কলকাতা, 26 জুলাই: মঙ্গলবার প্রেসিডেন্সি জেলে মধ্যরাত পর্যন্ত মানিক ভট্টাচার্যকে সিবিআইয়ের জেরা করার মাধ্যমে তাঁর ও অন্যান্য বন্দিদের মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে মনে করছে এপিডিআর (গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতি)। তাঁদের বক্তব্য, ভারতীয় সংবিধানের 21 নম্বর ধারা অনুযায়ী বিশ্রাম ও ঘুমের অধিকার মানুষের মৌলিক অধিকার। এব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের সুস্পষ্ট নির্দেশিকাও আছে। জেলবন্দিরাও তার বাইরে নয়। শুধু তাই নয়, এই ঘটনার মাধ্যমে জেল কোডও লঙ্ঘন করা হয়েছে।
জেল কোড অনুযায়ী, সূর্যাস্তের আগে সকল বন্দিকে লক-আপ হতে হয়। রাতের খাবারও লকআপের আগে দিয়ে দেওয়া হয় বা সেলে পৌঁছে দেওয়া হয়। বন্দিকে রাতে কোনওভাবেই সেল বা ওয়ার্ড থেকে বের করা হয় না। এক্ষেত্রে সবই লঙ্ঘন করা হয়েছে। এপিডিআর সাধারণ সম্পাদক রঞ্জিত শূর বলেন, "আমাদের মানিক ভট্টাচার্যের প্রতি কোনও সহানুভূতি নেই। আমরাও তার দৃষ্টান্তমূলক সাজা চাই। কিন্তু বন্দি হিসাবে তাঁর ও অন্যান্য বন্দিদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধেই কেবল আমাদের বক্তব্য।"
আরও পড়ুন: জেলবন্দি বিধায়কের ভোট বৈধ নয় ! পার্থদের বাইরে রেখেই রাজ্যসভা নির্বাচনের অংক সাজাচ্ছে তৃণমূল
তিনি আরও বলেন, "আমাদের আরও বক্তব্য, এই ঘটনায় বিচারপতি যেন বন্দিদের প্রতি খারাপ ব্যবহার করার জন্য তদন্তকারী সংস্থার অফিসারদের উসকে দিতে চেয়েছেন। মধ্যরাতের পরে ফের সকালে জেরা করার নির্দেশ! মধ্যরাতে কেন জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে? এত নাটকীয়তা কেন? এটা প্রত্যাশিত ছিল না।"
গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতির আরও বক্তব্য, "সাম্প্রতিককালে রাজ্য সরকারও নানাভাবে বন্দিদের অধিকার হরণ করছে। বন্দিরা ও মানবাধিকার সংগঠনগুলি তার বিরুদ্ধে আদালতে যায় বিচার চাইতে। এখন আদালতও যদি বন্দিদের অধিকার হরণ করে তবে বন্দি বা বন্দিদের পরিবারগুলি কার কাছে যাবে! মানিক ভট্টাচার্যের উদাহরণ দিয়ে পরে এভাবে বন্দি নিপীড়নটাই রীতি হয়ে যাবে। মাননীয় বিচারপতি আদেশ দেওয়ার সময় বৃহত্তর প্রেক্ষাপটটাও মাথায় রাখবেন এটাই প্রত্যাশা। নইলে এটা ক্ষমতার অপব্যবহার হিসাবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।"
আরও পড়ুন: পঞ্চায়েত ভোটে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে পর্যবেক্ষক নিয়োগের অনুমতি দিল না হাইকোর্ট