কলকাতা, 16 নভেম্বর: রাজ্য বিধানসভায় (West Bengal Assembly) 18 নভেম্বর থেকে শুরু হতে চলেছে শীতকালীন অধিবেশন (Winter Session) । রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু (President Droupadi Murmu) সম্বন্ধে রাজ্যের কারামন্ত্রী অখিল গিরির (Akhil Giri) করা মন্তব্যকে কেন্দ্র করে এই মুহূর্তে রাজ্য রাজনীতি উত্তাল । খুব স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনার আঁচ পড়তে পারে বিধানসভার অধিবেশনেও । রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) আগেই ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন, শীতকালীন অধিবেশনের আগে অখিল গিরিকে মন্ত্রিসভা থেকে সরানো না হলে, এই ইস্যু নিয়ে বিধানসভায় হইচই করবে বিরোধীরা ।
বুধবার বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Biman Banerjee) ডাকা সর্বদল বৈঠক ডেকেছিলেন ৷ সেই বৈঠকের পর অধ্যক্ষ নিজেই জানিয়ে দিলেন, বিধানসভা অধিবেশনে শাসক দল কী করবে, সেটা তাদের বিষয় বা বিরোধীরা কী করবে, তাদের ব্যাপার । কিন্তু অধ্যক্ষের দায়িত্ব হল বিধানসভাকে সচল রাখা । এক্ষেত্রে বিধানসভাকে সচল রাখতে যা করণীয় তিনি করবেন ।
একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, যেহেতু বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন ৷ তাই এই নিয়ে বিধানসভায় আলোচনা অর্থহীন । এই বিষয়ে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার আদালতে নেবে । তবে বিরোধীরা এই নিয়ে আলোচনা চাইলে রুলবুক মেনে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার তিনি নেবেন । অধ্যক্ষ জানিয়ে দেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) যা বলার তো বলেছেন । অখিল গিরি নিজেও ক্ষমা চেয়েছেন । এরপরে বিরোধীদের কী বলার থাকতে পারে !
এদিন অখিল গিরি প্রসঙ্গের পাশাপাশি একই সঙ্গে ওঠে বিরোধী দলনেতার তরফে রাজ্যের এক মন্ত্রীকে নিয়ে করা কুকথার বিষয়টিও । এক্ষেত্রে অধ্যক্ষ দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানিয়ে দেন, শাসকদলের মন্ত্রী হোন বা বিরোধী দলনেতা, কুকথা বা ব্যক্তি আক্রমণে সমর্থন নেই তাঁর । বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষায়, ‘‘এখন যেন কটূকথার কম্পিটিশন শুরু হয়েছে । কে কত কটূ কথা বলতে পারে । এইটা আদৌ বাঞ্ছনীয় নয় । এগুলি থেকে বিরত থাকা উচিত । রাজনৈতিক দল তাদের কর্মসূচি করবে কিন্তু গালাগাল দিয়ে অন্যকে কটূ কথা বলার কী প্রয়োজন আছে, তা বুঝতে পারছি না ।’’
এদিন অধ্যক্ষের মতোই একই সুরে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় (Sovandeb Chatterjee) । তিনি বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মন্ত্রীর বক্তব্য নিয়ে দুঃখপ্রকাশ করেছেন । মন্ত্রী নিজেও দুঃখপ্রকাশ করেছেন ৷ এরপরে এই নিয়ে বিরোধীদের কী বক্তব্য থাকতে পারে ।’’
তিনি বলেন, ‘‘এরপরেও যদি বিরোধীরা এই নিয়ে বিধানসভায় হইচই করতে চায়, তাহলে বলতে হবে, তারা এটাকে রাজনৈতিক ইস্যু হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে । এটা এখন শুধুমাত্র রাষ্ট্রপতির সম্মানহানি হয়েছে, এর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় । এর থেকে বিরোধীরা কতটা মাইলেজ পেতে পারে তার চেষ্টা হচ্ছে ।’’
আরও পড়ুন: এবার বিধানসভার বিজনেস অ্যাডভাইজারি কমিটি থেকে বাদ পড়লেন পার্থ