কলকাতা, 1 মে : কোরোনা সংক্রমণ রুখতে দেশজুড়ে লকডাউন । এর ফলে বন্ধ রাজ্যের তামাক, গুটখা ও মদের দোকানগুলো । কিন্তু, নেশার টানে বেশি টাকা দিয়েই মদ কিনছে অনেকে । তবে, দোকান বন্ধ থাকায় কিছুটা হলেও কম নেশা করছে মানুষ । এমনই জানাচ্ছেন নেশা মুক্তি কেন্দ্রের চিকিৎসকরা ।
নেশা মুক্তি কেন্দ্রের চিকিৎসকদের বক্তব্য, লকডাউনের ফলে মানুষের নেশা করার প্রবণতা কিছুটা কমেছে । তা বলে এমন মনে করার কোনও কারণ নেই যে, লকডাউনের মেয়াদ শেষের পরও মানুষ নেশা থেকে দূরে থাকবে । নেশা মুক্তি কেন্দ্রের বিশেষজ্ঞ অভিজিৎ রায় বলেন, "12 বছর ধরে এই কেন্দ্রের সঙ্গে যুক্ত । উগ্র নেশাগ্রস্থ মানুষকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরানোর চেষ্টা করি আমরা । মদ, গুটখা, মাদক-সহ অন্যান্য নেশার আসক্তদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনাটাই মূল কাজ । লকডাউনে মদের দোকান বন্ধ । গুটখা, সিগারেটের দোকানও বন্ধ । যে কারণে নেশার সামগ্রী পাচ্ছে না কেউ । পরিস্থিতি এতটাই জটিল যে, এই সময়ে নিয়মিত ফোন আসছে । নেশাগ্রস্থদের বাড়ির লোক ফোন করছে । নেশার সামগ্রী না পেয়ে মানসিক ভারসাম্য হারাচ্ছে অনেকে । অনেকে অ্যালকোহল না পেয়ে স্যানিটাইজ়ার খাওয়ার চেষ্টা করেছে ।"
অভিজিৎ রায় আরও বলেন, "নেশা করার ইচ্ছে হলে অনেকের মস্তিষ্ক কাজ করে না । বুঝতে পারে না কী করবে । এই মুহূর্তে নেশার সামগ্রী পাচ্ছে না বলে এমন মনে করার কিছু নেই যে, তারা আর নেশা করবে না । লকডাউন উঠলে আবার মদ, সিগারেটের দোকানে ভিড় জমবে ।" নেশাগ্রস্থ মানুষদের নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করছেন সৌভিকও । তিনি বলেন, "সাধারণ মানুষ নেশার সামগ্রী পাচ্ছে না তাই নেশা কমেছে । যারা নেশাগ্রস্থ তাদের নেশা কমেনি । নেশার সামগ্রী পেতে কষ্ট হলেও অতিরিক্ত দামে মদ, সিগারেট, গুটখা-সহ বিভিন্ন নেশার জিনিস সংগ্রহ করছে তারা । তবে, দোকান বন্ধ থাকায় টুকটাক যারা নেশা করত, তারা নেশা মুক্ত হয়েছে ।" রাজ্য সরকারের দ্রব্যমূল্য কর বিভাগের তরফে জানানো হয়, গত কয়েকদিনে মদ বিক্রি করে রাজ্য সরকারের কোষাগারে 12 শতাংশ টাকা এসেছে । স্বাভাবিক সময়ে যা থাকে 88 শতাংশ । বর্তমানে অসৎ উপায়ে নেশার সামগ্রী কেনার প্রবণতা বেড়েছে রাজ্যে । বিভিন্ন জায়গা থেকে বেশি দাম দিয়ে মদ কিনছে মানুষ ।