কলকাতা, ১৭ ডিসেম্বর : বৈশাখি বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইস্তফাপত্র আচমকাই গ্রহণ করল রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দপ্তর । তাঁর জায়গায় মিল্লি আল আমিন কলেজে এলেন নতুন টিচার ইনচার্জ । বৈশাখি বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, তাঁকে না জানিয়েই ইস্তফাপত্র গ্রহণ করা হয়েছে । এই নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশও করেন তিনি।
7 অগাস্ট মিল্লি আল আমিন কলেজের অধ্যক্ষ পদ থেকে ইস্তফা দেন বৈশাখি বন্দ্যোপাধ্যায় । সেই সময়, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন তিনি ৷ তোলেন চক্রান্তের অভিযোগ ৷ দাবি করেন, সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক কাজ করা হচ্ছে ৷ পুরো কাজটাই করা হচ্ছে শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশে ৷ শিক্ষামন্ত্রীকে এমন কাজ করতে নাকি নির্দেশ দিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷
এরপর 14 অগাস্ট দিল্লি গিয়ে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে BJP-তে যোগ দেন তিনি । জানা যায়, কলকাতায় ফেরার পর তাঁদের দলের সাংগঠনিক কাজের বিশেষ দায়িত্ব দিতে চলেছে BJP । কিন্তু, প্রথম থেকেই নানা বিষয়ে দলের সঙ্গে তাঁদের দূরত্ব তৈরি হয় । আর দু'মাসের মধ্যেই শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাকতলার বাড়িতে দেখা যায় বৈশাখি বন্দ্যোপাধ্যায়কে । শুরু হয় জল্পনা । এরপর কালীঘাটে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকে ফোঁটা নেন শোভনবাবু । সঙ্গে ছিলেন বৈশাখি বন্দ্যোপাধ্যায় । কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও দেখা যায় দু'জনকে । এই সব দেখে অনেকেই মনে করতে শুরু করেন যে, কাননের সঙ্গে দিদির দূরত্ব কমছে ।
এরপর ৬ ডিসেম্বর মিল্লি আল আমিন কলেজের টিচার ইনচার্জের পদ থেকে ইস্তফা দেন বৈশাখি বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্ট্যোপাধ্যায়ের কাছে ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দেন তিনি ৷ রাতেই তাঁকে ফোন করে নাকি হঠকারী সিদ্ধান্ত না নেওয়ার জন্য আবেদন জানান শিক্ষামন্ত্রী। আর আজ হঠাৎ সেই ইস্তফাপত্র গ্রহণ করে রাজ্য স্কুল শিক্ষা দপ্তর । যা নিয়ে তাঁকে জানানো হয়নি বলে বৈশাখি বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য। তিনি বলেন, শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে সুন্দর সম্পর্কের কারণে ভেবেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী বা শিক্ষা দপ্তর তাঁকে পদত্যাগপত্র গ্রহণের কথা জানাবে । কিন্তু, তাঁকে জানানো হয়নি । এই বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়ে তিনি বলেন, "আজ সকালে জানতে পারলাম । 15 বছর যে কলেজে কাজ করলাম তারা বা শিক্ষা দপ্তর এত আশ্বাস দেওয়া সত্ত্বেও আমাকে কিছু জানানোর প্রয়োজন মনে করল না । যাঁকে নতুন নিয়োগ করেছে তাঁর চিঠির উপর লিখে রাখা রয়েছে বৈশাখি ব্যানার্জির পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হল । সেই জায়গায় নতুন টিচার ইনচার্জ নিয়োগ করা হল । আমাকে একবারও জানানো হয়নি । WBCUPA থেকে যখন সরানো হল তখনও জানানো হয়নি । গুরুদাস কলেজের গভর্নিং বডির নমিনি থেকে সরিয়ে দেওয়ার সময়ও জানানো হয়নি । ন্যূনতম সৌজন্য নেই এখানে ।"