কলকাতা, 14 জুলাই: রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসার পর এবার সরাসরি আদালত এবং রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকেই কাঠগড়ায় তুললেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে, অভিষেকের অভিযোগ, বিজেপির 'গুন্ডাদের' রক্ষাকবচ দিয়ে রেখেছে হাইকোর্ট। যার জেরে প্রশাসন চাইলেও ব্যবস্থা নিতে পারছে না বলেও দাবি করেছেন তিনি ৷
বৃহস্পতিবার নন্দীগ্রামে নির্বাচন পরবর্তী হিংসায় আহত 14 জন তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীকে দেখতে এসএসকেএম হাসপাতালে যান অভিষেক। হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তৃণমূলের উপর এই আক্রমণ নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হন তিনি। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "বিজেপির গুন্ডাদের রক্ষাকবচ দিয়ে রেখেছে হাইকোর্ট। সেই জন্য প্রশাসন ব্যবস্থা নিতে চাইলেও ব্যবস্থা নিতে পারছে না। কোনও একটি নির্দিষ্ট কেসে নয়, এদের ব্ল্যাঙ্কেট প্রোটেকশন দিয়ে রেখেছে হাইকোর্ট।"
এদিন আদালতকেও নিশানা করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় ৷ কটাক্ষের সুরে তিনি বলেন, "আদালত হল গণতন্ত্রের তৃতীয় স্তম্ভ ৷ সংবাদ মাধ্যম চতুর্থ স্তম্ভ। এই দুটি স্তম্ভকে ভেঙে চূর্ণ-বিচূর্ণ করার প্রচেষ্টা বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই চালিয়ে যাচ্ছে।" মুক্তভাবে সন্ত্রাস করতে, এই সমাজ বিরোধীদের কীভাবে নিরাপত্তা দেওয়া যায়, এদের মাধ্যমে কীভাবে সমাজে অশান্তি তৈরি করা যায়, তার জন্য হাইকোর্টের একাংশ মদত দিচ্ছে বলেও তীব্র আক্রমণ করেন অভিষেক ৷
এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "হাইকোর্টকে এভাবে সন্ত্রাসে মদত দিতে স্বাধীনতার এত বছরে কখনও দেখা যায়নি। সত্যি কথা বলার জন্য আমার বিরুদ্ধে কেউ যদি আদালত অবমাননার দায়ে ব্যবস্থা নেয়, ব্যবস্থা নিতেই পারেন। প্রয়োজনে জেলে যাব, তাও সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বলব।" অভিষেকের দাবি, যে দোষ করবে, সে যেন জেলে যায়। এটাই সাধারণত নিয়ম হওয়া উচিৎ ৷ আর সে কারণেই মানুষ আদালতের উপর ভরসা করে। তিনি বলেন, "শুভেন্দু অধিকারীর ছত্রছায়ায় যাঁরা, তাঁদের কেন সুরক্ষা কবচ দেওয়া হবে? আমি রক্ষাকবচ চাইলে দেবে না, বিজেপি নেতারা চাইলে কেন দিচ্ছে? ডাল মে কুচ কালা হ্যায়।"
আরও পড়ুন: নন্দীগ্রামে আহত তৃণমূল কর্মীদের দেখতে এসএসকেএমে অভিষেক
এদিন একজন নির্দিষ্ট বিচারপতির নাম করেও তাকে আক্রমণ শানিয়েছেন অভিষেক। তিনি বলেন, "যাঁদের জেলে থাকা উচিত, তাঁদের সাহায্য, মদত দিয়ে পুলিশ এবং প্রশাসনের হাত কার্যত বেঁধে দিচ্ছে কলকাতা হাইকোর্ট, যাতে তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা, দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ না করা যায়। একটাই বেঞ্চ শুভেন্দু অধিকারীকে প্রোটেকশন দিয়েছে, তাঁর অনুগামীদের নিরাপত্তা দিয়েছে। আজকের এই পরিস্থিতির জন্য কেউ দায়ী হলে, তা কলকাতা হাইকোর্টের মাননীয় এক বিচারপতি। তিনি বিচারব্যবস্থাকে কলুষিত করেছেন। রাজ্যের মেশিনরি ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। আশাকরি বিচারব্যবস্থা নিরপেক্ষ হবে, পক্ষপাতমুক্ত হবে।"