কলকাতা, 1 মে: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর প্রাথমিকের দুই মামলার নথি চাইল কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির কার্যালয় । সৌমেন নন্দী ও রমেশ মালিকের মামলার নথি চেয়েছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির কার্যালয় । সূত্রের খবর, অবিলম্বে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে নথি চেয়েছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির কার্যালয় ।
একটি টিভি চ্যানেলে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় সাক্ষাৎকার দেওয়ার জন্য গত শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এই দুটি মামলাকে অন্য কোনও বিচারপতির বেঞ্চে স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন । সেই মতোই সোমবার ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যর ডিভিশন বেঞ্চ মামলা দুটির নথি চেয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চ থেকে ।
উল্লেখ্য, এই সংক্রান্ত মামলায় তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত বলে নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় । সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতে আপিল করেন অভিষেক । তাঁর তরফে আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চে অভিযোগ করেন, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় এই মামলায় যখন তাঁর বেঞ্চে বিচার করছেন, সেই সময় তিনি একটা টিভি চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন ।
সঙ্গে সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ কলকাতা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে এই বিষয়ে হলফনামা তলব করেন । বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় টিভিতে কী বলেছেন সেই ব্যাপারে জানতে চায় শীর্ষ আদালত । সেই সমস্ত নথি খতিয়ে দেখার পর গত শুক্রবার প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ মামলা দুটি অন্য বেঞ্চে সরানোর নির্দেশ দেন কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিকে ।
নিয়ম অনুযায়ী, কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিকে মাস্টার অফ রস্টার বলা হয় । যার অর্থ, প্রধান বিচারপতি ঠিক করেন কোন বিচারপতি কোন মামলা শুনবেন । এখন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি এই মামলা দুটি অন্য কোনও বিচারপতির বেঞ্চে স্থানান্তর করবেন । এই ব্যাপারে ইতিমধ্যেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় গত শুক্রবার তাঁর ক্ষোভ ব্যক্ত করে তাঁর বক্তব্যের যে তর্জমা সুপ্রিম কোর্টে পাঠানো হয়েছিল তা চেয়ে পাঠিয়েছেন ।
যদিও সুপ্রিম কোর্টের বিশেষ বেঞ্চ গত শুক্রবার সেই নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ জারি করে । আপাতত দেখার, কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি অন্য কোন বিচারপতিকে এই দুই মামলা শোনার নির্দেশ দেন । কারণ এই মামলা দুটি নিয়োগ দুর্নীতির ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে বন্দি কুন্তল ঘোষের চিঠি প্রসঙ্গের অবতারণা করা হয়েছিল এই দুই মামলার পরিপ্রেক্ষিতেই । সেই চিঠির সত্যতা বিচার করতে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন ।
আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্টের রায়ে দু'টি মামলা হাতছাড়া বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের