ঝাড়গ্রাম, 22 এপ্রিল: গৃহবধূকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগে প্রেমিককে গ্রেফতার করল পুলিশ। ঘটনাটি ঝাড়গ্রাম জেলার সাঁকরাইল থানার লাউদহ গ্রামের। ধৃত যুবককে শনিবার ঝাড়গ্রাম আদালতে তোলা হলে বিচারক 4 দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই যুবকের নাম রঞ্জিত মান্ডি। মৃতার বাড়ির উলটোদিকেই সে থাকে বলে জানা গিয়েছে ৷ গতকাল রাতে গ্রামের বাড়ি থেকেই ওই যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, গৃহবধূর পরিবারের সদস্যদের ওই যুবকের বাড়িতে যাতায়াত ছিল। কয়েকমাস আগে থেকেই ওই যুবকের সঙ্গে গৃহবধূর প্রণয়ঘটিত সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ফোনে কথোপকথনের মাধ্যমে দু'জনের সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হতে থাকে। জানা গিয়েছে, কয়েকদিন আগে নয়াগ্রামে এক আত্মীয়ের মৃত্যু সংবাদ পেয়ে সেখানে শাশুড়ি ও দেওরের সঙ্গে গিয়েছিলেন পূর্ণিমা। যদিও পূর্ণিমার স্বামী প্রসেনজিৎ মান্ডি ধানকাটার কাজে পূর্ব মেদিনীপুরের বালিঘাই এলাকায় গিয়েছিলেন।
স্কুল পড়ুয়া ছোট মেয়ের জন্য 17 এপ্রিল অর্থাৎ গত সোমবার পূর্ণিমা লাউদহ গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসেন। পরদিন অর্থাৎ, 18 এপ্রিল সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ ছাগল চরাতে যান তিনি। পরে খালের ধারে তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এরপর দেহ উদ্ধার করে স্থানীয় ভাঙাগড় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মৃত ওই গৃহবধূর পেটে একাধিক আঘাতের চিহ্ন ছিল বলে জানা গিয়েছে। তদন্তে নেমে পুলিশ ঘটনা সম্পর্কে নিশ্চিত হয় ৷ পুলিশের দাবি, দিনকয়েক ধরে ওই গৃহবধূ প্রেমিকের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে বেরিয়ে আসতে চেয়েছিল। কিন্তু অভিযুক্ত যুবক চেয়েছিল ওই গৃহবধূর সঙ্গে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে।
আরও পড়ুন: খুনির ফাঁসি চাইলেন কালিয়াগঞ্জের মৃত যুবতীর মা, গ্রেফতার দুই
খুনের আগেও পূর্ণিমার সঙ্গে ফোনে রঞ্জিত যোগাযোগ করে বলে জানিয়েছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, ঘটনার দিন ছাগল চড়ানোর মাঠে বেশ কিছুক্ষণ তাঁদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এরপর আচমকা পূর্ণিমার গলা টিপে ধরে রঞ্জিত। মাঠের পাশে অজ্ঞান হয়ে যান গৃহবধূ। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে পূর্ণিমার পেটে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়। শুক্রবার অর্থাৎ 21 এপ্রিল সকালে মৃতার স্বামী সাঁকরাইল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তদন্তে নেমে 24 ঘণ্টার মধ্যে ওই যুবককে গ্রেফতার করে সাঁকরাইল থানার পুলিশ । জেলার ডেপুটি পুলিশ সুপার সব্যসাচী ঘোষ বলেন, "ফোনের সূত্র ধরে ওই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রথমে ওই যুবক গোটা বিষয়টি অস্বীকার করে। পরে টানা জিজ্ঞাসাবাদের পর তিনি ভেঙে পড়ে সম্পূর্ণ বিষয়টি জানায়। তাকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে লাগাতার জেরা করা হবে।"