কলকাতা, 12 অগস্ট: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা অনার্সের প্রথম বর্ষের পড়ুয়ার মৃত্যু ঘিরে তোলপাড় রাজ্য ৷ নদিয়ার বাসিন্দা স্বপ্নদ্বীপ কুণ্ডুর খুনের ঘটনায় ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী সৌরভ চৌধুরী। পুলিশের অনুমান, প্রত্যেক বছর নতুন ছাত্ররা হস্টেলে বা ক্যাম্পাসে এলে তাঁদের ব়্যাগিং করত সৌরভ। শুধু তাই নয়, সৌরভের নেতৃত্বে থাকত একাধিক ছাত্রছাত্রীরা। ব়্যাগিং করতে কার্যত সেল গড়ে তুলেছিল পড়ুয়ারা। পুলিশ এখন সৌরভকে জেরা করে জানতে চাইছে তার সঙ্গে আর কারা কারা এই সেলে ছিল।
গতকাল, শুক্রবার একতরফা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। আজও যাদবপুর থানায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন আধিকারিককে ডেকে পাঠানো হয়েছে। তদন্তকারীদের দাবি, এই ঘটনা বহুকাল ধরে চলে আসছে ক্যাম্পাসের ভিতরে। আর এতে মদত রয়েছে খোদ হস্টেলের বিভিন্ন আধিকারিকদেরও। গতকাল রাত আটটা নাগাদ যাদবপুর থানার পুলিশ সৌরভ চৌধুরীকে গ্রেফতার করে। এরপর প্রায় রাত তিনটে পর্যন্ত তার জেরা করেছে ৷
তাতে পুলিশ জানতে পেরেছে, স্বভাবে বিপ্লবী সৌরভ চৌধুরী নামে ওই যুবক। গত বছর এমএসসি নিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ আউট হয়ে গিয়েছিল এই ছাত্র। তবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি গেটের নিরাপত্তা রক্ষীরা সৌরভ চৌধুরীকে বেশ ভালোভাবেই চিনত। নিজের প্রভাব খাটিয়ে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্রকে কখনও মারধর আবার কখনও মানসিকভাবে বিধ্বস্ত করে ব়্যাগিং করাই ছিল সৌরভের কাজ। শুধু সৌরভ নয় বরং তার সঙ্গে যুক্ত ছিল একাধিক ছাত্রছাত্রীরা।
তাদের মধ্যে একাধিক ছাত্রছাত্রী কর্মরত। তারা সন্ধ্যা বা রাত হলে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে অবাধ বিচরণ করত এবং রীতিমতো একটি ব়্যাগিং সেল চালাত। মূলত প্রাক্তন এই ছাত্রদের বিভিন্ন ফাইফর্মাসের কাজ করতে হত প্রথম বর্ষের ছাত্রদের। তাদের ইচ্ছেতেই পড়তে হতো জামাকাপড় এবং তাদের ইচ্ছাতেই কাটতে হতো চুল। শনিবার ধৃত সৌরভ চৌধুরীকে আলিপুর আদালতে পেশ। তাকে নিজেদের হেফাজতে চেয়ে আবেদন জানাবে যাদবপুর থানার পুলিশ।
আরও পড়ুন: যাদবপুরে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী সৌরভ