কলকাতা, 3 মে : আত্মীয়, বন্ধু এবং সহকর্মীদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করেছেন এক চিকিৎসক । সেই টাকা দিয়ে চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য সুরক্ষার ব্যবস্থা করেছেন । হাসপাতালে রোগীর পরিজন এবং বস্তিবাসীদের জন্য রান্না করা খাবারের ব্যবস্থাও করেছেন । এবার, একই ভাবে অর্থ সংগ্রহ করে দিন আনা দিন খাওয়া 200টি পরিবারের জন্য চাল, ডাল, তেল, নুন, মশলা ও সাবান-সহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের ব্যবস্থা করলেন SSKM হাসপাতালের এক চিকিৎসক ।
আমতলার কাছে অবস্থিত সুলতানগঞ্জ গ্রামের কিছু বাসিন্দা এই চিকিৎসকের কাছে কিছু খাদ্যসামগ্রী দেওয়ার জন্য সাহায্য চেয়েছিলেন । এর জন্য তিনি তাঁর আত্মীয়, তাঁর দীর্ঘদিনের কর্মস্থান SSKM হাসপাতালের জেনেরাল সার্জারি বিভাগের ইউনিট 3-এর সহকর্মী, এই ইউনিটের বর্তমান এবং প্রাক্তন স্নাতকোত্তর ট্রেনি চিকিৎসক এবং তাঁর কয়েকজন বন্ধুর কাছে অর্থ সংগ্রহের চেষ্টা করেন । সেই সংগৃহীত টাকা দিয়ে গতকাল ওই গ্রামের 200টি পরিবারকে দেওয়া হয় চাল, ডাল, তেল, আলু, নুন, চিড়ে, হলুদ গুঁড়ো, সোয়াবিন এবং সাবান বিলি করেন । এই 200টি পরিবারকে এভাবে সাহায্যের জন্য স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধানের সহায়তা পাওয়া গিয়েছে বলে জানান SSKM হাসপাতালের এই চিকিৎসক মাখনলাল সাহা ।
তিনি বলেন, "চরম সংকটে থাকা গরিব মানুষের কাছে পৌঁছনোর জন্য এটি আমাদের ক্ষুদ্র এক প্রচেষ্টা । এই দীর্ঘ লকডাউনের কারণে দিনমজুর মানুষ চরম সংকটের মধ্যে পড়েছেন । তাঁদের মুখে কিছুটা হলেও যাতে হাসি ফোটাতে পারে আমাদের সকলের এই সামান্য সহায়তা, তার জন্যই আমাদের এই প্রচেষ্টা ।" তবে, এই প্রথম নয়। এভাবে অর্থ সংগ্রহ করে 16 এপ্রিল MR বাঙুর হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী মিলিয়ে 175জনের জন্য তিনি ফেস প্রোটেকশন শিল্ডের ব্যবস্থা করেন । কোরোনা মোকাবিলায় PPE (পার্সোনাল প্রোটেকটিভ ইকুইপমেন্ট) কিট দেওয়া হচ্ছে । তবে, চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষায় ফেস প্রোটেকশন শিল্ডের-ও প্রয়োজন । সেই জন্যই তিনি এর ব্যবস্থা করেছিলেন বলে জানান ।
অন্য হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য ওই ফেস প্রোটেকশন শিল্ড দেওয়ার ইচ্ছে ছিল তাঁর । তবে, তা আর সম্ভব হয়ে ওঠেনি স্বাস্থ্য দপ্তরের এক নির্দেশে । MR বাঙুর হাসপাতালে ফেস প্রোটেকশন শিল্ড দেওয়ার জন্য বাগবাজারে অবস্থিত এই চিকিৎসকের বেসরকারি কর্মস্থানের কর্তৃপক্ষও অর্থ দান করেছিল বলে জানান তিনি ।
MR বাঙুর হাসপাতালের রোগীর পরিজন এবং কালীঘাট অঞ্চলের বস্তিবাসী মিলিয়ে 500জনের জন্য 23 এপ্রিল রান্না করা খাবারের ব্যবস্থাও করেছিলেন এই চিকিৎসক । রান্না করা খাবার এভাবে পরিবেশনের জন্য এই চিকিৎসক, তাঁর স্ত্রী এবং দুই বন্ধু চিকিৎসকের সহায়তা পেয়েছিলেন বলে তিনি জানান ।