কলকাতা, 18 মে: কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যকে বঞ্চিত করছে। গত কয়েক মাস ধরে এমনই অভিযোগ করছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় ৷ সেই সুরে সুর মিলিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও ৷ এবার এগরা বিস্ফোরণ কাণ্ডের দায় চাপাতে গিয়ে সেই কেন্দ্রের বঞ্চনাকেই টেনে এনেছে তৃণমূল নেতৃত্ব। আর এই ইস্যুতেই বৃহস্পতিবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর সরকারের কড়া ভাষায় সমালোচনা করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী। সেই সঙ্গে, বকেয়া টাকা আদায়ে সুপ্রিমকোর্টে মামলা করার পরামর্শও দিয়েছেন অধীর চৌধুরী ৷
এদিন এগরা বিস্ফোরণ কাণ্ডের সাফাই দিতে গিয়ে তৃণমূল কংগ্রসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ স্পষ্টতই দাবি করেন, কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে না তাই বাধ্য হয়ে সাধারণ মানুষকে বিপজ্জনক কাজ করতে হচ্ছে ৷ প্রকারান্তরে তৃণমূলের অভিযোগ, কেন্দ্রের বকেয়া টাকার জন্যই এতগুলি মানুষের মৃত্যু হয়েছে ৷ যার পালটা তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্দেশে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেন, "বাংলা কেন বকেয়া টাকা পাচ্ছে না ? কেন সুপ্রিম কোর্টে দরবার করেনি? সৎ ও স্বচ্ছ হলে কেন হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্টে মামলা করছেন না? আমরা আপনাকে চ্যালেঞ্জ করছি দিল্লিতে অবস্থান করুন, আমি যোগ দেব। হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্টে মামলা করুন। কেন বাংলার মানুষকে 100 দিনের কাজের উপর নির্ভর করিয়েছেন?" তাঁর দাবি, উত্তরপ্রদেশ সরকার 100 দিনের কাজের ব্যবস্থা করলেও বাংলা তা করতে পারেনি। এরপরই মমতা বন্দোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে যুগপৎ নিশানা করে অধীরের বক্তব্য, "দিদিমণি ডিএ দেব না বলছেন ! চোরদের বাঁচাতে আবার সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছেন। অপরাধকে রাজ্যে আপনি বৈধ করছেন। লুঠকে বৈধ করেছেন। পুলিশ অপরাধী বাঁচাতে ময়দানে নেমেছে। সরকারি খুনিদের বাঁচাতে ময়দানে নেমেছে। এর থেকে নির্লজ্জতা আর কী হতে পারে?"
চোরকে বাঁচাতে প্রয়োজনে তৃণমূল আন্তর্জাতিক আদালতে যেতে পারে বলেও এদিন কটাক্ষ করেছেন অধীর চৌধুরী ৷ তাঁর অভিযোগ, তৃণমূলের কাছে আদতে টাকা মাটি, মাটি টাকা। তিনি বলেন, "গণ্ডারের চামড়া এদের, কিছুই হয় না। মানুষের মৃত্যু মিছিল সহ্য করতে পারে। বাংলার মা-বোনেদের ধর্ষণ সহ্য করতে পারে। খোকাবাবুর কিছু হলে সহ্য করতে পারে না।" অন্যদিকে, পূর্ব মেদিনীপুরের বোমা বিস্ফোরণে তৃণমূলকেই এদিন দায়ী করেন অধীর চৌধুরী ৷ তিনি বলেন, "বাজি আর বোমাকে এক করে দেখাতে চেষ্টা করছে দিদি। কোন উৎসবে এত বাজি তৈরি করার প্রয়োজন ছিল? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অপরাধীকে বাঁচাতে পারবেন না। এগরার ঘটনা তৃণমূলের সন্ত্রাস ও ভয়ঙ্কর উদাহরণ। পশ্চিমবঙ্গ সরকারে মদতে বেআইনি করবার চলছে।" এর আগে পিংললাতেও এই একই ঘটনা ঘটেছে। এটা যে রাজ্যে নতুন কিছু নয় তাও জানান অধীর। তিনি বলেন, "বোমাকে তৃণমূল শিল্পে পরিণত করছে। ক্ষমতা দখলকে স্থায়ী করতে এই বোমার করবার। এই মৃত্যুর জন্য দায়ী কে? কাজ নেই, বেকারির জন্য বোমা তৈরিতে নিযুক্ত হচ্ছে গ্রামের সাধারণ মানুষ।"