কলকাতা, 2 মে: নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ড নিয়ে যখন রাজ্য-রাজনীতি উত্তাল, ঠিক সেই সময়ে নকল চাকরি পরীক্ষার্থী ধরা পড়ায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বিধাননগরে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের দফতরে ৷ মঙ্গলবার ধৃত বাপ্পা দেবনাথকে তুলে দেওয়া হয়েছে বিধাননগর পুলিশের হাতে ৷
মঙ্গলবার, 2014 ও 2017 সালের টেট উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীদের ইন্টারভিউ ছিল ৷ পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের দফতরে চলছিল এই ইন্টারভিউ ৷ মূলত, দক্ষিণ 24 পরগনার চাকরি প্রার্থীদের ইন্টারভিউ ছিল এদিন। প্রায় শেষ মুহূর্তে, চাকরির ইন্টারভিউ দিতে আসেন উত্তর 24 পরগনার গাইঘাটার মরাল ডাঙ্গার বাসিন্দা বাপ্পা দেবনাথ। তাঁর সার্টিফিকেট, পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন নম্বর দেখে সন্দেহ হয় পর্যদ আধিকারিকদের ৷ এরপরেই তাঁরা নিজেদের পুরনো ফাইল ঘেঁটে দেখেন ৷ সেখান থেকেই সন্দেহটা আরও বাড়ে ৷ অবশেষে জানা গিয়েছে ধৃত চাকরি পরীক্ষার্থী আসলে ভুয়ো ৷
পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পরিষদের ডেপুটি সেক্রেটারি পার্থ কর্মকার জানিয়েছেন, ডিপ্লোমা ইন এলিমেন্ট্রি এডুকেশনের যে সার্টিফিকেট অভিযুক্ত দেখিয়েছেন সেটা 2016 সালের রেজিস্ট্রেশন এবং সার্টিফিকেটটা নকল। এছাড়া অ্যাডমিট সার্টিফিকেট রেজিস্ট্রেশন তথ্যও নকল। তিনি বলেন, " প্রাইমারি টিচার্স রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের চাকরির ইন্টারভিউ ছিল। উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার একটি ছেলে বাপ্পা দেবনাথ সেকেন্ড হাফে এসেছিল। দক্ষিণ 24 পরগনা জেলার জন্য ইন্টারভিউয়ের জন্য এসেছিলেন তাও সেকেন্ড হাফে, দেখে সন্দেহ হয় ৷ ডিপ্লোমা ইন এলিমেন্ট্রি এডুকেশনের সার্টিফিকেট নকল ৷ অ্যাডমিট সার্টিফিকেট রেজিস্ট্রেশনও নকল। আমরা তাঁকে ধরেছি ৷ পরীক্ষা দিতে দিইনি। আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছি ৷"
আরও পড়ুন: ছেলে চক্রান্তের শিকার, দাবি ভুয়ো চাকরিপ্রার্থী অভিযোগে গ্রেফতার প্রীতমের বাবার
তিনি আরও বলেন, "ভেরিফিকেশন টেবিলে যাঁরা ছিলেন, তাঁরাই আমাকে বলেন, সার্টিফিকেটটা কেমন লাগছে। সঙ্গে সঙ্গে আমাদের যে পিটিটি আই সেল আছে সেই, সেকশনের যাঁরা ইনচার্জ আছেন তাঁদেরকে ডাকা হয় ৷ দেখা গিয়েছে, ওই নামে 2016 সালে যে রেজিস্ট্রেশন নাম্বার রয়েছে সেই নামে ও সেই নম্বারের কোন রেজিস্ট্রেশন নেই। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার রেনুকা প্রাইমারি টিচার ট্রেনিং ইনস্টিটিউট কলেজের নামে যে সার্টিফিকেট রয়েছে সেই রেজিস্ট্রেশনও নকল। ছেলেটি 2014 সালের টেট কোয়ালিফাইড বললেও ডিয়েড পরীক্ষার সার্টিফিকেটের রঙ আলাদা ছিল ৷ তাও আবার সেটা ছিল ল্যামিনেশন করা ৷ এই সবকিছু দেখে সন্দেহ হতেই ধরা হয়েছে ওই যুবককে ৷"
উল্লেখ্য, বেশ কয়েকঘন্টা পর্ষদের দফতরে বসিয়েই ধৃত বাপ্পা দেবনাথকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন আধিকারিকরা ৷ এরপর বিধাননগর পূর্ব পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে ভুয়ো চাকরি পরীক্ষার্থীকে ৷