ঝাড়গ্রাম, 7 জানুয়ারি: শনিবার নেতাই দিবসে শহিদ তর্পণে এলেন না রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) । তবে এদিন শহিদ তর্পণ (Netai Sahid Diwas) করলেন তৃণমূলের চার মন্ত্রী । প্রতি বছর 7 জানুয়ারি লালগড়ের নেতাই গ্রামে নেতাই শহিদ স্মৃতিরক্ষা কমিটির পক্ষ থেকে শহিদ বেদীতে তর্পণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় । শনিবার এই শহিদ বেদীতে মাল্যদান করেন রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশীষ চক্রবর্তী,স্ব-নিযুক্তি ও স্বনির্ভর গোষ্ঠী এবং বন দফতরের প্রতিমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা, জলসম্পদ উন্নয়ন এবং পরিবেশ মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া ও মন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতো ।
নেতাই শহিদ দিবসের মঞ্চে ঝাড়গ্রাম ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার তৃণমূলের একাধিক নেতৃত্ব উপস্থিত ছিলেন এদিন । এদিন শহিদ বেদীতে তর্পণের পাশাপাশি শহিদ পরিবারগুলির হাতে শীতবস্ত্র তুলে দেন রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী । পরিবহণ মন্ত্রী চলে যাওয়ার পরেই দুপুর একটার সময় নেতাই গ্রামে পৌঁছান মানস ভুঁইয়া । তিনি শহিদ পরিবারগুলির হাতে উপহার তুলে দেন ।
উল্লেখ্য, 2011 সালের 7 জানুয়ারি লালগড়ের নেতাই গ্রামে গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেছিল । সিপিএম কর্মী রথীন দণ্ডপাটের বাড়ি থেকে গ্রামবাসীদের লক্ষ্য করে সেই গুলি চালানো হয়েছিল বলে অভিযোগ । এই গুলিচালনার ঘটনায় মৃত্যু হয় 4 মহিলা-সহ নয় গ্রামবাসীর । এছাড়াও জখম হন 28 জন । সেই ঘটনায় অভিযোগের আঙুল উঠেছিল সিপিএমের বিরুদ্ধে । প্রথমে মামলার তদন্ত করে সিআইডি । পরে হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্তভার যায় সিবিআইয়ের হাতে ।
আরও পড়ুন: 'রাজ্যের প্রশ্রয়েই এমন ঘটনা !' জলপাইগুড়ি কাণ্ডে তোপ সাংসদের
2011 সালের এই ঘটনার পর থেকে প্রতিবছর নেতাই শহিদ স্মৃতি রক্ষা কমিটির উদ্যোগে শহিদ দিবস পালিত হয়ে আসছে নেতাই গ্রামে । প্রতিবছর এখানে শহিদ তর্পণ করতে আসতেন শুভেন্দু অধিকারী ৷ কিন্তু তিনি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে সব বদলে যায় । শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর প্রথম বছর অর্থাৎ 2021 সালের 7 জানুয়ারি তিনি এখানে শহিদ তর্পণে এসেছিলেন ৷ কিন্তু গত বছর এই দিনে শুভেন্দু নেতাই গ্রামে আসতে পারেননি তিনি । তাঁকে ঝিটকার জঙ্গলের কাছে বিশাল ব্যারিকেড করে আটকে দেয় পুলিশ । তারপরে শুভেন্দু সেখান থেকে পায়ে হেঁটে ফিরে যান ভীমপুর গ্রামে । সেখানে শহিদ বেদী তৈরি করে মৃতদের স্মৃতিতে তর্পণ করেন তিনি । কিন্তু এই বছর শহিদ তর্পণে এলেনই না রাজ্যের বিরোধী দলনেতা (Suvendu Adhikari absent from Netai Sahid Diwas programmme) ।
এদিন নেতাইয়ে পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশীষ চক্রবর্তী বলেন,"সিপিএম-এর বিরোধিতা করলে মানুষকে এক ঘরে করে দেওয়া হতো । সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হতো সাধারণ মানুষকে । সিপিএম নেতা-কর্মীরা তাদের গায়ের জোর খাটিয়ে রাজত্ব চালিয়ে যেত । সিপিএম রক্তাক্ত করে দিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের মাটি ৷ তাদেরকে এখান থেকে উৎখাত করে দিয়েছে নেতাইয়ের এর মানুষজন । বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদাররা মানুষের কথা বলে না সারাদিন ধরে মিথ্যা কথা বলে ও কুৎসা করে বেড়াচ্ছে "। মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া এদিনের অনুষ্ঠানে এসে জানান, ঝাড়গ্রাম জেলার কৃষকদের জলের অভাব হবে না ৷ এই বছরই ঝাড়গ্রাম জেলাতে 50টি চেক ড্যাম তৈরি করা হবে ।