কলকাতা, 30 অগস্ট: অসুরের জায়গায় জাতির জনক মহাত্মা গান্ধির মুখ! গত বছর রুবি পার্কের দুর্গাপুজোয় এমন কাণ্ড ঘটিয়ে বিতর্ক তৈরি করেছিল অখিল ভারতীয় হিন্দু মহাসভা ৷ মঙ্গলবার নবান্ন সভাঘরে পশ্চিমবঙ্গ দিবস নিয়ে আলোচনায় সেই হিন্দু মহাসভাকেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল ৷ উপস্থিত ছিলেন অখিল ভারতীয় হিন্দু মহাসভার রাজ্য সভাপতি চন্দ্রচূড় গোস্বামী ৷ তিনিই ছিলেন রুবি পার্কের পুজোর অন্যতম প্রধান উদ্যোক্তা। শুধু উপস্থিত থাকাই নয়, একটি প্রশ্নে চন্দ্রচূড়ের প্রশংসাও করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মঙ্গলবার নবান্নের সভাঘরে পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালন করা নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ সভায় ইতিহাসবিদ, সাহিত্যিক, রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি থেকে শুরু করে সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, বিভিন্ন ধর্ম সংগঠনের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন ৷ এখানেই চন্দ্রচূড় গোস্বামী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে 'মাতৃসমা' আখ্যা দেন ৷ কোনও রাজনৈতিক দলের নাম না তুলে তিনি বলেন, "একটি নির্দিষ্ট দল চাইলে আগেই ঠিক করে দিত পারত পশ্চিমবঙ্গ দিবস কবে পালিত হবে। এরপরও দিন ঠিক করা নিয়ে বিভিন্ন পক্ষের মতামত জানতে চেয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় এর চেয়ে ভালো উদাহরণ আর কিছু হতে পারে না ৷"
আরও পড়ুন: হিন্দু মহাসভার পুজোয় অসুরের বদলে গান্ধির মুখ, বিতর্ক তিলোত্তমা জুড়ে
তিনি জানান, হিন্দু মহাসভা পয়লা বৈশাখ দিনটিকে পশ্চিমবঙ্গ দিবস হিসেবে পালনের পক্ষে ৷ হিন্দু-মুসলিম-শিখ-জৈন-খ্রিস্টান- সমস্ত ধর্ম এবং সমস্ত ভাষাভাষি মানুষের কাছেই পয়লা বৈশাখ দিনটি গ্রহণযোগ্য ৷ শুধু তাই নয়, দুই বঙ্গের কাছেই দিনটি আনন্দের ৷ এই দিনটি বাঙালির জাতিসত্তা, অস্মিতা, মূল্যবোধের ও চির শাশ্বত অঙ্গীকারের কথা বলে। আর তাই তারা এই প্রস্তাবকে সমর্থন করছেন ৷
এরপরই মমতা জানান, হিন্দু মহাসভা সম্পর্কে তাঁর অন্য ধারণা ছিল। চন্দ্রচূড়ের কথা শোনার পর সেই ভুল ধারণা অনেকটা কাটল। মমতার কথায়, "এটা হতে পারে আপনাদের নাম মিস ইউজ করে কেউ কেউ আপনাদের সঙ্গে একটা রাজনৈতিক দলকে গুলিয়ে ফেলে। কিন্তু আজ আপনার কথা শুনে আমাদের ভুল ধারণা অনেকটা কাটল। বাংলার উন্নয়নকে পথ দেখাতে এবং বাংলার সংস্কৃতি এবং কৃষ্টি ধরে রাখতে আমাদের পাশে দাঁড়ান। আশা করি আমাদের যে কোনও অনুষ্ঠানে আপনাদের পাব।"