কলকাতা 5 অক্টোবর: করোনা অতিমারি পরিস্থিতিতে গোটা দেশ যখন বিপদে, তখন বেসরকারি হাসপাতালগুলো রমরমিয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে । যে যার ইচ্ছেমতো লক্ষ লক্ষ টাকা করোনা চিকিৎসার বিল চাপিয়ে দিচ্ছে সাধারণ মানুষের উপর । এর বিরুদ্ধে চিকিৎসার খরচে অস্বচ্ছতার অভিযোগে রাজ্য স্বাস্থ্য কমিশনারের (State Health Commissioner) বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) দায়ের হল জনস্বার্থ মামলা (Public Interest Litigation, PIL) । চলতি সপ্তাহেই মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে ।
মামলাকারী আইনজীবী শ্রীকান্ত দত্তের (Advocate Srikanta Dutta) বক্তব্য, 2017 সালে 'ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্লিনিক্যাল এস্টাবলিশমেন্টস অ্যাক্ট' (West Bengal Clinical Establishments Act) অনুযায়ী বেসরকারি হাসপাতাল বা চিকিৎসা কেন্দ্রগুলি পরিচালনার জন্য একটি রেগুলেশন তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল ৷ এই আইনে চিকিৎসার খরচ সুনির্দিষ্ট করে বেঁধে দেওয়ার কথা জানানো হয়েছিল ৷ আর এই গোটা ব্যবস্থার উপর নজরদারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল রাজ্য স্বাস্থ্য কমিশনকে । আইনে বলা ছিল, এবিষয়ে স্বচ্ছতা আনতে হবে । 'স্বচ্ছতা' শব্দটি ঢোকানো হয়েছিল নতুন করে । কিন্তু এরাজ্যে তার কিছুই হয়নি । রাজ্যের হাসপাতালগুলো নিজেদের ইচ্ছেমতো চিকিৎসার বিল বানাচ্ছে । বিশেষ করে এই করোনা পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষ চরম হয়রানির শিকার হচ্ছেন । রাজ্য এই ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট রেট চার্ট না তৈরি করে দেওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন জনসাধারণ । মূলত এই স্বৈরাচারী ব্যবসায়িক আচরণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আর্জি জানানো হয়েছে ৷
আরও পড়ুন : Calcutta High Court: ‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্পের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা ডিলারদের
'ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্লিনিক্যাল এস্টাবলিশমেন্ট অ্যাক্ট' অনুসারে রাজ্য যাতে অবিলম্বে চিকিৎসার খরচ নিয়ে একটি সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন বা রেট চার্ট তৈরি করে দেয়, তার আবেদন জানিয়েছেন শ্রীকান্ত দত্ত ৷
উল্লেখ্য, বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে করোনা রোগীদের চিকিৎসার খরচের ঊর্ধ্বসীমা নির্ধারণ করা সম্ভব কি না, তা খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টও । কিন্তু এ ব্যাপারে নজরদারির অভাবে বেসরকারি হাসপাতালগুলো নিজেদের ইচ্ছেমতো মাত্রাতিরিক্ত অর্থ নিচ্ছে বলে মনে করছেন মামলাকারী । চিকিৎসা চলাকালীন অনেকক্ষেত্রে পরিবার-পরিজনদের সময়মতো হিসেবের খরচ জানানো হচ্ছে না । রোগী মারা যাওয়ার পর অনেক ক্ষেত্রে হাসপাতালগুলো মোটা অঙ্কের বিল ধরিয়ে দিচ্ছে পরিবারের হাতে ।