ETV Bharat / state

Ballygunge Bypoll result : বালিগঞ্জে ঘাসফুলের জয়ে অস্বস্তির কাঁটা ভোট শতাংশ, কমছে সংখ্যালঘু সমর্থন ?

author img

By

Published : Apr 17, 2022, 11:21 AM IST

বালিগঞ্জে (Ballygunge Bypoll results) জয়ী হয়েছেন বাবুল সুপ্রিয় (Babul Supriyo wins)৷ তবে ঘাসফুলের স্বস্তির জয়ে অস্বস্তির কাঁটা হয়ে থাকল ভোট শতাংশ ৷ ফলাফলেই কি সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক নিয়ে অশনি সংকেত দেখছে তৃণমূল ?

babul-supriyo-wins-but-tmc-worries-after-vote-percentage-decreases-in-ballygunge-bypoll-results
বালিগঞ্জে ঘাসফুলের জয়ে অস্বস্তির কাঁটা ভোট শতাংশ, কমছে সংখ্যালঘু সমর্থন ?

কলকাতা, 17 এপ্রিল: গত পৌরসভা নির্বাচন পর্যন্ত একতরফা ভাবে সংখ্যালঘু ভোট ছিল তৃণমূল কংগ্রেসের দিকে । শনিবার রাজ্যে জোড়া উপনির্বাচনের ফল কিন্তু সেই সমীকরণে বেশ কিছু প্রশ্নচিহ্ন তুলে দিয়ে গেল । বিশেষ করে বালিগঞ্জে (Ballygunge Bypoll results) বাবুল সুপ্রিয় জয় পেলেন ঠিকই, কিন্তু এখানে স্বস্তির বদলে অস্বস্তি বাড়াল নির্বাচনী ফলাফল । রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা সব সময় একটা কথা বলেন, গণতন্ত্রে মানুষই শেষ কথা বলে । সে দিক থেকে বিচার করলে এখনও রাজ্যের মানুষের সমর্থন তৃণমূল কংগ্রেসের দিকেই রয়েছে তাতে কোনও সন্দেহ নেই । কিন্তু বালিগঞ্জে মুখ্যমন্ত্রীর 'দুধেল গাই' বলে পরিচিত সংখ্যালঘু ভোট ব্যাঙ্ক স্পষ্ট বার্তা দিল, সংখ্যালঘুদের সমর্থন তৃণমূল কংগ্রেসের জন্য চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত নয় (TMC worries after vote percentage decreases)।

বালিগঞ্জ উপনির্বাচনের আগে বেশ কিছু অস্বস্তিকর প্রশ্নের সামনে দাঁড়াতে হয়েছিল রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে । প্রথমত আনিশ কাণ্ডে যে ভাবে একজন সংখ্যালঘু যুবকের খুনের ঘটনায় পুলিশি তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল, তাতে সংখ্যালঘুদের একাংশের মধ্যে (বিশেষ করে ছাত্র যুবদের মধ্যে) ক্ষোভ তৈরি হয়েছে । দ্বিতীয়ত, সংখ্যালঘুদের গর্বের বিশ্ববিদ্যালয় আলিয়াতে 'শাসক দলের মদতে' অধ্যক্ষ নিগ্রহের ঘটনা ঘটেছে, তাও সংখ্যালঘু ভোটারদের মনে ছাপ ফেলেছে । সবচেয়ে বড় কথা বালিগঞ্জে বাবুল সুপ্রিয়কে (Babul Supriyo wins) তৃণমূল প্রার্থী হিসাবে মন থেকে মেনে নিতে পারেনি সংখ্যালঘু ভোটারেরা । বিশেষ করে, তাঁর সঙ্গে বিজেপি তথা হিন্দুত্বের যোগের অতীত, এবং আসানসোলে একটি অপ্রীতিকর ঘটনার সময় বিজেপি নেতা হিসাবে তাঁর বক্তব্যের পর কোনও ভাবেই সংখ্যালঘু ভোটাররা তাঁকে তৃণমূল প্রার্থী হিসাবে মেনে নিতে পারছিলেন না । এই অবস্থায় বালিগঞ্জের ভোটে নৈতিক ভাবে তৃণমূলকে সমর্থন করলেও বাবুলের উপস্থিতির কারণে অনেকেই বুথমুখো হননি । এর কারণে এক ধাক্কায় বালিগঞ্জে তৃণমূলের ভোট শতাংশ কমেছে অনেকটাই । আর মোটের উপর সব কিছু নিয়েই এ দিন উঠেছে প্রশ্ন ।

আরও পড়ুন: Babul Slams Saira Hailm : লজ্জা শরম নেই, টুইটারে 'হেরো' সায়রাকে তীব্র আক্রমণ বাবুলের

জয়ের আনন্দের দিনেই ভোট শতাংশের হিসেব দিয়ে বড় প্রশ্ন তুলে দিলেন বেঙ্গল ইমাম অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মহম্মদ ইয়াহিয়া । তিনি বলেন, "আমাদের আবেদনে সাড়া দিয়েই বালিগঞ্জে মুসলিমদের একটা বড় অংশ তৃণমূল কংগ্রেসকে ভোট দেননি । 64, 65 ওয়ার্ডে সিপিএমের কাছে হেরেছে তৃণমূল । তৃণমূলের ভোট কমেছে 60, 61 ও 68 নম্বর ওয়ার্ডেও । আমরা একটা বার্তা দিতে চেয়েছিলাম তৃণমূলকে, তাতে আমরা সফল । বাবুলকে মন্ত্রী করলে আরও ভুল করবে তৃণমূল । সে ক্ষেত্রে এ ভাবে 10 শতাংশ মুসলিম ভোট কমে গেলে পরবর্তী নির্বাচনে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়বে তৃণমূল ।

এ দিন অবশ্য মুসলিমদের একটা বড় অংশের তৃণমূল কংগ্রেসকে ভোট না দেওয়াকে কারণ হিসেবে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, অতিরিক্ত গরম এবং রোজার কারণে উপনির্বাচনে ভোটদানের শতাংশ কমেছে কুড়ি শতাংশ । যেহেতু এই নির্বাচনের উপর সরকার গঠন নির্ভর করবে না, সে ক্ষেত্রে অনেকেই ভোটদান এড়িয়ে গিয়েছেন । যদিও এই কথা মানতে রাজি হয়নি রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি এবং সিপিএম । বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এই নিয়ে তৃণমূলকে খোঁচা দিতে ছাড়েননি । তিনি বলেন, "যদিও ধর্মের নিরিখে ভাগে বিশ্বাস করি না আমরা । আমরা বিশ্বাস করি সবাই ভারতীয় । তবে তৃণমূল কংগ্রেসের জয়ের পিছনে এতদিন যে সংখ্যালঘুরা ছিলেন, তাঁরাও এখন তৃণমূলের উপর বীতশ্রদ্ধ । আর সে কারণেই বালিগঞ্জের মতো জায়গাতেও সংখ্যালঘুদের সমর্থন হারিয়েছে তৃণমূল ।

আরও পড়ুন : Saira Shah Halim : হেরেও ‘জয়ী’ সায়রা শাহ হালিম ইটিভি ভারতের মুখোমুখি

অন্যদিকে প্রাক্তন বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী এ দিন বলেন, "সংখ্যালঘু মানুষদের এতদিন ভুল বুঝিয়ে ভোটব্যাঙ্ক ধরে রাখা হয়েছিল । ক্রমেই তাঁদের সেই ভুল ভাঙছে । তাঁরা বুঝতে পারছেন বামপন্থী মানুষেরাই তাঁদের প্রকৃত উন্নয়নের জন্য কাজ করতে পারেন । আর তাই সমর্থন হারাচ্ছে তৃণমূল ।" অন্যদিকে সমর্থন বাড়ছে বামেদের । রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীরা যাই বলুন, বালিগঞ্জের মতো গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে দুটি সংখ্যালঘু-অধ্যুষিত ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেসের হেরে যাওয়া শাসক দলের জন্য যথেষ্ট চিন্তার । রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা স্পষ্ট ভাষায় বলছেন ,'অল ইজ নট ওয়েল'। এখন আর সংখ্যালঘু ভোট 'টেকেন ফর গ্রান্টেড' নয় ।

কলকাতা, 17 এপ্রিল: গত পৌরসভা নির্বাচন পর্যন্ত একতরফা ভাবে সংখ্যালঘু ভোট ছিল তৃণমূল কংগ্রেসের দিকে । শনিবার রাজ্যে জোড়া উপনির্বাচনের ফল কিন্তু সেই সমীকরণে বেশ কিছু প্রশ্নচিহ্ন তুলে দিয়ে গেল । বিশেষ করে বালিগঞ্জে (Ballygunge Bypoll results) বাবুল সুপ্রিয় জয় পেলেন ঠিকই, কিন্তু এখানে স্বস্তির বদলে অস্বস্তি বাড়াল নির্বাচনী ফলাফল । রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা সব সময় একটা কথা বলেন, গণতন্ত্রে মানুষই শেষ কথা বলে । সে দিক থেকে বিচার করলে এখনও রাজ্যের মানুষের সমর্থন তৃণমূল কংগ্রেসের দিকেই রয়েছে তাতে কোনও সন্দেহ নেই । কিন্তু বালিগঞ্জে মুখ্যমন্ত্রীর 'দুধেল গাই' বলে পরিচিত সংখ্যালঘু ভোট ব্যাঙ্ক স্পষ্ট বার্তা দিল, সংখ্যালঘুদের সমর্থন তৃণমূল কংগ্রেসের জন্য চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত নয় (TMC worries after vote percentage decreases)।

বালিগঞ্জ উপনির্বাচনের আগে বেশ কিছু অস্বস্তিকর প্রশ্নের সামনে দাঁড়াতে হয়েছিল রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে । প্রথমত আনিশ কাণ্ডে যে ভাবে একজন সংখ্যালঘু যুবকের খুনের ঘটনায় পুলিশি তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল, তাতে সংখ্যালঘুদের একাংশের মধ্যে (বিশেষ করে ছাত্র যুবদের মধ্যে) ক্ষোভ তৈরি হয়েছে । দ্বিতীয়ত, সংখ্যালঘুদের গর্বের বিশ্ববিদ্যালয় আলিয়াতে 'শাসক দলের মদতে' অধ্যক্ষ নিগ্রহের ঘটনা ঘটেছে, তাও সংখ্যালঘু ভোটারদের মনে ছাপ ফেলেছে । সবচেয়ে বড় কথা বালিগঞ্জে বাবুল সুপ্রিয়কে (Babul Supriyo wins) তৃণমূল প্রার্থী হিসাবে মন থেকে মেনে নিতে পারেনি সংখ্যালঘু ভোটারেরা । বিশেষ করে, তাঁর সঙ্গে বিজেপি তথা হিন্দুত্বের যোগের অতীত, এবং আসানসোলে একটি অপ্রীতিকর ঘটনার সময় বিজেপি নেতা হিসাবে তাঁর বক্তব্যের পর কোনও ভাবেই সংখ্যালঘু ভোটাররা তাঁকে তৃণমূল প্রার্থী হিসাবে মেনে নিতে পারছিলেন না । এই অবস্থায় বালিগঞ্জের ভোটে নৈতিক ভাবে তৃণমূলকে সমর্থন করলেও বাবুলের উপস্থিতির কারণে অনেকেই বুথমুখো হননি । এর কারণে এক ধাক্কায় বালিগঞ্জে তৃণমূলের ভোট শতাংশ কমেছে অনেকটাই । আর মোটের উপর সব কিছু নিয়েই এ দিন উঠেছে প্রশ্ন ।

আরও পড়ুন: Babul Slams Saira Hailm : লজ্জা শরম নেই, টুইটারে 'হেরো' সায়রাকে তীব্র আক্রমণ বাবুলের

জয়ের আনন্দের দিনেই ভোট শতাংশের হিসেব দিয়ে বড় প্রশ্ন তুলে দিলেন বেঙ্গল ইমাম অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মহম্মদ ইয়াহিয়া । তিনি বলেন, "আমাদের আবেদনে সাড়া দিয়েই বালিগঞ্জে মুসলিমদের একটা বড় অংশ তৃণমূল কংগ্রেসকে ভোট দেননি । 64, 65 ওয়ার্ডে সিপিএমের কাছে হেরেছে তৃণমূল । তৃণমূলের ভোট কমেছে 60, 61 ও 68 নম্বর ওয়ার্ডেও । আমরা একটা বার্তা দিতে চেয়েছিলাম তৃণমূলকে, তাতে আমরা সফল । বাবুলকে মন্ত্রী করলে আরও ভুল করবে তৃণমূল । সে ক্ষেত্রে এ ভাবে 10 শতাংশ মুসলিম ভোট কমে গেলে পরবর্তী নির্বাচনে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়বে তৃণমূল ।

এ দিন অবশ্য মুসলিমদের একটা বড় অংশের তৃণমূল কংগ্রেসকে ভোট না দেওয়াকে কারণ হিসেবে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, অতিরিক্ত গরম এবং রোজার কারণে উপনির্বাচনে ভোটদানের শতাংশ কমেছে কুড়ি শতাংশ । যেহেতু এই নির্বাচনের উপর সরকার গঠন নির্ভর করবে না, সে ক্ষেত্রে অনেকেই ভোটদান এড়িয়ে গিয়েছেন । যদিও এই কথা মানতে রাজি হয়নি রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি এবং সিপিএম । বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এই নিয়ে তৃণমূলকে খোঁচা দিতে ছাড়েননি । তিনি বলেন, "যদিও ধর্মের নিরিখে ভাগে বিশ্বাস করি না আমরা । আমরা বিশ্বাস করি সবাই ভারতীয় । তবে তৃণমূল কংগ্রেসের জয়ের পিছনে এতদিন যে সংখ্যালঘুরা ছিলেন, তাঁরাও এখন তৃণমূলের উপর বীতশ্রদ্ধ । আর সে কারণেই বালিগঞ্জের মতো জায়গাতেও সংখ্যালঘুদের সমর্থন হারিয়েছে তৃণমূল ।

আরও পড়ুন : Saira Shah Halim : হেরেও ‘জয়ী’ সায়রা শাহ হালিম ইটিভি ভারতের মুখোমুখি

অন্যদিকে প্রাক্তন বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী এ দিন বলেন, "সংখ্যালঘু মানুষদের এতদিন ভুল বুঝিয়ে ভোটব্যাঙ্ক ধরে রাখা হয়েছিল । ক্রমেই তাঁদের সেই ভুল ভাঙছে । তাঁরা বুঝতে পারছেন বামপন্থী মানুষেরাই তাঁদের প্রকৃত উন্নয়নের জন্য কাজ করতে পারেন । আর তাই সমর্থন হারাচ্ছে তৃণমূল ।" অন্যদিকে সমর্থন বাড়ছে বামেদের । রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীরা যাই বলুন, বালিগঞ্জের মতো গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে দুটি সংখ্যালঘু-অধ্যুষিত ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেসের হেরে যাওয়া শাসক দলের জন্য যথেষ্ট চিন্তার । রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা স্পষ্ট ভাষায় বলছেন ,'অল ইজ নট ওয়েল'। এখন আর সংখ্যালঘু ভোট 'টেকেন ফর গ্রান্টেড' নয় ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.