কলকাতা, 5 মার্চ: কলকাতার বিসি রায় হাসপাতালে মৃত্যু হল আরও দুই শিশুর (Children Death)৷ তাদের শরীরেও ছিল অ্যাডিনো ভাইরাসের উপসর্গ (Adenovirus in Kolkata)৷ গত 9 দিনে এই নিয়ে 36টি শিশুর মৃত্যু হল ৷ পরপর শিশুমৃত্যুতে আতঙ্ক ক্রমে বাড়ছে অ্যাডিনো ভাইরাস নিয়ে ৷ কারণ মৃত শিশুদের বেশিরভাগেরই ছিল অ্যাডিনো ভাইরাসের উপসর্গ ৷
9 দিনে মৃত 36 শিশু: রাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগের রেকর্ড বলছে যে, গত নয় দিনে 36টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে । রবিবার সকালে সর্বশেষ দুটি মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে কলকাতার বিসি রায় শিশু হাসপাতালে । নিহত দুই শিশুর নাম আতিফা খাতুন (18 মাস) ও আরমান গাজি (4 বছর)।
সকালে মৃত্যু হয় মেটিয়াবুরুজের শিশুর: জানা গিয়েছে, মেটিয়াবুরুজ এলাকার নাদিয়াল থানার অন্তর্গত একটি পরিবারের বাসিন্দা আতিফা খাতুনকে 26 ফেব্রুয়ারি বিসি রায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল । তার জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট ছিল, যেগুলি সবই অ্যাডিনো ভাইরাসের উপসর্গ ৷ বেশ কয়েকদিন ধরে চিকিৎসা সত্ত্বেও তার মধ্যে সুস্থ হওয়ার কোনও লক্ষণ দেখা যায়নি এবং রবিবার ভোরে শিশুটির মৃত্যু হয় ।
ভোর মৃত্যু বসিরহাটের শিশুর: একইভাবে, রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তর 24 পরগনা জেলার বসিরহাট মহকুমার মিনাখাঁ থানা এলাকায় থাকত 4 বছরের আরমান গাজি । একই রকম উপসর্গ নিয়ে গত সপ্তাহে তাকে ভর্তি করা হয় বিসি রায় হাসপাতালে ৷ সেই শিশুটিও রবিবার ভোর 5টা নাগাদ মারা যায় ৷ অ্যাডিনোভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার জন্য সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।"
আরও পড়ুন: শহরে অ্যাডিনো ভাইরাস মোকাবিলায় উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক কলকাতা পৌরনিগমে
হাসপাতালগুলিতে ভর্তি শিশুদের শয্যা: একের পর এক শিশু অসুস্থ হয়ে পড়ায় রাজ্যের পেডিয়াট্রিক চাইল্ড কেয়ার ইউনিটের সমস্ত শয্যাই প্রায় ভর্তি । বেসরকারি হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক চাইল্ড কেয়ার ইউনিটগুলির অবস্থাও একই রকম । নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, শিশুদের ক্ষেত্রে জেলা হাসপাতাল থেকে অ্যাডিনো ভাইরাসের উপসর্গ বাড়ছে ৷
অ্যাডিনো ভাইরাসের উপসর্গ: অ্যাডিনো ভাইরাসের সাধারণ উপসর্গগুলি (Adenovirus Symptoms) হল ফ্লু-এর মতো ৷ ঠান্ডা লাগা, জ্বর, শ্বাসকষ্ট, গলা ব্যথা, নিউমোনিয়া এবং তীব্র ব্রঙ্কাইটিস হল এই রোগের উপসর্গ । দুই বছর বা তার কম বয়সি শিশুদের এই ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার জন্য সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।
ভাইরাসটি ত্বকের সংস্পর্শে এসে কাশি এবং হাঁচির দ্বারা বাতাসের মাধ্যমে অথবা সংক্রামিত ব্যক্তির মলের মাধ্যমে ছড়াতে পারে । এখনও পর্যন্ত অ্যাডিনো ভাইরাসের চিকিত্সার জন্য কোনও অনুমোদিত ওষুধ বা কোনও নির্দিষ্ট চিকিত্সা ব্যবস্থা নেই ।