কলকাতা, ১৮ ডিসেম্বর : বৈশাখি বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগপত্র গ্রহণের সিদ্ধান্ত বেআইনি । আজ এই কথা স্পষ্ট জানাল রাজ্য উচ্চশিক্ষা দপ্তর । মিল্লি আল-আমিন কলেজের গভর্নিং বডির প্রেসিডেন্ট আমিরুদ্দিন ববিকে রাজ্য সরকারের জয়েন্ট সেক্রেটারির তরফে পাঠানো চিঠিতে একথা জানানো হয়েছে । দপ্তর থেকে কিছু না বলা পর্যন্ত বৈশাখি বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগপত্র গ্রহণ নিয়ে না এগোতে আবেদনও করা হয়েছে চিঠিতে ।
গতকাল বৈশাখি বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইস্তফাপত্র আচমকাই গ্রহণ করে রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দপ্তর । তাঁর জায়গায় মিল্লি আল আমিন কলেজে এলেন নতুন টিচার ইনচার্জ । বৈশাখি বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, তাঁকে না জানিয়েই ইস্তফাপত্র গ্রহণ করা হয়েছে । এই নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশও করেছেন তিনি ।
7 অগাস্ট মিল্লি আল আমিন কলেজের অধ্যক্ষ পদ থেকে ইস্তফা দেন বৈশাখি বন্দ্যোপাধ্যায় । সেই সময়, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন তিনি ৷ তোলেন চক্রান্তের অভিযোগ ৷ দাবি করেন, সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক কাজ করা হচ্ছে ৷ পুরো কাজটাই করা হচ্ছে শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশে ৷ শিক্ষামন্ত্রীকে এমন কাজ করতে নাকি নির্দেশ দিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷
আজ আবার বৈশাখি বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগপত্রের বিষয়টি নিয়ে নতুন করে মাথাচাড়া দিল জল্পনা । কারণ, মিল্লি আল-আমিন কলেজ সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠানের তকমা পাওয়ার পরেও গভর্নিং বডি গঠন না হওয়ায় সমস্যা হচ্ছিল । তা নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে একাধিকবার আলোচনা করেন বৈশাখি বন্দ্যোপাধ্যায় । শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে শেষ আলোচনার 1 সপ্তাহের মধ্যে মিল্লি আল-আমিন কলেজের গভর্নিং বডি গঠন করে উচ্চশিক্ষা দপ্তর । 27 নভেম্বর গভর্নিং বডির সভাপতি করা হয় আমিরুদ্দিন ববিকে ও সেক্রেটারি করা হয় বৈশাখি বন্দ্যোপাধ্যায়কে । উচ্চশিক্ষা দপ্তর গঠিত গভর্নিং বডির সভাপতিকে আজ উচ্চশিক্ষা দপ্তরের তরফে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, আইনত মিল্লি আল-আমিন কলেজ সংখ্যালঘু দ্বারা পরিচালিত হলেও, এটি সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত কলেজ হওয়ায় ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটিজ় অ্যান্ড কলেজেস (অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অ্যান্ড রেগুলেশন) অ্যাক্ট ২০১৭-র আওতায় আসবে । তাই এই আইনের নিয়মবিধি স্পন্সরিং অর্গানাইজেশনের সেক্রেটারিকে অন্য কোনও কথা বলার ক্ষমতা দেয় না ।
বিষয়টি নিয়ে বৈশাখি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "চিঠিটা আমাকে পাঠানো হয়েছে । কিন্তু, আমার অভিজ্ঞতা বলছে, সরকার যখনই এইরকম পদক্ষেপ করেছে আমার কলেজ সেটা মানেনি । তাই আমার বিশেষ কোনও আশা নেই । কলেজ প্রশাসনের যদি সদিচ্ছা না থাকে তাহলে সরকার যতই চেষ্টা করুক সুস্থ পরিবেশ তৈরি করতে পারবে বলে আমার মনে হয় না । 15 বছর চাকরির পরে আমার সঙ্গে যা ঘটেছে তা চূড়ান্ত অপমানজনক । "