কলকাতা, 2 নভেম্বর: তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mondal) আগামী বছর পঞ্চায়েত নির্বাচন (Panchayat Election) না হওয়া পর্যন্ত কারাগারেই রাখা উচিত ৷ তিনি রাজনৈতিক দৃশ্যে ফিরে এলে রক্ত ঝরবে ভোটের দিনগুলিতে ৷ বুধবার এ কথা বলেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Slams Anubrata)৷ তবে এই মন্তব্যের পালটা জবাব দিয়ে তাঁকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছে তৃণমূল ৷ তাদের দাবি, দিলীপের এই বক্তব্য থেকেই বোঝা যায় যায় গরু পাচার মামলায় অনুব্রতর গ্রেফতারি আসলে বিজেপির রাজনৈতিক গেম প্ল্যান ৷ রাজনৈতিক ভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পঞ্চায়েত ভোটের থেকে তাঁকে দূরে রাখতেই বিজেপি এই পরিকল্পনা করেছে বলে অভিযোগ শাসকদলের ৷
2024 সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে পঞ্চায়েত নির্বাচন সমস্ত রাজনৈতিক দলের জন্যই শেষ বড় লিটমাস পরীক্ষা । তার আগে নিজেদের মতো করে ঘর গোছাতে শুরু করে দিয়েছে সব দলই ৷ দুর্নীতি প্রশ্নে শাসকদলকে কোনঠাসা করতে তৎপর বিজেপি ৷ অনুব্রত মণ্ডল, পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ অন্যান্য নেতাদের গ্রেফতারিকে ভোটের হাতিয়ার করতে তারা তৎপর ৷ সেই অস্ত্রেই শান দিয়ে এ দিন অনুব্রতর নাম টেনে শাসকদলকে বিঁধলেন দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)৷
বুধবার তিনি বলেন, "শান্তিপূর্ণ পঞ্চায়েত নির্বাচনের স্বার্থে পরের বছর ভোট শেষ না হওয়া পর্যন্ত অনুব্রত মণ্ডলকে কারাগারেই রেখে দেওয়া দরকার । তাঁর মুক্তি গ্রামীণ ভোটের সময় রক্তপাত ঘটাবে । পঞ্চায়েত নির্বাচন কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতিতে হওয়া উচিত ৷" বীরভূম তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রতকে অগস্ট মাসে সিবিআই গ্রেফতার করেছে । একইসঙ্গে দিলীপ আরও বলেন, "আমরা দেখেছি যে 2018 সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল কী ধরনের হিংসার আশ্রয় নিয়েছিল ৷ রাজ্য পুলিশের অধীনে অনুষ্ঠিত হলে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না ৷"
আরও পড়ুন: বাবার কাছে যেতে হবে সুকন্যাকেও: দিলীপ ঘোষ
দিলীপ এই মন্তব্যের পালটা জবাব দিয়ে শাসকদলের তরফে বলা হয়েছে, এই মন্তব্যই প্রমাণ করে যে, অনুব্রতকে পঞ্চায়েত ভোট থেকে দূরে রাখার জন্যই বিজেপির কৌশলের অংশ হিসাবে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল । তৃণমূলের সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার বলেছেন, "বিড়ালটা এখন থলের বাইরে । এটা প্রমাণিত যে অনুব্রতকে পঞ্চায়েত ভোট থেকে দূরে রাখতে বিজেপির নির্দেশে তাঁকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই । আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে জয়ী হওয়ার জন্য যদি এটাই হয় বিজেপির কৌশল, তাহলে পুরো তৃণমূল নেতৃত্বকে কারাগারে পাঠানো উচিত । এটি ছাড়া তারা (বিজেপি) ভোটে জিততে সক্ষম হবে না ৷"
2018 সালে বীরভূমের পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছিল তৃণমূল কংগ্রেস ৷ বিরোধী দলগুলি অভিযোগ করেছিল যে, তাঁদের মনোনয়ন জমা দিতে দেওয়া হয়নি । 2013 সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী রাজ্যের প্রতিটি ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল ৷ তারপরেও 80 শতাংশেরও বেশি আসনে জিতেছিল তৃণমূল কংগ্রেস ৷