কলকাতা, 7 জানুয়ারি: অভিমান ভেঙেও যেন ভাঙল না। তিনি দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। দলের নীতি নির্ধারণ থেকে শুরু করে কর্মসূচি সব ঠিক করাতে তাঁর ভূমিকা থাকে প্রথম সারিতে। আজ তাঁর মুখেই অভিমানের সুর। রবিবার ডায়মন্ড হারবারে তাঁর নিজের নির্বাচনী ক্ষেত্রে একটি কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই গত কয়েক দিন ধরে চলা ঘটনাক্রম, নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্ব নিয়ে মুখ খুললেন অভিষেক।
অভিষেকের কথায়, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি এবং তৃণমূল কংগ্রেসের ঝান্ডা নিয়ে চলেছি, চলব।" একইসঙ্গে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, তৃণমূল কংগ্রেস মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ। দলে কোনও দ্বন্দ্ব নেই। আমি দলের অনুগত সৈনিক। আমাকে দলের যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আমি তাই পালন করছি। সাংসদ হিসাবে ডায়মন্ড হারবার আমার কাছে প্রাধান্য।" একইসঙ্গে তিনি এও জানাতে ভোলেননি দল যেখানে দায়িত্ব দেবে সেখানেই তিনি যাবেন। তাঁর কথায়, "2024-এ ঐক্যবদ্ধভাবেই লড়বে তৃণমূল কংগ্রেস।"
এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যে একদিকে যেমন ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াইয়ের বার্তা রয়েছে একইসঙ্গে সেখানে রয়েছে অভিমান। তেমনটাই রাজনৈতিক মহল মনে করছে। গত কয়েকদিনে বারংবার জল্পনায় এসেছে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিজেকে ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে চাওয়ার কথা। কিন্তু তিনি প্রকাশ্যে মুখ খুলছিলেন না। এদিন মিটিংয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক একই কথা বলায় এই বক্তব্যের সত্যতা আরও একবার সামনে চলে এসেছে।
শুধু তাই নয়, এদিন অভিষেকের বক্তব্যে স্পষ্ট, তিনি তাঁর অতীতের অবস্থান থেকে সরছেন না। নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্বের মূল যে বিষয় বয়সসীমা, তা নিয়েও মুখ খুলেছেন অভিষেক। দলের প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায় বলেছিলেন, "শ্রমিক নই আমরা। রাজনৈতিক কর্মী। সেই পারফরম্যান্স কারখানার শ্রমিকদের মতো মাপা যায় না।"
এদিন এই বিতর্কে মুখ খুলে অভিষেক বলেছেন, "আমি বলছি বয়স হলে কর্মক্ষমতা কমে। আমি যখন নবজোয়ার করেছি আমার বয়স 36 বছর। সে সময় দু-আড়াই মাস টানা রাস্তায় ছিলাম। বয়স 36 ছিল বলেই পেরেছি। 70 হলে পারতাম না।" তিনি এদিন এও বলেছেন, "আগামী কুড়ি বছর পরে আমারও কর্মক্ষমতা কমবে। 30 বছর পর আরও। চল্লিশে আরও।"
অভিষেকের বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট বয়সসীমা নিয়ে অতীতের মন্তব্য থেকে সরছেন না তিনি। আর সেখান থেকেই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি বছরের প্রথমে সান্ধ্য বৈঠক পুরোটাই কার্যহীন? অভিমানের প্রশ্নই হোক বা নবীন-প্রবীণ দণ্ড নিজের যুক্তিতে এখনও অনড় অভিষেক। তাহলে কি ডায়মন্ড হারবারে এই প্রবীণদের কথা রাখার মঞ্চ আদতে অভিষেকের জবাব দেওয়ার বড় জায়গা? তাহলে কি অভিষেক আছেন অভিষেকেই?
আরও পড়ুন: