ঝাড়গ্রাম, 3 মে: জন্মান্ধ তবে টেট উত্তীর্ণ হয়ে দৃষ্টান্ত তৈরি করেছেন ৷ কিন্তু ছিল না আধার কার্ড ৷ আধার না-থাকায় টেট ইন্টারভিউয়ে বসা নিয়ে সংশয় ছিল সুখেন মাহাতোর ৷ স্বভাবতই ভীষণ ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। অবশেষে ঝাড়গ্রাম জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে আধার কার্ড তৈরি হল বছর ঊনত্রিশের বিশেষভাবে সক্ষম সুখেন মাহাতোর। বাড়ি ঝাড়গ্রাম জেলা লালগড় থানার অন্তর্গত নেতাই এলাকার জমাশোল গ্রামে ।
সুখেন সরকারি শালবনী মহাবিদ্যালয়ের সমাজবিদ্যার তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। সুখেনের বাবা স্বপন মাহাতো দিনমজুরের কাজ করে দিন গুজরান করেন। ছেলে মেধাবী, তাই জন্মান্ধ সত্ত্বেও সুখেনের পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছেন তিনি। কিন্তু নানা কারণে আধার কার্ড তৈরি না-হওয়ায় তাঁকে সরকারি অনেক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে হয়েছে । সুখেন জানান, রেলের বিভিন্ন পরীক্ষায় আধার কার্ড না-থাকার কারণে তিনি বসতে পারেননি।
2022 সালে প্রাথমিকে টেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন সুখেন। এবার সুখেনের ইন্টারভিউয়ের পালা। তার আগে আধার না-থাকায় তিনি বিপাকে পড়েছিলেন। ঝাড়গ্রাম জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের প্যরালিগ্যাল ভলান্টিয়ার অনুপম সিংহ বিনপুর এক নম্বর ব্লকের বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ছেলেমেয়ে ও ব্যক্তিদের নিয়ে একটি আইনি সচেতনতা শিবির করেন। সেই শিবিরে উপস্থিত ছিলেন সুখেন। তাঁর সমস্যার কথা তিনি জানান প্যারালিগ্যাল ভলান্টিয়ার অনুপম সিংহকে। এরপরেই অনুপমবাবু বিষয়টি জানান ঝাড়গ্রাম জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের সচিব তথা বিচারক সুনীলকুমার শর্মাকে ।
বিচারকের নির্দেশে ঝাড়গ্রাম হেড পোস্ট অফিসে সুখেনের আধার কার্ড তৈরির যাবতীয় কাজ সম্পূর্ণ করা হয় 14 মার্চ। মঙ্গলবার সুখেনের হাতে ঝাড়গ্রাম জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে আধার কার্ড তুলে দেওয়া হয় । জন্মাদ্ধ সুখেন আধার কার্ড হাতে পেয়ে খুবই খুশি। সুখেন বলেন, "আমি জন্মান্ধ ৷ চোখে দেখতে পাই না । বিভিন্ন কারণবশত আমার আধার কার্ড তৈরি হয়নি । যার জন্য রেলের গ্রুপ-ডির পরীক্ষাগুলিতেও আমি বসতে পারিনি । 2022 সালের টেট পরীক্ষায় আমি উত্তীর্ণ হই । কয়েকদিনের মধ্যে ইন্টারভিউ রয়েছে । আমার আধার কার্ড না-থাকায় আমি চিন্তিত ছিলাম। আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আমি আধার কার্ড পেয়েছি বিনামূল্যে। আমি তাদের কাছে চিরকৃতজ্ঞ থাকব ৷"
আরও পড়ুন: বিশেষভাবে সক্ষম মহিলাকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরানোর চেষ্টা বাসন্তীর স্কুল কর্তৃপক্ষের