ETV Bharat / state

কালিম্পংয়ে টানেল নির্মাণ চলাকালীন ধসে মৃত্যু, রিপোর্ট তলব রেলের - ইরকনের প্রকল্প আধিকারিক মহিন্দর সিং

সেবক-রংপো রেলপথের ভালুখোলায় টানেলের ভিতরে ধস নেমে দুজন শ্রমিকের মৃত্যুর পাশাপাশি পাঁচজন আহত হয়েছেন ৷ রেল লাইন তৈরির বরাত প্রাপ্ত সংস্থা ইরকনের কাছে দুর্ঘটনার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট চেয়েছে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল কর্তৃপক্ষ। হিমালয়ের শিলাস্তর দৃঢ় না হওয়ায় বৃষ্টি হলেই থাকবে ধসের সম্ভাবনা । বর্ষার সময় কালিম্পংয়ে টানেল নির্মাণের কাজ থেকে বিরত থাকার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের ।

indian Railway summons report on Kalimpong tunnel accident
সেবক-রংপো রেলপথের ভালুখোলায় টানেল নির্মাণ
author img

By

Published : Jun 19, 2021, 1:54 AM IST

শিলিগুড়ি, 19 জুন : হিমালয় নবীন ভঙ্গিল পর্বত ৷ এর গঠন এখনও স্থিতিশীল এবং দৃঢ় না হওয়ার কারণে অল্প বৃষ্টিতে ধসের প্রবণতা রয়েছে । ফলে বর্ষার সময় টানেলের কাজ থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা । এদিকে সেবক-রংপো রেলপথের ভালুখোলায় টানেলের ভিতরে ধস পড়ে দুজন শ্রমিকের মৃত্যুর পাশাপাশি পাঁচজন আহত হয়েছেন ৷ রেল লাইন তৈরির বরাত প্রাপ্ত সংস্থা ইরকনের কাছে সেই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট চেয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ ।

উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের প্রধান তথা জিওলজি গবেষক অধ্যাপক রঞ্জন রায় বলেন,"ইন্দো-এশিয়াটিক প্লেটের উপর হিমালয় এবং হিমালয় শিবালিক সাব রিজিয়ন থেকে থেকে পরিবর্তিত হচ্ছে । তার সঙ্গে গঠন প্রক্রিয়া চলছে । শিলাস্তর নতুন হওয়ার ফলে যতটা দৃঢ় হওয়ার কথা ছিল , হিমালয় এখনও পর্যন্ত সেরকম দৃঢ় এবং স্থিতিশীল অবস্থায় পৌঁছয়নি । যার ফলে টানা বৃষ্টিতে একাধিক জায়গায় ধস নামছে । কালিম্পং জুড়ে গত তিনদিন ধরে টানা বৃষ্টিপাত হয়েছে । যার ফলে নবীন ওই পাহাড়ে ধসের একটা বড় সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছিল । নির্মাণকারী সংস্থার উচিত বর্ষার সময় ওই এলাকায় কাজ করা এখন বন্ধ রাখা । তাতে হয়তো এই ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো যাবে ।"

উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক শুভানন চন্দ-এর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,"ইতিমধ্যে ওই ঘটনা কীভাবে ঘটল তার একটি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছে ।"

কালিম্পংয়ে টানেল নির্মাণ কাজ বিরত রাখার পরামর্শ বিশেষজ্ঞের

এ বিষয়ে ইরকন সংস্থার প্রকল্প আধিকারিক মহিন্দর সিং জানান, ভবিষ্যতে সেবক-রংপো রেলপথ নির্মাণে যাতে আর কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে সেদিকে বিশেষ নজর দেবেন তাঁরা ৷ পাশাপাশি ইঞ্জিনিয়ারসহ আরও সেফটি অফিসার নিয়োগ করা হবে । তবে শ্রমিকদের পর্যাপ্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা ছিল ৷ তিনি বলেন,"যেখানে পাহাড় শক্ত সেখানে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে টানেল তৈরি করা হয় । আর যেখানে মাটির পরিমাণ বেশি থাকে সেখানে যন্ত্র দিয়ে মাটি কেটে বের করা হয় । উপর থেকে যাতে কোনওভাবে মাটি বা পাথরের চাঁই না ভেঙে পড়ে সেজন্য ভিতর থেকে স্টিলের একটি কৃত্রিম দেওয়াল তৈরি করা হয় । এইক্ষেত্রেও তাই করা হয়েছিল । 10 নম্বর টানেলের কাজ প্রায় শেষ হয়ে এসেছিল । টানেল দীর্ঘ করতে পরবর্তী বিস্ফোরণের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল । কিন্তু আচমকাই উপর থেকে পাথর ভেঙে পড়ে শ্রমিকদের উপর । যার ফলে ওই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে ।"

কালিম্পংয়ে টানেল নির্মাণ চলাকালীন ধস নেমে মৃত্যু

তিনি আরও জানান, রেলপথ নির্মাণ সম্পূর্ণ হলে ট্রেন চলাচলের ফলে যে কম্পনের সৃষ্টি হবে তার ফলে যাতে ধস না নামে সেজন্য টানেলের ভিতর অন্তত তিনটে প্রতিরোধক দেওয়াল তৈরি করা হয়েছে । পাশাপাশি কম্পন কমানো বা বন্ধ করার জন্য রেল লাইনের নীচেও বিশেষ বাফার ব্যবহার করা হয়েছে । সংস্থার তরফে মৃত এবং আহতদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে ।

আরও পড়ুন : কালিম্পংয়ে টানেলে ধস, মৃত দুই শ্রমিক

শিলিগুড়ি পৌরনিগমের প্রশাসনিক বোর্ডের চেয়ারম্যান গৌতম দেব বলেন,"খুবই দুঃখজনক ঘটনা । কী করে এই দুর্ঘটনা ঘটল তা খতিয়ে দেখা উচিত । পাশাপাশি যারা আহত হয়েছেন তাদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি ।" কালিম্পং জেলা পুলিশের সুপার হরেকৃষ্ণ পাই বলেন,"রাতে দুর্ঘটনার খবর পাওয়া মাত্রই উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের এবং মৃতদেহ উদ্ধার করে । "

শিলিগুড়ি, 19 জুন : হিমালয় নবীন ভঙ্গিল পর্বত ৷ এর গঠন এখনও স্থিতিশীল এবং দৃঢ় না হওয়ার কারণে অল্প বৃষ্টিতে ধসের প্রবণতা রয়েছে । ফলে বর্ষার সময় টানেলের কাজ থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা । এদিকে সেবক-রংপো রেলপথের ভালুখোলায় টানেলের ভিতরে ধস পড়ে দুজন শ্রমিকের মৃত্যুর পাশাপাশি পাঁচজন আহত হয়েছেন ৷ রেল লাইন তৈরির বরাত প্রাপ্ত সংস্থা ইরকনের কাছে সেই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট চেয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ ।

উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের প্রধান তথা জিওলজি গবেষক অধ্যাপক রঞ্জন রায় বলেন,"ইন্দো-এশিয়াটিক প্লেটের উপর হিমালয় এবং হিমালয় শিবালিক সাব রিজিয়ন থেকে থেকে পরিবর্তিত হচ্ছে । তার সঙ্গে গঠন প্রক্রিয়া চলছে । শিলাস্তর নতুন হওয়ার ফলে যতটা দৃঢ় হওয়ার কথা ছিল , হিমালয় এখনও পর্যন্ত সেরকম দৃঢ় এবং স্থিতিশীল অবস্থায় পৌঁছয়নি । যার ফলে টানা বৃষ্টিতে একাধিক জায়গায় ধস নামছে । কালিম্পং জুড়ে গত তিনদিন ধরে টানা বৃষ্টিপাত হয়েছে । যার ফলে নবীন ওই পাহাড়ে ধসের একটা বড় সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছিল । নির্মাণকারী সংস্থার উচিত বর্ষার সময় ওই এলাকায় কাজ করা এখন বন্ধ রাখা । তাতে হয়তো এই ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো যাবে ।"

উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক শুভানন চন্দ-এর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,"ইতিমধ্যে ওই ঘটনা কীভাবে ঘটল তার একটি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছে ।"

কালিম্পংয়ে টানেল নির্মাণ কাজ বিরত রাখার পরামর্শ বিশেষজ্ঞের

এ বিষয়ে ইরকন সংস্থার প্রকল্প আধিকারিক মহিন্দর সিং জানান, ভবিষ্যতে সেবক-রংপো রেলপথ নির্মাণে যাতে আর কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে সেদিকে বিশেষ নজর দেবেন তাঁরা ৷ পাশাপাশি ইঞ্জিনিয়ারসহ আরও সেফটি অফিসার নিয়োগ করা হবে । তবে শ্রমিকদের পর্যাপ্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা ছিল ৷ তিনি বলেন,"যেখানে পাহাড় শক্ত সেখানে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে টানেল তৈরি করা হয় । আর যেখানে মাটির পরিমাণ বেশি থাকে সেখানে যন্ত্র দিয়ে মাটি কেটে বের করা হয় । উপর থেকে যাতে কোনওভাবে মাটি বা পাথরের চাঁই না ভেঙে পড়ে সেজন্য ভিতর থেকে স্টিলের একটি কৃত্রিম দেওয়াল তৈরি করা হয় । এইক্ষেত্রেও তাই করা হয়েছিল । 10 নম্বর টানেলের কাজ প্রায় শেষ হয়ে এসেছিল । টানেল দীর্ঘ করতে পরবর্তী বিস্ফোরণের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল । কিন্তু আচমকাই উপর থেকে পাথর ভেঙে পড়ে শ্রমিকদের উপর । যার ফলে ওই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে ।"

কালিম্পংয়ে টানেল নির্মাণ চলাকালীন ধস নেমে মৃত্যু

তিনি আরও জানান, রেলপথ নির্মাণ সম্পূর্ণ হলে ট্রেন চলাচলের ফলে যে কম্পনের সৃষ্টি হবে তার ফলে যাতে ধস না নামে সেজন্য টানেলের ভিতর অন্তত তিনটে প্রতিরোধক দেওয়াল তৈরি করা হয়েছে । পাশাপাশি কম্পন কমানো বা বন্ধ করার জন্য রেল লাইনের নীচেও বিশেষ বাফার ব্যবহার করা হয়েছে । সংস্থার তরফে মৃত এবং আহতদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে ।

আরও পড়ুন : কালিম্পংয়ে টানেলে ধস, মৃত দুই শ্রমিক

শিলিগুড়ি পৌরনিগমের প্রশাসনিক বোর্ডের চেয়ারম্যান গৌতম দেব বলেন,"খুবই দুঃখজনক ঘটনা । কী করে এই দুর্ঘটনা ঘটল তা খতিয়ে দেখা উচিত । পাশাপাশি যারা আহত হয়েছেন তাদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি ।" কালিম্পং জেলা পুলিশের সুপার হরেকৃষ্ণ পাই বলেন,"রাতে দুর্ঘটনার খবর পাওয়া মাত্রই উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের এবং মৃতদেহ উদ্ধার করে । "

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.