায় বিধানসভায় পদ্মফুল শিবিরের ভরাডুবির পর আর কোনও ঝুঁকি নিতে নারাজ দল । তাই পঞ্চায়েত নির্বাচন তো বটেই বিজেপির দৃষ্টির কেন্দ্রবিন্দুতে এখন লোকসভা নির্বাচন । আর বাংলাকে যে একেবারেই হালকাভাবে নিচ্ছে না বিজেপি, তা সম্প্রতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর আসন টার্গেট ঘোষণার পরেই স্পষ্ট হয়েছে নেতা থেকে কর্মী সমর্থকদের মধ্যে ।
লোকসভায় 35টি আসন নিশ্চিত করতে শুধু রণকৌশলই যে যথেষ্ট নয় তা আগেরবারই প্রমাণিত হয়েছে গেরুয়া শিবিরের কাছে । ভালো ফল করতে হলে নেতার ক্যারিশ্মার পাশাপাশি সেই রাজ্যের মানুষের আবেগ থেকে শুরু করে ভাষা এবং সংস্কৃতি সবটার সঙ্গেই একাত্ম হতে হবে । তাই হয়তো এই বিষয়টি বুঝেই বঙ্গ বিজেপির একাংশের নির্বাচনী অবজারভার হিসেবে প্রথম পছন্দ সিদ্ধার্থনাথ সিং ।
এমনটাও খবর পাওয়া যাচ্ছে যে, তাঁকে দমদম, যাদবপুর, কলকাতা দক্ষিণ এবং কলকাতা উত্তরের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে । এখনও পর্যন্ত এই কেন্দ্রগুলির দায়িত্বে রয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান । 2015 সালের শেষে এই রাজ্যে অবজারভার ছিলেন সিদ্ধার্থনাথ সিং । ওই সময় বিজেপির রাজ্য সভাপতি ছিলেন রাহুল সিনহা । তবে তারপর এই পদে আসেন কৈলাস বিজয়বর্গী ।
সূত্রের খবর, বঙ্গ বিজেপির একাংশ চাইছেন আবারও তাঁদের সঙ্গে যুক্ত হন সিদ্ধার্থনাথ সিং। কারণ তাঁদের মতে তিনি আগেও বাংলার দায়িত্বে থেকেছেন তাই বাংলার রাজনৈতিক সমীকরণ সম্বন্ধে অনেকটাই ওয়াকিবহল তিনি । শুধু তাই নয় তিনি বাংলার জামাই । তাই তিনি বাংলার সংস্কৃতি এবং মানুষের আবেগ বোঝেন । দলের একেবারে তৃণমূলস্তরের মানুষের সঙ্গে তিনি যেমন সখ্যতা বজায় রাখতে তেমনই তিনি জনসাধারণের সঙ্গে একেবারে তাঁদের কাছের জন হয়ে মিশতে পারেন ।
তবে কৈলাস বিজয়বর্গীয়র ক্ষেত্রে তৎকালীন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট সরিয়ে তাঁর সঙ্গে দিল্লির সখ্যতা থাকলেও দলের অভ্যন্তরে তিনি নিজের জায়গা তেমনভবে কোনওদিনই তৈরি করে উঠতে পারেননি । এমনটাই জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিজেপি নেতা । তিনি আরও জানান, যে হিন্দি বাদে ইংরেজি ভাষায় তার তেমন দক্ষতা না থাকায় প্রশাসনিক অনেক কাজেই সমস্যায় পড়তে হত তাঁকে । ঠিক একইভাবে বাংলার সংস্কৃতি কিংবা বাঙালির আবেগের সঙ্গে তিনি কোনওদিনই একাত্ম হয়ে ওঠার চেষ্টা করেননি । শুধুমাত্র কিছু নেতা এবং কর্মী সমর্থক নিয়েই ছিল তাঁর বৃত্ত । তাই সেইভাবে দলের ভিতরে বা বাইরে তেমন একটা জনপ্রিয় মুখ হয়ে উঠতে পারেননি কৈলাস বিজয়বর্গীয় ।
প্রসঙ্গত, বঙ্গ বিজেপির অবজারভার হিসেবে যখন সিদ্ধার্থনাথ সিং ছিলেন তখন সারদা এবং নারদা মামলায় একেবারে কোণঠাসা হয়ে গিয়েছিল মমতা সরকার । সেইসময় অনেককেই শিবির বদল করে এসেছিলেন বিজেপিতে । তাঁদের রাজনৈতিকভাবে একেবারে নাকানিচোবানি খাওয়াতে কোনও সুযোগই ছাড়েননি সিং । তাই তাঁকে আবারও যদি বঙ্গ বিজেপিতে ফিরিয়ে নিতে আসা হয় তাহলে নিঃসন্দেহে সাংগঠনিকভাবে অনেকটাই চাঙ্গা করবে পদ্ম শিবিরকে । পুরনো নেতা এবং কর্মীদের নিয়ে কাজ করার বিষয় যেহেতু সিং বরাবরই জোর দিয়েছিলেন তাই তাঁরাও আর একবার প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠবেন বলে মনে করছেন বিজেপির পুরনোপন্থীরা ।
আরও পড়ুন : সময়ের আগেই পড়ে যেতে পারে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার, দাবি মমতার