কলকাতা, 21 মে: ফের দুটি কামান উদ্ধার হয়েছে শহর কলকাতার দুই এলাকা থেকে। একটি বিডন রোড ক্রসিংয়ে কলকাতা জিপিও-র সামনে থেকে । দ্বিতীয়টি নীলমণি মিত্র লেন এলাকা থেকে । উদ্ধার হওয়া কামান দুটি নবাব সিরাজদ্দৌলার আমলের বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে । সিইএসসি-র সহযোগিতায় অ্যাডমিনিস্ট্রেট জেনারেল অ্যান্ড অফিসিয়াল ট্রাস্টি বোর্ড অব ওয়েস্ট বেঙ্গলের তরফে শনিবার সকাল ও দুপুরে কামান দুটি উদ্ধার করা হয়েছে । কামান দুটির উচ্চতা 6.8 ফুট । জানা গিয়েছে, এর গোলাবারুদ বর্ষণের ক্ষমতা চার পাউন্ড ।
এর আগে দমদমের পর ফেয়ারলি প্লেস সংলগ্ন স্ট্যান্ড রোড থেকে একটি কামান উদ্ধার করা হয়েছিল । সেদিনের মত এদিনও মাটি খোঁড়াখুঁড়ির কাজের নজরদারিতে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের অ্যাডমিনিস্ট্রেটর জেনারেল অ্যান্ড অফিশিয়াল ট্রাস্টি প্রধান বিপ্লব রায় ও পুরনো আগ্নেয়াস্ত্র বিশেষজ্ঞ অমিতাভ কারকুন ও কলকাতা পুলিশের একাধিক পদস্থ কর্তা ।
অ্যাডমিনিস্ট্রেট জেনারেল অ্যান্ড অফিসিয়াল ট্রাস্টি বোর্ড অব ওয়েস্ট বেঙ্গলের তরফে বিপ্লব রায় বলেন, "প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে কামান দুটি নবাব সিরাজউদ্দৌলার আমলের । কামানটি অযত্নে পড়েছিল । পথচলতি মানুষ সিগারেট খেয়ে সিগারেটের শেষ অংশ কামানের মুখে ফেলে যেত । ছাইদানি হিসেবে ব্যবহার করত । এই প্রাচীন কামানের পিছনে আছে ব্ল্যাকহোল ক্যালকাটা । 1756 সালে নবাব সিরাজদ্দৌলা যখন আক্রমণ করেছিল তখন পরাজিত ব্রিটিশ সেনাদের এই ব্ল্যাক হোলে বন্দি করা হয়েছিল । 14 ফুট বাই 14 ফুটের ঘরটিতে প্রায় দেড়শ জন পরাজিত সেনাকে বন্দি করা রাখা হত । তাদের মধ্যে 126 জন মারা যান । সেই ব্ল্যাকহোলের সামনে কামানটি পোঁতা ছিল । সেটাকে অবশেষে উদ্ধার করে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে ।"
আরও পড়ুন: দমদমের পর স্ট্যান্ড রোডেও মাটি থেকে তোলা হচ্ছে ব্রিটিশ আমলের কামান
তিনি আরও জানান, ভারতীয় সংস্কৃতিকে তরুণ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে আন্তর্জাতিক মানের মিউজিয়াম তৈরি হবে কলকাতায় । মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মেয়র ফিরহাদ হাকিম এবং আইনমন্ত্রী মলয় ঘটকের সঙ্গে ইতিমধ্যে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে । মধ্যযুগ থেকে শুরু করে ভারতীয় ইতিহাস ও কলকাতার প্রাচীন সভ্যতার ওপর এ পর্যন্ত যা ঐতিহাসিক নিদর্শন উদ্ধার করা হয়েছে তা ওই মিউজিয়ামে রাখা হবে । এই ইতিহাসধর্মী সামগ্রীর উপর নতুন প্রজন্মের জ্ঞানের প্রসার ঘটার পাশাপাশি গবেষকরা ও এ সমস্ত বিষয় নিয়ে চর্চা করতে পারবেন ।"