কলকাতা, 20 মে: নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষের লেখা চিঠির মামলাতে শনিবার দীর্ঘ প্রায় সাড়ে 9 ঘণ্টা সিবিআই-এর জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ এদিন জিজ্ঞাসাবাদ শেষে নিজাম প্যালেসে সিবিআই দফতর থেকে বেরিয়ে সেই কুন্তল ঘোষের নাম করেই পালটা প্রশ্ন করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ৷ তুলে আনলেন গত 29 মার্চ শহিদ মিনার ময়দানে তাঁর বক্তব্যের প্রসঙ্গও ৷
এদিন কুন্তল ঘোষকে নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে অভিষেক বলেন, "29 মার্চ শহিদ মিনারের সভা থেকে আমি তো কুন্তল ঘোষের নাম নিইনি ৷ তাহলে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা কেন কুন্তলকে গিয়ে প্রশ্ন করল ৷ অনেকেই তো গ্রেফতার হয়েছে, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, মানিক ভট্টাচার্য, শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়, এসপি সিনহা, সুবীরেশ ভট্টাচার্য-সহ অনেকেই গ্রেফতার ৷ আমি তো কারও নাম নিইনি ৷ আমি তো বলেছি মদন মিত্র, কুণাল ঘোষকে চাপ দেওয়া হয়েছে আমার নাম নেওয়ার জন্য ৷ তাহলে কুন্তল ঘোষকে কেন আমার নিয়ে প্রশ্ন করা হল ?"
উল্লেখ্য, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় 29 মার্চ শহিদ মিনারে ওই কথা বলার দিন কয়েকের মধ্যেই কুন্তল ঘোষ আদালতে চিঠি লিখে জানান অভিষেকের নাম বলার জন্য তাঁর উপর চাপ দিচ্ছেন ইডি, সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা ৷ বিরোধীরা তখন অভিযোগ করেছিল অভিষেকের ওই মন্তব্য থেকে ইঙ্গিত পেয়েই কুন্তল ঘোষ ওই চিঠি লেখেন তদন্তকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে ৷ এরপর এই চিঠির বিষয়টি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে ওঠে ৷ তিনিই নির্দেশ দেন এই চিঠি প্রসঙ্গে ইডি বা সিবিআই চাইলে অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে ৷ যার প্রেক্ষিতে এপ্রিলেই একবার অভিষেককে তলব করে সিবিআই ৷
তবে সে যাত্রায় অভিষেক সুপ্রিম কোর্টে এই বিষয়টি নিয়ে আবেদন করায়, তাঁকে সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদের উপর সাময়িক স্থগিতাদেশ দেয় শীর্ষ আদালত ৷ এরপর এই মামলার সূত্র ধরেই কুন্তল ঘোষের চিঠি সংক্রান্ত দুটি মামলা বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছ থেকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত ৷ মামলা দুটি যায় বিচারপতি অমৃতা সিনহার বেঞ্চে ৷ এর মাঝে অভিষেককে দেওয়া সুপ্রিম কোর্টের রক্ষাকবচের মেয়াদও শেষ হয়ে যায় ৷ অভিষেকের তরফে অমৃতা সিনহার বেঞ্চে আবেদন জানানো হয় সিবিআই যাতে তাঁকে এখনই জিজ্ঞাসাবাদ না করে সেই বিষয়ে নির্দেশ দেওয়ার ৷ কিন্তু বিচারপতি সিনহা সেই আবেদন খারিজ করে উলটে বৃহস্পতিবার 25 লক্ষ টাকা করে জরিমানা করেন কুন্তল ঘোষ ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ৷ এরপর হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েও লাভ হয়নি তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের ৷ শনিবার তিনি সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানান ৷
আরও পড়ুন: শুভেন্দুকে জেরা নয় কেন ? নিজাম প্যালেসে দাঁড়িয়েই প্রশ্ন 'রয়্যাল বেঙ্গলের'
এসবের মধ্যেই শুক্রবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে সমন পাঠায় সিবিআই ৷ শনিবার তাঁকে নিজাম প্যালেসে ডাকা হয় ৷ সেই মতো বাঁকুড়ায় নবজোয়ার কর্মসূচি স্থগিত রেখে এদিন সিবিআই দফতরে যান অভিষেক ৷ এদিন জিজ্ঞাসাবাদ শেষে অভিষেক ফের অভিযোগ করেন, রাজনৈতিকভাবে লড়তে না-পেরে তাঁর বিরুদ্ধে ইডি, সিবিআইকে কাজে লাগাচ্ছে বিজেপি ৷