কলকাতা, 25 জুন : মডেল উষসী সেনগুপ্তর হেনস্থার পরেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল লালবাজার । রাতের কলকাতায় বেপরোয়া বাইকের বিরুদ্ধে চালানো হবে অভিযান । এতে একদিকে যেমন কমবে দুর্ঘটনা, অন্যদিকে কমবে অপরাধ প্রবণতা । তারপর থেকে টানা চলছে রাতের কলকাতায় চেকিং। আর এতেই এল সাফল্য। সপ্তাহান্তে শুধু শনি-রবিবারেই তিন হাজারের বেশি মামলা করা হয় বেপরোয়া বাইকারদের বিরুদ্ধে । আগামী দিনেও এই অভিযান চলবে বলে জানিয়ে দিল লালবাজার।
প্রাক্তন মিস ইউনিভার্স ইন্ডিয়াকে বাইক গ্যাং হেনস্থা করার পর নড়েচড়ে বসে লালবাজার। কলকাতা পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা প্রতিটি থানায় এবং DC-দের নির্দেশ দেন শহরের রাস্তায় বেপরোয়া বাইকবাহিনীকে পাকড়াও করতে। এরপরই পথে নামে পুলিশ । ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রের খবর, শনিবার রাত 9 টা থেকে 1 টা পর্যন্ত শহরে মোট 48টি চেকিং পয়েন্ট তৈরি করে কলকাতা পুলিশ। এতেই সাফল্য আসে। প্রায় 2 হাজার 700 বাইকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় । এর মধ্যে হেলমেট ছাড়া বাইক চালানোর জন্য 1 হাজার 278টি মামলা করা হয়। তিনজনে মিলে বাইক চালানো ও ট্র্যাফিক আইন ভাঙার অভিযোগে 604টি বাইকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে । মদ খেয়ে গাড়ি চালানোর অভিযোগে 121 জনকে আটক করা হয় । রবিবার রাতে 800টি মামলা করা হয়েছে। 25টি বাইক বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ট্র্যাফিক আইনের বিভিন্ন ধারায় মামলা করা হয়েছে পুলিশের তরফ থেকে।
লালবাজার সূত্রে খবর, এই অভিযান চলাকালীনই রবিবার বিকেলে বেনিয়াপুকুর এলাকায় মার খেতে হয় এক ট্র্যাফিক সার্জেন্টকে। প্রচণ্ড গতিতে চলতে থাকা একটি বাইককে ধরতে গিয়ে মার খেতে হয় ট্র্যাফিক সার্জেন্ট ইয়ার মহম্মদ বিশ্বাসকে। তিনি পার্ক সার্কাস ট্র্যাফিক গার্ডের সার্জেন্ট। পুলিশ সূত্রে খবর, সেখানকার দুই বাসিন্দাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ধৃতরা হল সেবেষ্টিয়ান জন গোমস ও কার্তিক প্রসাদ রায়।
রবিবার রাতে আরও একটি ঘটনা ঘটে গার্ডেনরিচ ফ্লাইওভারে। তিনজন যুবক মাথায় হেলমেট ছাড়া যাওয়ার সময় পুলিশ তাদের আটকাতে যায় । তখন জোরে বাইক নিয়ে বেরোতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রায় ৩০ ফুট উপর থেকে নিচে পড়ে যায়। ঘটনাটি গার্ডেনরিচ পাহাড়পুর কুলিং স্টেশনের কাছে। ঘটনায় গুরুতর আহত অবস্থায় তিনজনকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সোমবার সকালে একজন মারা যায়। তিনজনের মাথায় হেলমেট ছিল না বলেই পুলিশ সূত্রে খবর।
লালবাজার সূত্রের খবর, শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থান যাদবপুর, তিলজলা, তপসিয়া সহ শহরের একাধিক জায়গায় মাঝেমধ্যেই সারপ্রাইজ় চেকিং করায় সাফল্য পাওয়া গেছে। এইসব এলাকায় আইন ভাঙার বেশি প্রবণতা রয়েছে কিশোর ও যুবকদের । কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, এবার থেকে এই ভাবে অভিযান চালানো হবে। কড়া হাতে বাইকবাহিনীর দাপট কমানোর জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে।