কলকাতা, 18 নভেম্বর: 'দোস্তজী' ৷ বাংলার সিনেপ্রেমী মানুষের কাছে সম্প্রতি বেশ পরিচিতি পেয়েছে এই নামটি ৷ দুই বালকের বন্ধুত্বের গল্প বড় পর্দায় দেখতে প্রেক্ষাগৃহমুখী হচ্ছেন দর্শকরা ৷ ইতিমধ্যেই সমালোচক, দর্শকদের প্রশংসা কুড়িয়ে নিয়েছে নবাগত পরিচালক প্রসূণ চট্টোপাধ্যায়ের ছবি 'দোস্তজী' ৷ বন্দিত হয়েছে বিশ্ব চলচ্চিত্রের একাধিক মঞ্চে ৷ সেই সূত্র ধরেই এবার ব্যবসার নিরিখেও তাক লাগিয়ে দিল এই ছবি ৷ মুক্তির প্রথম সপ্তাহেই ব্যবসার নিরিখে নজরকাড়া সাফল্য পেয়েছে এই নতুন বাংলা ছবিটি ৷ প্রথম সপ্তাহে 'দোস্তজী'র ঝুলিতে 24.74 লক্ষ টাকা (Bengali Film Dostojee is doing well in box office)৷
যাঁরা বাংলা ছবি, এখানকার ছবির ব্যবসা ও স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাণের খোঁজ রাখেন তাঁরা জানেন 'দোস্তজী'র এই সাফল্য একাধিক কারণে গুরুত্বপূর্ণ ৷ নবাগত পরিচালক প্রসূণ চট্টোপাধ্যায় ৷ তাঁর এই ছবিতে ক্যামেরার সামনে ও নেপথ্যে কাজ করা কলাকুশলীদের অধিকাংশই নবাগত ৷ নামী, তারকা কোনও অভিনেতা, অভিনেত্রীর উপস্থিতি ছাড়াই সাফল্যের রাস্তায় হাঁটছে এই ছবি ৷ ছবির অসাধারণ দৃশ্যপট, দুই শিশু শিল্পীর অভিনয় ও গল্পের টানেই প্রেক্ষাগৃহে ভিড় জমাচ্ছেন দর্শকরা ৷ তথ্য বলছে এখনও পর্যন্ত প্রায় 25 হাজার দর্শক দেখে ফেলেছেন এই ছবি ৷ ছবিটির এই সাফল্য নিশ্চিতভাবে নতুন পরিচালক, যাঁরা স্বাধীনভাবে কাজ করার স্বপ্ন দেখেন, নতুন কিছু করার চিন্তা করেন তাঁদের পথ দেখাবে ও সাহস জোগাবে তা বলাই যায় (Dostojee box office collection)৷
আরও পড়ুন: গত দু'দিনের তুলনায় একটু ভালো, ঐন্দ্রিলার সুস্থতার আশায় বুক বাঁধছেন অনুরাগীরা
প্রসূণ চট্টোপাধ্যায় পরিচালিত প্রথম ছবি 'দোস্তজী' মুক্তি পেয়েছে 11 নভেম্বর ৷ পৃথিবীর 26টি দেশের বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসব ঘুরে 8টি আন্তর্জাতিক পুরস্কার জিতে নিয়েছে এই ছবি । 'দোস্তজী’র ঝুলিতে যাওয়া পুরস্কারগুলির মধ্যে অন্যতম হল ইউনেস্কোর 'সিফেজ প্রাইজ' (Bengali Film Dostojee) । এর আগে কোনও বাংলা ছবি এই পুরস্কার পায়নি । এছাড়াও জাপানের 'নারা আন্তর্জাতিক চলচিত্র উৎসব'-এ শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের পুরস্কারের পাশাপাশি ‘গোল্ডেন শিকা’ জিতেছে ছবিটি । লন্ডনের 'ইউকে এশিয়ান ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল'-এ শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের জন্য 'আর্টস কাউন্সিল অফ ইংল্যান্ড' থেকেও পুরস্কার পেয়েছে বঙ্গ তনয়ের এই সৃষ্টি । এ ছাড়াও 'মালয়েশিয়া গোল্ডেন গ্লোবাল অ্যাওয়ার্ড' এবং শারজাহ আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের পুরস্কারও পেয়েছে এই 'দোস্তজী' ।
নয়ের দশকে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন এক প্রত্যন্ত গ্রামের দুই খুদে পলাশ আর সাফিকুলের বন্ধুত্ব এবং চূড়ান্ত বিচ্ছেদের গল্পকেই এই ছবিতে তুলে ধরেছেন পরিচালক ৷ ছবির প্রেক্ষাপট বাবরি মসজিদ ধ্বংস এবং মুম্বই বিস্ফোরণের পরবর্তী সময় । 'দোস্তজী'র নিবেদনে রয়েছেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় । 'দোস্তজী'র দুই নায়ক পলাশ আর সাফিকুল জানিয়েছে তারা দু'জনেই ভবিষ্যতে অভিনয় করতে চায় প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে ।