কলকাতা, 13 সেপ্টেম্বর: দীর্ঘ প্রায় 9 ঘণ্টার ম্যারাথন জেরা থেকে বেরিয়ে এসে আরও একবার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে ইডি'কে চ্যালেঞ্জ জানালেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় । বুধবার সকাল এগারোটা থেকে শুরু করে প্রায় 9 ঘণ্টা ম্যারাথন জেরার পর ইডি অফিস থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন অভিষেক । সেখানেই তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের দাবি, সমন্বয়ে বৈঠকে যাতে যোগ দিতে না-পারেন সেই কারণেই এদিন তাঁকে তলব করেছিল ইডি ৷ এদিনের জিজ্ঞাসাবাদের নির্যাস 'মাইনাস টু' বলেও দাবি করেন তিনি ৷
অভিষেক বলেন, "ইন্ডিয়া জোট এবং তৃণমূল কংগ্রেসকে ভয় পাচ্ছে বিজেপি । সে কারণেই বেছে বেছে আমাকে টার্গেট করা হচ্ছে । আমাকে চার দিন জেরা করলেও মেরুদণ্ড বিক্রি হবে না । এভাবে আর যাই হোক আমাকে দমানো যাবে না । এর আগে নব জোয়ার কর্মসূচির সময় আমাকে ডাকা হয়েছিল, আমি এসেছিলাম । এর আগে পঞ্চায়েত ভোটের সময়ে আমাকে ডাকা হয়েছিল । তখন অপারগতার কথা জানিয়েছিলাম । আজ আবার এমন সময়ে ডেকেছে যেদিন ইন্ডিয়া জোটের বৈঠক ছিল ।" অভিষেক জানান আগামিদিনেও যতবার তাঁকে ডাকা হবে তিনি আসবেন ।
এদিন তদন্তকারী অফিসারদের উদ্দেশ্যে অভিষেক বলেন, "তদন্তকারী অফিসারদের আমি কোনও দোষ দিচ্ছি না । ওঁরা ওঁদের কাজ করছেন । আগের দিন বলেছিলাম, 8 ঘণ্টা জেরার নির্যাস হল শূন্য । আজ বলছি, 9 ঘণ্টা জেরার নির্যাস হল 'মাইনাস টু' । এর পরের দিন ডাকলে মাইনাস ফোর হয়ে যাবে ।" এদিন ইডি অফিসের সামনে দাঁড়িয়ে সরাসরি বিচারব্যবস্থাকে আরও একবার একহাত নিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় । তাঁর কথায়, "আমার বিষয়ে কোনও অভিযোগ উঠলে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমোদন দেওয়া হয় । তবে টিভির পর্দায় টাকা নিতে দেখা যাওয়ার পরেও আদালত জিজ্ঞাসাবাদে অনুমোদন পর্যন্ত দেয় না । যাঁরা মেরুদন্ড বেঁচে অন্য দলে চলে যায় তাঁদের বিরুদ্ধে কোর্ট কোনও কথা বলে না । বিজেপিতে গেলেই ওয়াশিং মেশিনে ধুয়ে সব সাদা । সবাই ধোয়া তুলসী পাতা ।"
আরও পড়ুন: অভিষেকের পাশে 'ইন্ডিয়া', বিবৃতিতে বিজেপির প্রতিহিংসামূলক রাজনীতির উল্লেখ
এদিন ইডি'কে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে অভিষেক বলেছেন, "আজ ওদের যা বলেছি তা যেন বৃহস্পতিবার হাইকোর্টে হুবহু পেশ করে । কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে এটা আমার চ্যালেঞ্জ রইল ।" এদিন তদন্তকারী সংস্থার তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অভিষেক । তিনি জানান, গত 8 বছর ধরে সারদা মামলার তদন্ত হচ্ছে । কিন্তু এখনও পর্যন্ত কী হয়েছে ? গত 14 মাস ধরে জেল হেফাজতে রয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় । তাঁর বিরুদ্ধে কী প্রমাণ হয়েছে ? আসলে ইডি-সিবিআই যেভাবে ডাকাডাকি করছে তা একটা প্রথা হয়ে গিয়েছে । ভোট আসলে ডাকাডাকি করবে । আবার থেমে যাবে । এই ক'দিন আগে ধূপগুড়িতে বিজেপি হেরেছে, লোকসভা ভোট আসছে, তাই ডাকাডাকি করছে । কিন্তু ইডি-সিবিআইয়ের তদন্তে কেউ ন্যায়বিচার পেয়েছেন তা জানা যায়নি ৷ সারদা, রোজভ্যালি কাণ্ডে যাঁদের টাকা মার গিয়েছে, তারা তো এখনও বিচার পাননি । আর যারা টিভি ক্যামেরায় টাকা নেবেন, তারা বিজেপিতে যোগ দিলেও সাত খুন মাফ ।