কলকাতা, 10 ডিসেম্বর : লক্ষ্য অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন ৷ আর কিছুদিন পরই কলকাতা পৌরনিগমের নির্বাচন ৷ তার আগে শহরের অতিস্পর্শকাতর এলাকাগুলিকে চিহ্নিত করে ওই এলাকাগুলিতে নিরাপত্তা নিয়ে বিশেষ ব্যবস্থা নিচ্ছে লালবাজার (adequate security arrangements for sensitive areas) ৷ একাধিকবার নিজের বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন কলকাতা পুলিশের নগরপাল সৌমেন মিত্র । সেখানে তিনি প্রতিটি থানার দক্ষ অফিসারদের সজাগ থাকার নির্দেশ দিয়েছেন ৷ এবং নিজ নিজ এলাকার কুখ্যাত জায়গাগুলিকে চিহ্নিত করে অবিলম্বে তালিকাবদ্ধ করে কলকাতা পুলিশের সদর দফতরে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন (KMC Election 2021) ।
নির্দেশ পাওয়া মাত্রই শুরু হয়েছে কাজ ৷ ইতিমধ্যেই শহরের অতিস্পর্শকাতর এলাকাগুলিকে চিহ্নিত করে নাম জমা পড়েছে লালবাজারে ৷ আর সেই তালিকার প্রথমেই রয়েছে উত্তর কলকাতার কাশীপুর বেলগাছিয়া । উত্তেজনাপ্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে কলকাতার বন্দর এলাকার দক্ষিণ বন্দর থানা, গার্ডেনরিচ, মেটিয়াবুরুজের নাদিয়াল-সহ একাধিক জায়গাকে । একটু কম হলেও উত্তেজনাপ্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে দক্ষিণ কলকাতার আলিপুর থানা এলাকা ।
কিন্তু বেলগাছিয়া, কাশীপুর, হরিদেবপুর, বেহালা, বেলেঘাটা-সহ একাধিক জায়গায় একাধিক সমাজবিরোধীরা বর্তমানে কলকাতায় নেই ৷ এবং অনেকে আবার এলাকাছাড়া ৷ কিন্তু লালবাজারের অনুমান প্রয়োজন পড়লে এবং এলাকায় গন্ডগোল সৃষ্টির জন্য ভোটের আগে নিঃশব্দে এলাকায় ঢুকতে পারে এই সকল সমাজবিরোধীরা। যাদের অন্যতম হচ্ছে ফরিদপুরের পায়রা বাপ্পা থেকে শুরু করে বাবু সোনা। ফলে এবার কলকাতার সংযুক্ত এলাকাগুলিতে বেশি পরিমাণে নিরাপত্তা বাড়াতে চাইছে কলকাতা পুলিশ ।
আরও পড়ুন : Firhad Hakim : আট মাসে সম্পত্তির পরিমাণ বেড়েছে 88 লক্ষ টাকা, হলফনামায় জানালেন ফিরহাদ
2015 এবং 2010 সালের পৌরভোটে এইসব এলাকাগুলিতে উত্তেজনা ছড়িয়েছিল ৷ লালবাজারের দাবি, উপরোক্ত জায়গাগুলি পৌরভোটে গন্ডগোলের কারণে খবরের শিরোনামে উঠে এসেছিল ৷ এই অবস্থায় পুলিশের কী করণীয় ? ইটিভি ভারতের মুখোমুখি হয়ে জানালেন রাজ্য পুলিশের প্রাক্তন ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট অফ পুলিশ অজয় মুখোপাধ্যায় ৷ প্রথমেই তিনি পুলিশকে সবসময় সক্রিয় থাকার পরামর্শ দিয়েছেন ৷ শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাইলে সতর্কতা অবলম্বনের জন্য নির্দিষ্ট এলাকার সমাজবিরোধী ও রাজনৈতিক গুন্ডাদের চিহ্নিত করে শ্রীঘরে পাঠানোর বন্দোবস্ত করার কথা বলছেন তিনি ৷ পৌরভোটের দিন পুলিশকে অতিরিক্ত সক্রিয়তা দেখানোর কথা বলছেন তিনি ৷ এতে স্থানীয়রা যেমন নিশ্চিত বোধ করবেন, তেমনই এলাকার দুষ্কৃতীদের কাছেও বার্তা পৌঁছবে বলে মনে করছেন তিনি ৷
প্রতিটি থানার ডিউটি অফিসার এবং থানার অফিসার ইনচার্জ-এর স্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে, এলাকায় ঘুরে ঘুরে টহল দেওয়া এবং কোনওরকম সমস্যার আভাস পেলে সঙ্গে সঙ্গে তা কলকাতা পুলিশের গুন্ডা দমন শাখার নজরে আনতে হবে । ইতিমধ্যেই কলকাতা পুলিশের তরফে দক্ষিণ 24 পরগনা জেলা পুলিশ, বারুইপুর ও ডায়মন্ডহারবার পুলিশের সঙ্গে যৌথভাবে বৈঠক করা হয়েছে ৷ যাতে ভোটের কিছুদিন আগে থেকেই কলকাতা পুলিশ এবং রাজ্য পুলিশের সংযুক্ত এলাকাগুলিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয় ।
আরও পড়ুন : BJP Manifesto for KMC election : একগুচ্ছ নতুন নাগরিক পরিষেবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিজেপির ইস্তাহার প্রকাশ
জানা গিয়েছে, আসন্ন পৌর নির্বাচনে বুথের সংখ্যা মোট 4742টি । আর অতিরিক্ত অক্সিলারি থাকছে 385টি । এবার পৌর নির্বাচনে মোট 23 হাজার পুলিশকর্মী রাস্তায় থাকবেন । তাছাড়াও স্পর্শকাতর বুথের দায়িত্বে থাকবেন ডেপুটি কমিশনার পদমর্যাদার একজন করে আধিকারিক । 78টি কুইক রেসপন্স টিম ভিউয়ার রাখা হচ্ছে ৷ পাশাপাশি রাখা হচ্ছে 35টি রেডিয়ো ফ্লাইং স্কুইড, যা যে কোনও ঝামেলাপ্রবণ এলাকায় গিয়ে মিনিট কয়েকের মধ্যে শান্তিশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সিদ্ধহস্ত ।