কলকাতা, 18 ফেব্রুয়ারি : পুরনো পদেই ফিরলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক পদ অভিষেককে ফিরিয়ে দিল তৃণমূল নেতৃত্ব ৷ শুক্রবার দলের জাতীয় কর্মসমিতির প্রথম বৈঠকের (TMC Working Committee Meeting) পর এই ঘোষণা করেন তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় ৷ একই সঙ্গে এদিন দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি পদে একাধিক মুখ আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মমতা ৷ সুব্রত বক্সীর সঙ্গে যশবন্ত সিনহা ও চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকেও এই পদে আনা হয়েছে ৷ দলের জাতীয় মুখপাত্র হচ্ছেন রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় ৷
জল্পনাতে ইতি টেনে বিধাননগর, আসানসোল ও চন্দননগরের মেয়রের নামও এদিন ঘোষণা করেছে তৃণমূল ৷ বিধাননগরের মেয়র থাকছেন কৃষ্ণা চক্রবর্তীই ৷ চন্দননগরের মেয়র হচ্ছেন রাম চক্রবর্তী, আসানসোলের মেয়র হচ্ছেন বিধান উপাধ্যায় ৷
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দলের সর্বভারতীয় সম্পাদক পদে আর থাকবেন কি না, তা নিয়ে যে জল্পনা চলছিল এদিনের ঘোষণায় সেই জল্পনায় ইতি পড়ল ৷ তৃণমূলের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকের পর এদিন দলীয় নেতৃত্বের যে পোর্টফোলিও ঘোষণা হয়েছে তাতে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের পর দলের দু'নম্বর হিসেবেই থাকছেন অভিষেক ৷
এছাড়াও, এদিন দলের জাতীয় কর্মসমিতি এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে সমন্বয় সাধনের জন্য বিশেষ দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছে ফিরহাদ হাকিমকে । দলের কোষাধক্ষ্য হয়েছেন অরূপ বিশ্বাস । দলের আর্থিক নীতি নির্ধারণ করবেন অমিত মিত্র এবং যশবন্ত সিনহা-সহ কয়েকজন মিলে । দলের জাতীয় মুখপাত্রের পাশাপাশি রাজ্যসভার মুখপাত্রও হচ্ছেন সুখেন্দুশেখর রায় । লোকসভায় দলের মুখপাত্র হচ্ছেন কাকলি ঘোষ দস্তিদার ।
আরও পড়ুন : বিধাননগরের মেয়র কৃষ্ণাই, চেয়ারম্যান সব্যসাচী
উত্তরপূর্ব ভারতের রাজ্যেগুলিতে দলের সংগঠন দেখাশোনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সুস্মিতা দেবকে । এদিনের বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ দলের জাতীয় কর্মসমিতির 19 জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন ৷ অনুব্রত মণ্ডল এদিনের বৈঠকে আসেননি ৷ ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য না হলেও এদিনের বৈঠকে তৃণমূলের ভিন রাজ্যের কয়েকজন নেতা উপস্থিত ছিলেন ৷ ডাকা হয়েছিল মেঘালয়ের মুকুল সাংমা, ত্রিপুরার সুবল ভৌমিক, গোয়ার লুইজিনহো ফেলেরিও, হরিয়ানার অশোক তানোয়ারকে ।
গত 12 ফেব্রুয়ারি কালীঘাটে দলীয় বৈঠকে দলের চেয়ারপার্সন হিসাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জাতীয় কর্মসমিতি ঘোষণা করে, দলের বাকি সমস্ত শীর্ষ পদের অবলুপ্তি ঘটানোর পর রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছিল জল্পনা । এমনও কানাঘুষো শোনা যাচ্ছিল এবার অভিষেক আর সর্বভারতীয় পদে থাকবেন না ৷ তাঁর সেকেন্ড ইন কমান্ড ভাবমূর্তিই প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়েছিল ৷ দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক পদে আরও কাউকে আনা হতে পারে সেই জল্পনাও চলছিল ৷ কিন্তু এদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘোষণার পর সমস্ত জল্পনার অবসান হল । বৈঠক শেষে দেখা গেল, অভিষেক রইলেন তাঁর জায়গায় । তৃণমূলের সংগঠনিক কাঠামো অনুসারে চেয়ারপার্সন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলের ফার্স্ট পার্সন এবং সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সেকেন্ড পার্সন ।
এদিন প্রাক্তন বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী তৃণমূলের এই ঘোষণার পর কটাক্ষের সুরে বলেছেন, "গত কয়েকদিনে সব পদ বাতিল করে দেওয়ার পর আবার সেই অভিষেকেই সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক করতে হল । অর্থাৎ পুনর্মূষিকভব ।"