কলকাতা, 7 নভেম্বর: নির্বাচন এলেই ঘুরেফিরে সিএএ-র (CAA) প্রসঙ্গ ওঠে । আসন্ন গুজরাত বিধানসভা নির্বাচনের আগে নাগরিকত্ব আইন নিয়ে আবারও শাসক-বিরোধী তরজা শুরু হয়েছে । গুজরাত-সহ বিভিন্ন রাজ্যে রাজনৈতিক দলগুলি, তা নিয়ে নিজেদের মতো মতামত ব্যক্ত করছে । যেমন, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বাংলায় সিএএ লাগু করতে দেবেন না বলেই জানিয়েছেন ।
এই প্রসঙ্গেই সোমবার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী (Adhir Ranjan Chowdhury) রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে (PM Narendra Modi) একযোগে কড়া আক্রমণ করেছেন । পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের সদর দফতর বিধান ভবনে সাংবাদিক সম্মেলনে অধীর চৌধুরী বলেন, " সিএএ নিয়ে ধাপ্পা মারছে দিদি-মোদি ।"
অধীরের আরও দাবি, "গুজরাতের যে তিন জেলায় নাগরিকত্ব আইনের মাধ্যমে ভিনদেশীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, তা 1955 সালের আইন মেনে । যা তিন জেলার জেলাশাসকরা ওই আইন মেনে নাগরিকত্ব দিতে পারেন । আগেও পেরেছে ৷ আগামীতেও পারবেন ।’’
অধীর আরও বলেন, ‘‘কিন্তু, 2019 সালে পাস হওয়া সিএএ আইন তিন বছর পেলেও কেন্দ্রীয় সরকার কিন্তু এখনও বাস্তবায়ন করতে পারেনি । বিরোধীরা তা কখনোই করতে দেবে না । সেদিনও আমরা বলেছিলাম ধর্মীয় কারণে নাগরিকত্ব দেওয়া যেতে পারে না । টার্গেটেড রেজিস্ট্রেশন ভারতীয় সংবিধান অনুমতি দেয় না । ভারতবর্ষের নাগরিক হওয়ার সমস্ত সুযোগ সুবিধা 1955 সালের আইন অনুযায়ী সংবিধানে আছে । যেখানে 2019 এর সিএএ আইন প্রয়োজন হয় না ।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘আজকের দিনে মোদি সরকারের (Modi Government) বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অভিযোগ হল তিনি বা তাঁর সরকার যাদের নাগরিকত্ব দেবে বলে কথা দিয়েছিলেন, তাঁদের আজও নাগরিকত্ব দিতে পারেননি ৷ সেই সব পাকিস্তানিরা যারা পাঞ্জাব হরিয়ানার সীমান্ত এলাকায় থাকেন, তাঁরা এখন পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন সে দেশের নাগরিকত্ব ফিরে পেতে । ভারত সরকার এভাবে ধাপ্পা মেরেছে । এখন গুজরাতে ভোট । তাই হিন্দু-মুসলিম ভাগ করার চেষ্টা চলছে ।’’
বিজেপিকে (BJP) নিশানা করে বহরমপুরের সাংসদ আরও বলেন, ‘‘তাছাড়া বিজেপির হাতে কোনও অস্ত্র নেই। তাই নাগরিকত্ব আইন নিয়ে চিল্লাচ্ছে । অথচ সাধারণ মানুষ জানে না এই নাগরিকত্ব আইন কবেকার । সুযোগ বুঝে দিদিমণি গলা ফাটাচ্ছেন, নিজেদের দর বাড়ানোর চেষ্টা করছে । 2021 এর আগে বিজেপি বাংলায় সিএএ, এনআরসি (NRC) লাগু করার কথা বলেছিলেন । তা আজও লাগু করতে পারল না । পারবেও না ।"
ডিএ, ডেঙ্গু, বেকারত্ব, চাকরিপ্রার্থীদের অবস্থান-সহ একাধিক বিষয় নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক কথা বলেন অধীর চৌধুরী । অধীরের দাবি, "সরকারি কর্মচারীরা ভোট ব্যাংকে বিশেষ প্রভাব ফেলতে পারেন না । তাই তাঁদের নিয়ে বিশেষ মাথাব্যথা নেই তৃণমূল (Trinamool Congress) সরকারের । যাঁদের নিয়ে মাথা ব্যাথা, তাঁদেরই দরাদরি-কেনাকাটি করছেন ।"
আরও পড়ুন: 'ওঁরা ভিক্ষা চাইছেন না', শিক্ষক দিবসে নিয়োগ নিয়ে মমতাকে কড়া ভাষায় চিঠি অধীরের