একই স্কুলের 150 জনের মধ্যে ফেল 120 ! হতাশায় অবরোধ পরীক্ষার্থীদের

একই স্কুলের 150 জন উচ্চমাধ্য়মিক পরীক্ষার্থীর মধ্যে ফেল করেছে 120 জন । বিক্ষোভ দেখান অকৃতকার্য পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা ।

কলকাতা, 21 জুলাই : 17 জুলাই প্রকাশিত হয়েছে চলতি বছরের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল । ফলাফল প্রকাশের ওয়েবসাইটে নিজেদের প্রাপ্ত নম্বর দেখতে গিয়ে মাথায় হাত পড়ে টালিগঞ্জ অশোকনগর বিদ্যাপীঠের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের । কারণ, ওই স্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী 150 জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে 120 জনের মতো পরীক্ষার্থীর অনলাইন রেজ়াল্টই অসফল দেখা যায় । কী করে একটা স্কুলের এত পরীক্ষার্থী একসঙ্গে ফেল করে? প্রশ্ন তুলছে পরীক্ষার্থীরা । ফলাফল প্রকাশের পর থেকেই চরম হতাশা, আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন তারা । সেই হতাশা থেকেই গতকাল স্কুলের সামনে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস রোড অবরোধ করে অকৃতকার্য পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা ।

এই বছর ওই স্কুলের 150 জন পড়ুয়া উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা় দিয়েছিল । কিন্তু, তাদের মধ্যে 120 জনের মতো পরীক্ষার্থীর অনলাইন রেজ়াল্টে নেই কোনও নম্বর । শুধু নিজের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করার কথা লেখা রয়েছে । সেই অনুযায়ী যোগাযোগ করলে স্কুলের তরফে তাদের জানানো হয়, 'কন্ট্যাক্ট ইওর স্কুল'-এর অর্থ তারা পরীক্ষায় অসফল হয়েছে । এই বিষয়ে স্কুলের কিছু করার নেই, যতক্ষণ না পর্যন্ত মার্কশিটের হার্ডকপি স্কুলের হাতে এসে পৌঁছাচ্ছে । এমনকী উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেও প্রতিষ্ঠান ও প্রধান শিক্ষকদের নির্দেশ দেওয়া হয় পরীক্ষার্থীদের কাছে স্পষ্ট করে দিতে যে, 'কন্ট্যাক্ট ইউর ইন্সটিটিউশন' বাক্যের অর্থ সেই পরীক্ষার্থী 2020 সালের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় অসফল হয়েছে । কিন্তু, একটি স্কুলের একসঙ্গে এত জনের অসফল হওয়া মেনে নিতে পারছে না পরীক্ষার্থী বা অভিভাবক কেউই । এই পরিস্থিতিতে গতকাল সকাল সাড়ে 11টা নাগাদ স্কুলের সামনে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস রোড অবরোধ করে পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা । প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে চলে অবরোধ।

স্কুলের অসফল পরীক্ষার্থীদের দাবি, যে পরীক্ষাগুলি দিয়েছিল সেগুলি ভালোই হয়েছিল । এক পরীক্ষার্থী বলে, "আমরা জানতে চাই, একটা স্কুল থেকে এত জন পরীক্ষার্থী কী করে ফেল করতে পারে ? আমরা ভালো পরীক্ষা দিয়েছি । আমরা আত্মবিশ্বাসী । তারপরেও কী করে এত জন ফেল করল একসঙ্গে?" অপর এক পরীক্ষার্থী বলে, "আমরা সকাল সাড়ে 11টা থেকে দুপুর 1টা পর্যন্ত রাস্তা অবরোধ করেছিলাম । অভিভাবকরাও এসেছিলেন । আমরা প্রধান শিক্ষককে ডাকি । উনি জানিয়েছেন 31 তারিখ মার্কশিট না পাওয়া পর্যন্ত কিছু করা সম্ভব না । কাউন্সিললের কাছে যেতে বলেছেন উনি ।" প্রায় দেড় ঘণ্টা পর অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেয় তারা । তবে, সেখানেই হাল ছাড়েনি তারা । শিক্ষামন্ত্রীর বাড়িতেও যায় নিজেদের সমস্যার সুরাহা চেয়ে । শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার বিষয়ে এক ছাত্রী বলে, "আমরা অবরোধ তুলে নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে যাই । তিনজনের সঙ্গে কথা বলেন উনি । বলেন, আমরা নিশ্চয়ই ফেল করেছি । চারটে বিষয়ে নিশ্চয়ই আমরা পাশ করতে পারিনি । বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ থাকলে রিভিউয়ে দেওয়ার পরামর্শ দেন উনি । ওঁকে আমরা জানাই, রিভিউ করাতে অনেক সময় চলে যাবে । ততদিনে কলেজে অ্যাডমিশন প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যাবে । এরপরে উনি ফোন করে 150 জনের পেপার পুনরায় চেক করার নির্দেশ দিয়েছেন ।"