কলকাতা, ২৫ ফেব্রুয়ারি : অবশেষে উঠল ঘেরাও। পর পর তিন রাত ঘেরাও থাকার পর আজ ক্যাম্পাস থেকে বেরোলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ উপাচার্য প্রদীপ কুমার ঘোষ। আজ জেনেরাল বডির বৈঠকের পর ঘেরাও তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা। তবে, স্টুডেন্ট ইউনিয়ন ভোটের দাবিতে অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়ে যাবে।
ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের দাবিতে গত তিনদিন ধরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ উপাচার্যকে কার্যত ঘেরাও করে রেখেছিল বামপন্থী সংগঠনগুলি। তার জেরে আজ সকালে অসুস্থও হয়ে পড়েছিলেন তিনি। তাঁকে দেখতে আজ ক্যাম্পাসেই চিকিৎসক আসেন। পাশাপাশি অবস্থানকারী পড়ুয়াদের দাবি সংক্রান্ত প্রতিলিপি রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে জানানো হয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে।
আজ সকালে সহ উপাচার্য প্রদীপ কুমার ঘোষ ও রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। দুপুরে অবস্থানকারী পড়ুয়াদের সঙ্গে বৈঠক করেন অধ্যাপকরা। তারপর জেনেরাল বডির বৈঠকে ঘেরাও তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সহ উপাচার্যের অসুস্থতা নিয়ে রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু বলেন, "প্রো-ভিসি তো কয়েকদিন ধরেই আবদ্ধ আছেন। তাঁর জ্বর এসেছিল। পাশাপাশি কাশিও হচ্ছিল। সেই কারণে আমরা ডাক্তার ডেকেছিলাম। ওঁর শারীরিক পরীক্ষার পর ডাক্তার বলেন যে বুকে সামান্য সমস্যা হয়েছে। সেই মতো অ্যান্টিবায়োটিক দিয়েছেন। জ্বরের ওষুধ তো চলছিল। এখন কাশির ওষুধও দিয়েছেন। তবে, শরীর এখনও একটু খারাপ আছে।"
পড়ুয়াদের দাবি সরকারের কাছে পাঠানো নিয়ে রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসুকে জিজ্ঞাসা করা হয়। তিনি বলেন, "ছাত্র-ছাত্রীরা যেসব দাবি প্রো-ভিসির কাছে জানিয়েছিল সেগুলোর প্রতিলিপি আজ সকালবেলায় তিনি সরকারের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন। পাশাপাশি প্রমাণস্বরূপ ওই প্রতিলিপির কপি দেওয়া হয়েছে অবস্থানকারী পড়ুয়াদের। আমরা আমাদের যা যা করণীয় তা করেছি।" তবে, বিশ্ববিদ্যালয় নিজে সরকারকে কোনও অনুরোধ করেনি। কর্তৃপক্ষ শুধুমাত্র আন্দোলনকারীদের দাবির প্রতিলিপি সরকারের কাছে পাঠিয়েছে বলে জানান রেজিস্ট্রার।
আজ পড়ুয়াদের আগাম পদক্ষেপ নিয়ে স্নেহমঞ্জু বসুকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। তখন তিনি বলেছিলেন, "আমরা আশা করছি নিশ্চয়ই একটু সহানুভূতির সঙ্গে দেখবেন। প্রথমত, প্রদীপ কুমার ঘোষ একজন অধ্যাপক। তাঁর ও আমাদের সবার প্রতি একটা দায়বদ্ধতা আছে পড়ুয়াদের। এখন দেখা যাক। তাঁরা তো আলোচনা করছে ও আমাদের শিক্ষকরা ওদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছেন। নিশ্চয় কোনও সমাধানসূত্র মিলবে আশা করছি। আমরা আশা করছি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় খুব শীঘ্রই সুস্থ পরিবেশে ফিরবে। ছাত্র-ছাত্রীদের পাশে আমরা সবসময় আছি, থাকব। তাঁরা যেন সেটা বিশ্বাস করে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে সুস্থ পরিবেশ ফিরিয়ে আনে।"