কলকাতা,26 ডিসেম্বর: পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল হিসেবে তাঁর অভিজ্ঞতা নিয়ে বই লিখতে চান সিভি আনন্দ বোস (Governor is set to write a book on Bengal)। সম্প্রতি বাংলার রাজ্যপাল হয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকারের এই প্রাক্তন আমলা। একটি সাহিত্য সম্মেলনে অংশ নিয়ে রবিবার রাজ্যপাল বলেন, "বাংলার রাজ্যপাল হতে পারা আমার কাছে গর্বের । এই পদে থাকার অভিজ্ঞতা নিয়ে পরবর্তী সময়ে বই লেখার কথা ভাবছি।" রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, রাজ্যপালের এ হেন অভিপ্রায় বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ (Political observers think the statement is extremely significant)। গত কয়েক বছরে বারবার রাজ্য- রাজ্যপাল সংঘাত দেখেছে বাংলা। সংঘাত কখনও কখনও প্রশাসনিক স্তর অতিক্রম করে রাজনীতির উপাদানও হয়ে উঠেছে। রাজ্যপাল থাকাকালীন জগদীপ ধনখড় নিজের সাংবিধানিক দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন না করে কেন্দ্রের শাসক দলের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছেন এমন অভিযোগ করেছে তৃণমূল । পালটা তিনি লাগাতার বলে এসেছেন, "সংবিধানের বাইরে গিয়ে কোনওকিছুই করিনি।" এই আক্রমণ পালটা আক্রমণের আবহে উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন ধনখড়। অস্থায়ী রাজ্যপাল হিসেবে দায়িত্ব নেন লা গণেশন । আরও পরে স্থায়ী রাজ্যপাল হন সিভি আনন্দ বোস ।
রাজ্যপাল থাকার সময় গণেশনের সঙ্গে তেমন কোনও সংঘাত হয়নি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের । দু'তরফে সম্পর্ক এতটাই ভালো ছিল যে তৎকালীন রাজ্যপালের পারিবারিক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে চেন্নাই গিয়েছিলেন মমতা । নয়া রাজ্যপালের সঙ্গেও এখনও পর্যন্ত সংঘাত হয়নি রাজ্য প্রশাসনের। সম্প্রতি রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজভবন থেকে বেরিয়ে আসার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী তাঁর প্রশংসা করেন ।
আরও পড়ুন: রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ সুকান্ত'র, দিলেন 63 পাতার রিপোর্ট
সাহিত্য উৎসবে অংশ নিয়ে রাজ্যপাল যা বললেন তাতেও এই সৌজন্যের বার্তাই ছিল । তাঁর কথায়, "বাংলার রাজ্যপাল হতে পারা আমার কাছে গর্বের । এ রাজ্যের সাহিত্যের সম্ভার থেকে শুরু করে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বিরাট। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই মাটিরই সন্তান। আমার মনে হয়, বাংলা ভাষাটা প্রশান্ত মহাসাগরের মতো । সবমিলিয়ে বাংলা দেশের গর্ব । আমি নিজেকে এই রাজ্যের দত্তক-পুত্র বলে মনে করি । এখানকার রাজ্যপাল থাকার অভিজ্ঞতা নিয়ে বই লেখার ইচ্ছা আছে ।" তবে এই প্রথম নয়, এর আগেও সৌজন্যের বার্তা দিয়েছিলেন রাজ্যপাল । দায়িত্ব নেওয়ার আগেই সংবাদমাধ্যমে তিনি জানান, রাজ্যপাল হিসেবে তাঁর ভূমিকা রাজনৈতিক হবে না, হবে প্রশাসনিক। সাহিত্য উৎসবে অংশ নিয়ে আরও একবার সেই বার্তাই দিলেন তিনি ।