ঝাড়গ্রাম, 10 জানুয়ারি: আবাস যোজনা নিয়ে ইতিমধ্যেই জায়গায় জায়গায় বিক্ষোভ শুরু হয়েছে (PM Awas Yojana) ৷ কারোর তালিকায় নামে নেই, আবার কারোর অভিযোগ, তালিকায় নাম থাকলেও টাকা মেলেনি ৷ যেমনটা হয়েছে ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়ি ব্লকের শিলদা গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা মণিকাঞ্চন দত্তর ৷ এই ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার সপরিবারে গ্রাম পঞ্চায়েতের অফিসে রান্না করে মধ্যাহ্নভোজ সারলেন তিনি ৷ আবাস যোজনার টাকা না-পেয়ে পঞ্চায়েত অফিসেই 'সংসার' পাতলেন মণিকাঞ্চন দত্ত ৷
জানা গিয়েছে, শিলদা গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা মণিকাঞ্চান দত্ত জানতে পারেন, তাঁর আবাস যোজনায় পাকা বাড়ি হয়েছে (PM Awas Yojana controversy) । বাস্তবে উলটো ৷ খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, তাঁর জন্য বরাদ্দ আবাস যোজনার বাড়িটি তৈরি করেছেন স্থানীয় তৃণমূলের প্রাক্তন বুথ সভাপতি পঞ্চানন দত্ত । অভিযোগ, 2018 সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় পঞ্চানন দত্ত শিলদা এলাকায় তৃণমূলের বুথ সভাপতি ছিলেন । 2017-2018 সালের আবাস যোজনার যে তালিকা তৈরি হয়েছিল সেখানে বুথ সভাপতি নিজের প্রভাব খাটিয়ে মাণিকাঞ্চন দত্তের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট পরিবর্তন করে নিজের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে নিয়ে নেয় বলে অভিযোগ । এই ভাবে আবাস যোজনার পুরো টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তৃণমূলের বুথ সভাপতি । অভিযোগ জানাতে শিলদা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শিপ্রা বেজের দারস্থ হলেও, তিনি কোনও পদক্ষেপ নেননি বলে অভিযোগ বঞ্চিত মণিকাঞ্চানের ৷
আরও পড়ুন: প্রধান-সহ পরিবারে তিন জনের নাম আবাস তালিকায়, সরব বিরোধীরা
পরে আবাস যোজনার টাকা পেতে লোক আদালতের দারস্থ হন তিনি ৷ ঝাড়গ্রাম জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের সচিব তথা বিচারক মণিকাঞ্চন দত্তের পক্ষে রায় দেন ৷ সিদ্ধান্ত হয়, তৃণমূলের প্রাক্তন বুথ সভাপতি পঞ্চানন দত্ত আবাস যোজনার বাড়ির টাকা ফিরিয়ে দেবে মণিকাঞ্চন দত্তকে । সেই টাকা দিয়ে তিনি আবাস যোজনার বাড়ি নির্মাণ করবে । এরপরেই মণিকাঞ্চন দত্তকে শিলদা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পুরনো বাড়ি ভেঙে আবাস যোজনার বাড়ি তৈরি করার জন্য নির্দেশ পাঠায় । সেইমতো মণিকাঞ্চন দত্ত তাঁর পুরনো বাড়ি ভেঙে তৃণমূলের প্রাক্তন বুথ সভাপতির কাছ থেকে 57 হাজার টাকা পেয়ে কিছুটা বাড়ি নির্মাণ করেন (Awas Yojana scheme in Jhargram)। বর্তমানে বাকি টাকা তৃণমূলের প্রাক্তন বুথ সভাপতি দিতে অস্বীকার করেন ।
মণিকাঞ্চন দত্ত বলেন, "আমার নামে আবাস যোজনা বাড়ির টাকা তৃণমূলের প্রাক্তন বুথ সভাপতি পঞ্চানন দত্ত এক্সিকিউটিভ অফিসারের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তাঁর অ্যাকাউন্টে টাকা ট্রান্সফার করেছে। সে এখন বাড়িতে এসি লাগিয়েছে আমার টাকায় । অঞ্চল অফিস থেকে মিটিং করে ঠিক করা হয়েছিল সে আমাকে টাকা ফিরিয়ে দেবে । এখন সে আর টাকা দিতে চাইছে না । ভাঙা ঘরে তো আর বসবাস করা যায় না ৷ তাই বাধ্য হয়ে আমি অঞ্চল অফিসে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছি ।"
শিলদা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শিপ্রা বেজ বলেন, "আমি পঞ্চানন দত্তকে ডেকে পাঠিয়েছি উনি আসলেই বিষয়টি সুরাহা হবে । এর আগে অঞ্চল অফিসে বসে আলোচনার মাধ্যমে লিখিত হয়েছিল আবাস যোজনার বাড়ির টাকা পঞ্চানন দত্ত কিস্তি মারফত মণিকাঞ্চন দত্তকে ফিরিয়ে দেবে । 57 হাজার টাকা পর্যন্ত ফিরিয়ে দিয়েছে ৷ যা দিয়ে মণিকাঞ্চন দত্ত বাড়ির কিছুটা অংশ নির্মাণ করেছে ।"