কলকাতা, 20 মার্চ: সদ্য ঘোষিত হয়েছে স্নাতকস্তরে চার বছরের ডিগ্রি কোর্স চালু ও 'কারিকালাম অ্যান্ড ক্রেডিট ফ্রেমওয়ার্ক' শুরুর পরিকল্পনার কথা ৷ এই জাতীয় শিক্ষানীতি 2020 শিক্ষাবর্ষ থেকে কার্যকর হবে (NEP in West Bengal)৷ এরই বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ রাজ্যের বামপন্থী ছাত্র-যুবরা । কলকাতা-সহ রাজ্য জুড়ে জেলায় জেলায় বিক্ষোভ দেখায় এআইডিএসও ও এসএফআইয়ের পক্ষ থেকে ৷ সোমবার কলকাতা-সহ জেলায় জেলায় কলেজ ,বিশ্ববিদ্যালয় সহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে শিক্ষাস্বার্থ বিরোধী 'কারিকালাম অ্যান্ড ক্রেডিট ফ্রেমওয়ার্ক' এর সার্কুলার পুড়িয়ে প্রতিবাদে সামিল হয়েছে ছাত্রছাত্রীরা । উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার পরে রাজ্যজুড়ে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে (AIDSO and SFI Agitation Against NEP) ।
তাদের অভিযোগ, নতুন ব্যবস্থায় তিন বছরের ডিগ্রি কোর্সকে চার বছরের কোর্সে পরিণত করে ছাত্রছাত্রীদের আরও 1 বছরের বাড়তি খরচের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে ৷ যার ফলে উচ্চশিক্ষা আরও ব্যয়বহুল হয়ে পড়বে ৷ ফলে অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে পড়া পরিবারের ছাত্রছাত্রীরা তা বহন করতে পারবে না । বাড়বে ড্রপ আউট । 'মাল্টিপল এন্ট্রি ও এক্সিট' পদ্ধতিতে একজন ছাত্র-ছাত্রী প্রথম বর্ষের দু'টি সেমিস্টারের পর পড়া ছেড়ে দিতে বাধ্য হলে তাকে সার্টিফিকেট ডিগ্রি, দ্বিতীয় বর্ষের ক্ষেত্রে 4টি সেমিস্টারের পরে পড়াশোনা ছাড়লে তাকে ডিপ্লোমা, তৃতীয় বর্ষের 6টি সেমিস্টারে ছাড়লে তাকে সাধারণ স্নাতক ডিগ্রি ও চতুর্থ বর্ষের 8টি সেমিস্টারে পরে তাকে রিসার্চ অনার্স ডিগ্রি দেওয়া হবে ।
বিক্ষোভকারীদের দাবি, আর্থিক কারণ-সহ যে কারণগুলির জন্য একজন ছাত্র-ছাত্রী মাঝপথে পড়াশোনা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়, এই প্রক্রিয়ায় সেই সমস্যা সমাধানের কোনও পদক্ষেপ না-নিয়ে বাস্তবে ড্রপ আউটকেই বৈধতা দেওয়া হয়েছে নতুন জাতীয় শিক্ষানীতিতে ৷ প্রথম বর্ষের পর আরও অন্য একাধিক কলেজে ভর্তির সুযোগের মাধ্যমে একজন ছাত্র-ছাত্রীদেরকে ক্রেতায় পরিণত করতে চাইছে সরকার । এইভাবে সম্পূর্ণ শিক্ষা ব্যবস্থাটাই পরিচালিত হবে মুনাফার উদ্যেশ্যে ৷ তাই এই পদ্ধতি প্রত্যাহার করতে হবে ।
আরও পড়ুন: নতুন শিক্ষাবর্ষেই রাজ্যে জাতীয় শিক্ষা নীতি, স্নাতক ডিগ্রির মেয়াদ 4 বছর
এআইডিএসও'র রাজ্য সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায় বলেন, "এবারের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার পরে আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই এই সিদ্ধান্তকে কার্যকর করতে চলেছে রাজ্য শিক্ষা দফতর । যা এরাজ্যের শিক্ষাপ্রেমী জনসাধারণকে খুবই আতঙ্কিত করে তুলেছে । আসলে রাজ্য সরকারের এই ঘোষণার মধ্যেই ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষা বাজারের ক্রেতায় পরিণত করার সামগ্রিক পরিকল্পনা রয়েছে । পাশাপাশি উচ্চশিক্ষায় শিক্ষার মান সম্পূর্ণ ধ্বংস হবে, কলেজগুলি পরিণত হবে পরিকাঠামোহীন ডিগ্রি কেনা-বেচার জায়গায় ৷"