ETV Bharat / state

সম্ভাবনা সত্ত্বেও শিশুদের চিকিৎসায় সরকারি রেফেরাল হাসপাতালের মান নামার আশঙ্কা

শিশুদের শল্য চিকিৎসার ক্ষেত্রে এ রাজ‍্যে এখন অন্যতম সরকারি রেফেরাল হাসপাতাল হিসাবে রয়েছে নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল । কলকাতা মেডিকেল কলেজ এবং এসএসকেএম হাসপাতালে পেডিয়াট্রিক সার্জারি বিভাগের পরিষেবা চালু থাকলেও, এই দুই হাসপাতাল থেকেও শিশুদের রেফার করা হয় নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে । অথচ, এই নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালেও নেমে যাচ্ছে শিশুদের শল্য চিকিৎসার পরিষেবার মান ।

সরকারি রেফারেল হাসপাতাল
সরকারি রেফারেল হাসপাতাল
author img

By

Published : Feb 14, 2021, 11:02 PM IST

কলকাতা, 14 ফেব্রুয়ারি: সম্ভাবনা সত্ত্বেও পরিকাঠামোগত খামতির কারণে শিশুদের শল্য চিকিৎসার জন্য কলকাতার সরকারি রেফেরাল হাসপাতালের মান নেমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে । এই পরিকাঠামোগত খামতির মধ্যে রয়েছে যেমন লোকবলের অভাব, তেমনই রয়েছে চিকিৎসা-যন্ত্রের বিষয়টিও । তবে, এর পাশাপাশি চিকিৎসকদের আশা, উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করলে শিশুদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে দেশের মধ্যে ভালো অবস্থায় পৌঁছে যাবে কলকাতা । সেই নিয়েই ইটিভি ভারতের মুখোমুখি সমস্যা এবং এই বিভিন্ন সমস্যার সমাধান নিয়ে আলোচনা করলেন কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক সার্জারি বিভাগের প্রাক্তন প্রধান চিকিৎসক সুকান্ত দাস ।

শিশুদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে সরকারি স্তরে কলকাতায় রেফারেল সেন্টার বলতে কোন হাসপাতালের কথা বলা হবে? কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক সার্জারি বিভাগের প্রাক্তন প্রধান, চিকিৎসক সুকান্ত দাস বলেন, "এই মুহুর্তের কথা যদি বলতে হয়, তা হলে এটা নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল‌। কারণ, পশ্চিমবঙ্গের এই হাসপাতালে প্রথম পেডিয়াট্রিক সার্জারিতে এমসিএইচ কোর্স চালু হয়। এর পরে রয়েছে কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল। এসএসকেএম হাসপাতাল (ইনস্টিটিউট অফ পোস্ট গ্র্যাজুয়েট মেডিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ, কলকাতা) রয়েছে এর পরে।" তিনি বলেন, "কলকাতায় শিশুদের চিকিৎসার জন্য রেফারেল সেন্টার হিসাবে এই তিনটি সরকারি হাসপাতাল রয়েছে । এর মধ্যে সব থেকে প্রথমে রয়েছে নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল । যদিও, এ দেশের মধ্যে সব থেকে প্রথমে পেডিয়াট্রিক ইউনিট চালু হয় কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে।"

পেডিয়াট্রিক মেডিসিনের ক্ষেত্রে কলকাতার বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কম-বেশি চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়া যায়। তবে পেডিয়াট্রিক সার্জারি অর্থাৎ, শিশুদের শল্য চিকিৎসার ক্ষেত্রে এ রাজ‍্যে এখন অন্যতম সরকারি রেফারেল হাসপাতাল হিসাবে রয়েছে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল । কলকাতা মেডিকেল কলেজ এবং এসএসকেএম হাসপাতালে পেডিয়াট্রিক সার্জারি বিভাগের পরিষেবা চালু থাকলেও, এই দুই হাসপাতাল থেকেও শিশুদের রেফার করা হয় নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে । অথচ, এই নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালেও নেমে যাচ্ছে শিশুদের শল্য চিকিৎসার পরিষেবার মান । হাসপাতাল সূত্রের খবর, এখানকার পেডিয়াট্রিক সার্জারি বিভাগে অনেক লোক দরকার, কিন্তু দিন দিন তা কমে যাচ্ছে । এর জন্য পরিষেবা দিতে খুব অসুবিধা হচ্ছে । এই বিষয়ে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যক্ষ শৈবাল মুখোপাধ্যায় বলেন, "কোয়ালিফাইড পেডিয়াট্রিক সার্জনের পোস্টিং না হলে সার্ভিসের মান ধরে রাখাটা খুব কঠিন হবে খুব অল্পদিনের মধ্যে।"

কী বললেন চিকিৎসক সুকান্ত দাস

হাসপাতাল সূত্রে খবর, এখানকার পেডিয়াট্রিক সার্জারি বিভাগে প্রতিদিন গড়ে চারটি করে ইমারজেন্সি সার্জারি হয় । বিভাগে রয়েছে 60 টি বেড । তবে সব সময় এই 60 টি বেডে ভর্তি থাকে 80 থেকে 100 টি শিশুর । অর্থাৎ, একই বেডে প্রায় দুটি করে শিশুকে ভর্তি রাখা হয়। বেশ কয়েক মাস আগে কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক সার্জারি বিভাগের প্রধানের পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেছেন চিকিৎসক সুকান্ত দাস। এই মুহুর্তে শিশুদের শল্য চিকিৎসার ক্ষেত্রে কলকাতায় সরকারি রেফারেল হাসপাতালের অবস্থা কী রকম? তিনি বলেন, "ম‍্যানপাওয়ার মোটামুটি ঠিক আছে । কিন্তু, ইকুইপমেন্টের দিক থেকে অনেকটা খামতি রয়েছে ।" চিকিৎসক জানিয়েছেন, পেডিয়াট্রিক সার্জারিতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে জন্মগত সমস‍্যার কারণে চিকিৎসা করাতে হয় । বাকি ক্ষেত্রগুলিতে জন্মের পরে অথবা, দুর্ঘটনাজনিত কারণে চিকিৎসা করাতে হয়, যেটাকে ট্রমা বলা হয়। তবে প্রতি ক্ষেত্রেই পোস্ট অপারেটিভ কেয়ারের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । পোস্ট অপারেটিভ কেয়ার যদি যথাযথভাবে না হয় তা হলে অনেক ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শিশুরোগীকে বাঁচানো সম্ভব হয় না । এর জন্য কিছু ইকুইপমেন্টের-ও প্রয়োজন হয় । কিন্তু, বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেখা যায় অপারেশন হোক কিনবা, পোস্ট অপারেটিভের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ইকুইপমেন্ট পাওয়া যায় না । শিশুদের এমআরআই করানোর ক্ষেত্রে অজ্ঞান করে নিতে হয় । সরকারি হাসপাতালগুলিতে এই পরিষেবা নেই । কারণ, শিশুদের অজ্ঞান করানোর চিকিৎসক নেই । কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক সার্জারি বিভাগের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান বলেন, "কলকাতায় স্কোপ রয়েছে। যদি করা যায় তাহলে পূর্ব ভারতের মধ্যে শিশুদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে কলকাতা আবার ভালো অবস্থায় চলে আসবে ।"

আরও পড়ুন : পার্ক সার্কাসে শিশু হাসপাতালের উদ্বোধন ফিরহাদের

ইকুইপমেন্টের কারণে শিশুদের চিকিৎসা পরিষেবার আউটপুট খুব একটা ভালো হচ্ছে না, সেই বিষয়ে রাজ‍্যের সরকারি চিকিৎসকের একটি সংগঠন সার্ভিস ডক্টরস ফোরাম-এর সাধারণ সম্পাদক, চিকিৎসক সজল বিশ্বাস বলেন, "শিশুদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে পরিকাঠামোর ঘাটতি রয়েছে বলে আমরা দেখতে পাচ্ছি । এই কারণে শিশুর মৃত্যুর হার সেই ভাবে কমছে না । শিশুদের যে সব জটিল রোগ হয়, তার চিকিৎসার জন্য যে সব ইকুইপমেন্টের প্রয়োজন হয়, সেগুলিও পাওয়া যায় না ।" এদিকে, শিশুদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে ভারত সরকারের চাইল্ড হেলথ-এর ন্যাশনাল অ্যাডভাইজার চিকিৎসক অরুণ সিং-ও আশার কথা শুনিয়েছেন । তিনি বলেন, "গত এক দশকে অনেক উন্নতি হয়েছে । কিন্তু, শিশুদের চিকিৎসার যে ক্ষেত্রে আমরা কাজ করতে পারি, সরকারি পরিকাঠামোর মধ্যে তার মধ্যে রয়েছে নবজাতকের হার্টের সার্জারি । 100 শিশুর মধ্যে একটি শিশুর ক্ষেত্রে এই সমস্যা দেখা দেয় । এক বছরের মধ্যে অপারেশন না করলে তিন জনের মধ্যে একজন শিশুর মৃত্যু হয় ।" এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বলেন, "শিশুদের হার্টের সার্জারি পরিষেবার ব্যবস্থা করতে হবে। এর জন্য সুযোগ আছে কলকাতায় । কারণ, দেশের মধ্যে সবথেকে বড় নিওনেটোলজি সেন্টার রয়েছে এসএসকেএম হাসপাতালে । এটাকে নিউনেটাল ইনস্টিটিউট করে নিউবর্ন ব্রেন রিসার্চ হিসাবে গড়ে তোলা যায় ।" এই ধরনের সেন্টারে শিশুদের অন্যান্য চিকিৎসার পাশাপাশি মানসিক বিকাশ সংক্রান্ত চিকিৎসার সুযোগও থাকবে । একথা জানিয়ে চিকিৎসা অরুণ সিং বলেন, "একই স্থানে নবজাতকের বিভিন্ন অঙ্গের অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা যদি করা যায়, তাহলে গোটা ভারতের উপকার হবে । কলকাতায় এই ধরনের ব্যবস্থার সুযোগ এবং প্রয়োজন রয়েছে ।"

কলকাতা, 14 ফেব্রুয়ারি: সম্ভাবনা সত্ত্বেও পরিকাঠামোগত খামতির কারণে শিশুদের শল্য চিকিৎসার জন্য কলকাতার সরকারি রেফেরাল হাসপাতালের মান নেমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে । এই পরিকাঠামোগত খামতির মধ্যে রয়েছে যেমন লোকবলের অভাব, তেমনই রয়েছে চিকিৎসা-যন্ত্রের বিষয়টিও । তবে, এর পাশাপাশি চিকিৎসকদের আশা, উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করলে শিশুদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে দেশের মধ্যে ভালো অবস্থায় পৌঁছে যাবে কলকাতা । সেই নিয়েই ইটিভি ভারতের মুখোমুখি সমস্যা এবং এই বিভিন্ন সমস্যার সমাধান নিয়ে আলোচনা করলেন কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক সার্জারি বিভাগের প্রাক্তন প্রধান চিকিৎসক সুকান্ত দাস ।

শিশুদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে সরকারি স্তরে কলকাতায় রেফারেল সেন্টার বলতে কোন হাসপাতালের কথা বলা হবে? কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক সার্জারি বিভাগের প্রাক্তন প্রধান, চিকিৎসক সুকান্ত দাস বলেন, "এই মুহুর্তের কথা যদি বলতে হয়, তা হলে এটা নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল‌। কারণ, পশ্চিমবঙ্গের এই হাসপাতালে প্রথম পেডিয়াট্রিক সার্জারিতে এমসিএইচ কোর্স চালু হয়। এর পরে রয়েছে কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল। এসএসকেএম হাসপাতাল (ইনস্টিটিউট অফ পোস্ট গ্র্যাজুয়েট মেডিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ, কলকাতা) রয়েছে এর পরে।" তিনি বলেন, "কলকাতায় শিশুদের চিকিৎসার জন্য রেফারেল সেন্টার হিসাবে এই তিনটি সরকারি হাসপাতাল রয়েছে । এর মধ্যে সব থেকে প্রথমে রয়েছে নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল । যদিও, এ দেশের মধ্যে সব থেকে প্রথমে পেডিয়াট্রিক ইউনিট চালু হয় কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে।"

পেডিয়াট্রিক মেডিসিনের ক্ষেত্রে কলকাতার বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কম-বেশি চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়া যায়। তবে পেডিয়াট্রিক সার্জারি অর্থাৎ, শিশুদের শল্য চিকিৎসার ক্ষেত্রে এ রাজ‍্যে এখন অন্যতম সরকারি রেফারেল হাসপাতাল হিসাবে রয়েছে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল । কলকাতা মেডিকেল কলেজ এবং এসএসকেএম হাসপাতালে পেডিয়াট্রিক সার্জারি বিভাগের পরিষেবা চালু থাকলেও, এই দুই হাসপাতাল থেকেও শিশুদের রেফার করা হয় নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে । অথচ, এই নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালেও নেমে যাচ্ছে শিশুদের শল্য চিকিৎসার পরিষেবার মান । হাসপাতাল সূত্রের খবর, এখানকার পেডিয়াট্রিক সার্জারি বিভাগে অনেক লোক দরকার, কিন্তু দিন দিন তা কমে যাচ্ছে । এর জন্য পরিষেবা দিতে খুব অসুবিধা হচ্ছে । এই বিষয়ে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যক্ষ শৈবাল মুখোপাধ্যায় বলেন, "কোয়ালিফাইড পেডিয়াট্রিক সার্জনের পোস্টিং না হলে সার্ভিসের মান ধরে রাখাটা খুব কঠিন হবে খুব অল্পদিনের মধ্যে।"

কী বললেন চিকিৎসক সুকান্ত দাস

হাসপাতাল সূত্রে খবর, এখানকার পেডিয়াট্রিক সার্জারি বিভাগে প্রতিদিন গড়ে চারটি করে ইমারজেন্সি সার্জারি হয় । বিভাগে রয়েছে 60 টি বেড । তবে সব সময় এই 60 টি বেডে ভর্তি থাকে 80 থেকে 100 টি শিশুর । অর্থাৎ, একই বেডে প্রায় দুটি করে শিশুকে ভর্তি রাখা হয়। বেশ কয়েক মাস আগে কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক সার্জারি বিভাগের প্রধানের পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেছেন চিকিৎসক সুকান্ত দাস। এই মুহুর্তে শিশুদের শল্য চিকিৎসার ক্ষেত্রে কলকাতায় সরকারি রেফারেল হাসপাতালের অবস্থা কী রকম? তিনি বলেন, "ম‍্যানপাওয়ার মোটামুটি ঠিক আছে । কিন্তু, ইকুইপমেন্টের দিক থেকে অনেকটা খামতি রয়েছে ।" চিকিৎসক জানিয়েছেন, পেডিয়াট্রিক সার্জারিতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে জন্মগত সমস‍্যার কারণে চিকিৎসা করাতে হয় । বাকি ক্ষেত্রগুলিতে জন্মের পরে অথবা, দুর্ঘটনাজনিত কারণে চিকিৎসা করাতে হয়, যেটাকে ট্রমা বলা হয়। তবে প্রতি ক্ষেত্রেই পোস্ট অপারেটিভ কেয়ারের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । পোস্ট অপারেটিভ কেয়ার যদি যথাযথভাবে না হয় তা হলে অনেক ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শিশুরোগীকে বাঁচানো সম্ভব হয় না । এর জন্য কিছু ইকুইপমেন্টের-ও প্রয়োজন হয় । কিন্তু, বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেখা যায় অপারেশন হোক কিনবা, পোস্ট অপারেটিভের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ইকুইপমেন্ট পাওয়া যায় না । শিশুদের এমআরআই করানোর ক্ষেত্রে অজ্ঞান করে নিতে হয় । সরকারি হাসপাতালগুলিতে এই পরিষেবা নেই । কারণ, শিশুদের অজ্ঞান করানোর চিকিৎসক নেই । কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক সার্জারি বিভাগের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান বলেন, "কলকাতায় স্কোপ রয়েছে। যদি করা যায় তাহলে পূর্ব ভারতের মধ্যে শিশুদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে কলকাতা আবার ভালো অবস্থায় চলে আসবে ।"

আরও পড়ুন : পার্ক সার্কাসে শিশু হাসপাতালের উদ্বোধন ফিরহাদের

ইকুইপমেন্টের কারণে শিশুদের চিকিৎসা পরিষেবার আউটপুট খুব একটা ভালো হচ্ছে না, সেই বিষয়ে রাজ‍্যের সরকারি চিকিৎসকের একটি সংগঠন সার্ভিস ডক্টরস ফোরাম-এর সাধারণ সম্পাদক, চিকিৎসক সজল বিশ্বাস বলেন, "শিশুদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে পরিকাঠামোর ঘাটতি রয়েছে বলে আমরা দেখতে পাচ্ছি । এই কারণে শিশুর মৃত্যুর হার সেই ভাবে কমছে না । শিশুদের যে সব জটিল রোগ হয়, তার চিকিৎসার জন্য যে সব ইকুইপমেন্টের প্রয়োজন হয়, সেগুলিও পাওয়া যায় না ।" এদিকে, শিশুদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে ভারত সরকারের চাইল্ড হেলথ-এর ন্যাশনাল অ্যাডভাইজার চিকিৎসক অরুণ সিং-ও আশার কথা শুনিয়েছেন । তিনি বলেন, "গত এক দশকে অনেক উন্নতি হয়েছে । কিন্তু, শিশুদের চিকিৎসার যে ক্ষেত্রে আমরা কাজ করতে পারি, সরকারি পরিকাঠামোর মধ্যে তার মধ্যে রয়েছে নবজাতকের হার্টের সার্জারি । 100 শিশুর মধ্যে একটি শিশুর ক্ষেত্রে এই সমস্যা দেখা দেয় । এক বছরের মধ্যে অপারেশন না করলে তিন জনের মধ্যে একজন শিশুর মৃত্যু হয় ।" এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বলেন, "শিশুদের হার্টের সার্জারি পরিষেবার ব্যবস্থা করতে হবে। এর জন্য সুযোগ আছে কলকাতায় । কারণ, দেশের মধ্যে সবথেকে বড় নিওনেটোলজি সেন্টার রয়েছে এসএসকেএম হাসপাতালে । এটাকে নিউনেটাল ইনস্টিটিউট করে নিউবর্ন ব্রেন রিসার্চ হিসাবে গড়ে তোলা যায় ।" এই ধরনের সেন্টারে শিশুদের অন্যান্য চিকিৎসার পাশাপাশি মানসিক বিকাশ সংক্রান্ত চিকিৎসার সুযোগও থাকবে । একথা জানিয়ে চিকিৎসা অরুণ সিং বলেন, "একই স্থানে নবজাতকের বিভিন্ন অঙ্গের অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা যদি করা যায়, তাহলে গোটা ভারতের উপকার হবে । কলকাতায় এই ধরনের ব্যবস্থার সুযোগ এবং প্রয়োজন রয়েছে ।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.