ETV Bharat / state

WB TET 2022: শাখা-পলা না খোলায় টেট দিতে পারলেন না গৃহবধূ, শোরগোল জলপাইগুড়িতে

শাখা-পলা (Conch Shell and red coral bangles) খুলতে রাজি হননি গৃহবধূ ৷ তাই তাঁর আর টেট-এ (WB TET 2022) বসা হল না ৷ নিয়মের বেড়াজালে তাঁকে পরীক্ষা না দিয়েই বাড়ি ফিরতে হল (Jalpaiguri News)৷

Woman refuses to take off Conch Shell and red coral bangles, misses WB TET in Jalpaiguri
শাখা-পলা না খোলায় টেট দিতে পারলেন না গৃহবধূ
author img

By

Published : Dec 12, 2022, 5:10 PM IST

Updated : Dec 12, 2022, 7:44 PM IST

শাখা-পলা না খোলায় টেট দিতে পারলেন না গৃহবধূ

জলপাইগুড়ি, 12 ডিসেম্বর: শাখা-পলা খুলে (Conch Shell and red coral bangles) টেট-এ বসতে হবে । নিয়মের বেড়াজালে পরীক্ষাই দেওয়া হল না জলপাইগুড়ির গৃহবধূর । শাখা-পলা পরে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয় তাকে ৷ তিনি শাখা-পলা খুলতে রাজি না হওয়ায় টেট না দিয়েই বাড়িতে ফিরতে হয় তাঁকে । জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার জেলায় এমন অনেক ঘটনা প্রকাশ্যে এল । জলপাইগুড়ি দেবনগর সতীশ লাহিড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের ঘটনা ৷ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের নিয়মটা আর একটু শিথিল করা উচিত ছিল দাবি পরীক্ষার্থী মৌমিতা চক্রবর্তীর ৷ এমন ঘটনা শুনে হতবাক জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri News) জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান লৈক্ষ্যমোহন রায় ।

জলপাইগুড়ি সেনাগ্রামের বাসিন্দা মৌমিতা চক্রবর্তী বলেন, "দীর্ঘদিন বাদে এ বারের প্রাথমিকের টেট (WB TET 2022) দিয়ে একটা চাকরি পাব বলে আশা করেছিলাম ৷ অতি উৎসাহ নিয়ে জলপাইগুড়ি দেবনগরের সতীশ লাহিড়ী উচ্চবিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম । পর্ষদের নিয়ম অনুযায়ী, কোনও অলঙ্কার পরে পরীক্ষা দেওয়া যাবে না । তাই বাড়িতেই সমস্ত সোনার গয়না খুলে পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলাম । কিন্তু পরীক্ষা কেন্দ্রের গেটে থাকা পুলিশ কর্মীরা আমার শাখা ও পলা খুলতে বলে । যেহেতু আমার শাখা-পলা সোনা দিয়ে বাঁধানো ছিল । তাই পুলিশ কর্মীরা শাখা পলা খুলে ঢুকতে হবে বলে সাফ জানিয়ে দেন । কিন্তু আমার বিয়ের পর থেকেই আমি এই শখা-পলা পরে আসছি ৷ তাই আমি খুলতে পারব না জানিয়ে দিই । কারণ বিয়ের পর থেকে আমি শাখা-পলা হাত থেকে খুলিনি ৷ এ বারও খুলতে পারব না ৷ তাই পরীক্ষা কেন্দ্রে না ঢুকতে পেরে বাড়ি চলে আসি । কিন্তু একজন বিবাহিত মহিলার জন্য শাখ-পলা কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা সরকারের বোঝা উচিত ছিল । কী কী পরা যাবে সেটা পরিস্কার বলে দেওয়া উচিত ছিল । শাখা-পলাকেও অলংকারের মধ্যে ধরা হবে এটা ভাবতেই পারিনি ।"

অন্যদিকে, জলপাইগুড়ি তরুলপাড়া কাঠের ব্রিজের বাসিন্দা মাম্পি সরকার অভিযোগ করে বলেন, "আমার টেট-এর সিট পরেছিল ধুপগুড়িতে । পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকতে গেলে একটি হাতে লোহা বাঁধানো ছিল । সেটা খুলে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢোকার ছাড়পত্র দেওয়ার কথা বলা হয় । হাত থেকে কোনও ভাবেই খোলা যাচ্ছিল না । এরপর সোনার দোকানে গিয়ে কাটার চেষ্টা করলেও তা কাটা যায়নি । এরপর পরীক্ষাকেন্দ্রের পাশে থাকা একটি সাইকেলের দোকান থেকে এটি কাটা হয় । এরপর আমাকে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হয় ।" মাম্পির দাবি, "সমস্ত নিয়ম ঠিক ছিল পর্ষদের ৷ শুধু বিবাহিত গৃহবধূদের ক্ষেত্রে শাখা, পলা ও লোহা বাঁধানো বিষয়ে নিয়মটা একটু শিথিল করা উচিত ছিল । অযথা পরিক্ষার্থীদের এইগুলি নিয়ে হয়রানি করা হয়েছে ।"

আরও পড়ুন: অকেজো বায়োমেট্রিক পদ্ধতি ! মহিলা পরীক্ষার্থীদের শাখা-পলা খুলে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ বারাসতের পরীক্ষা কেন্দ্রে

এ দিকে, মৌমিতার স্বামী পেশায় শিক্ষক জিৎ বিশ্বাস বলেন, স্ত্রীকে পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার পর দেখলাম, বাঁধানো শাখা-পলাকে অলঙ্কারের মধ্যে ধরা হচ্ছে । এই ধারণা আমার ছিল না । আমি বলেছিলাম শাখা-পলা খুলে পরীক্ষা দাও । কিন্তু স্ত্রী তা খুলতে রাজি হয়নি । আমিও জোর করিনি । আমিও কোনও তর্কবিতর্ক করিনি ৷ কারণ এতদিন পর পরীক্ষা হচ্ছে । নিয়মটা ঠিক কী কী তা সঠিকভাবে বলে দেওয়া উচিত ছিল । শাখা, পলা পরে ঢোকা যাবে না, এতে অবাক হলাম ।"

এ দিকে, আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল বলেন, "শাখা-পলা পরে পরীক্ষার হলে ঢোকা যাবে না এটা কেমন নিয়ম । একজন বিবাহিত মহিলার কাছে শাখা-পলার গুরুত্বটা অনেক । সরকারের উচিত ছিল, কী কী পরে পরীক্ষা কেন্দ্রে যাওয়া যাবে তা স্পষ্ট করা । আমার কাছে এমন প্রচুর অভিযোগ এসেছে যে, শাখা-পলা খুলে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকতে হয়েছে । সরকার কড়াকড়ি করুক । কিন্তু বজ্র আঁটুনি ফক্সা গেরো না হয়ে যায় ।"

জলপাইগুড়ি জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান লৈক্ষ্যমোহন রায় বলেছেন, "শাখা-পলা খুলে টেট দিতে হবে এমন নিয়ম ছিল না । কিন্তু কোনও অলঙ্কার পরে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢোকা যাবে না সেটা নিয়মে বলা ছিল । মৌমিতার ক্ষেত্রে কী হয়েছে সেটা না জেনে মন্তব্য করব না ।"

শাখা-পলা না খোলায় টেট দিতে পারলেন না গৃহবধূ

জলপাইগুড়ি, 12 ডিসেম্বর: শাখা-পলা খুলে (Conch Shell and red coral bangles) টেট-এ বসতে হবে । নিয়মের বেড়াজালে পরীক্ষাই দেওয়া হল না জলপাইগুড়ির গৃহবধূর । শাখা-পলা পরে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয় তাকে ৷ তিনি শাখা-পলা খুলতে রাজি না হওয়ায় টেট না দিয়েই বাড়িতে ফিরতে হয় তাঁকে । জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার জেলায় এমন অনেক ঘটনা প্রকাশ্যে এল । জলপাইগুড়ি দেবনগর সতীশ লাহিড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের ঘটনা ৷ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের নিয়মটা আর একটু শিথিল করা উচিত ছিল দাবি পরীক্ষার্থী মৌমিতা চক্রবর্তীর ৷ এমন ঘটনা শুনে হতবাক জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri News) জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান লৈক্ষ্যমোহন রায় ।

জলপাইগুড়ি সেনাগ্রামের বাসিন্দা মৌমিতা চক্রবর্তী বলেন, "দীর্ঘদিন বাদে এ বারের প্রাথমিকের টেট (WB TET 2022) দিয়ে একটা চাকরি পাব বলে আশা করেছিলাম ৷ অতি উৎসাহ নিয়ে জলপাইগুড়ি দেবনগরের সতীশ লাহিড়ী উচ্চবিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম । পর্ষদের নিয়ম অনুযায়ী, কোনও অলঙ্কার পরে পরীক্ষা দেওয়া যাবে না । তাই বাড়িতেই সমস্ত সোনার গয়না খুলে পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলাম । কিন্তু পরীক্ষা কেন্দ্রের গেটে থাকা পুলিশ কর্মীরা আমার শাখা ও পলা খুলতে বলে । যেহেতু আমার শাখা-পলা সোনা দিয়ে বাঁধানো ছিল । তাই পুলিশ কর্মীরা শাখা পলা খুলে ঢুকতে হবে বলে সাফ জানিয়ে দেন । কিন্তু আমার বিয়ের পর থেকেই আমি এই শখা-পলা পরে আসছি ৷ তাই আমি খুলতে পারব না জানিয়ে দিই । কারণ বিয়ের পর থেকে আমি শাখা-পলা হাত থেকে খুলিনি ৷ এ বারও খুলতে পারব না ৷ তাই পরীক্ষা কেন্দ্রে না ঢুকতে পেরে বাড়ি চলে আসি । কিন্তু একজন বিবাহিত মহিলার জন্য শাখ-পলা কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা সরকারের বোঝা উচিত ছিল । কী কী পরা যাবে সেটা পরিস্কার বলে দেওয়া উচিত ছিল । শাখা-পলাকেও অলংকারের মধ্যে ধরা হবে এটা ভাবতেই পারিনি ।"

অন্যদিকে, জলপাইগুড়ি তরুলপাড়া কাঠের ব্রিজের বাসিন্দা মাম্পি সরকার অভিযোগ করে বলেন, "আমার টেট-এর সিট পরেছিল ধুপগুড়িতে । পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকতে গেলে একটি হাতে লোহা বাঁধানো ছিল । সেটা খুলে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢোকার ছাড়পত্র দেওয়ার কথা বলা হয় । হাত থেকে কোনও ভাবেই খোলা যাচ্ছিল না । এরপর সোনার দোকানে গিয়ে কাটার চেষ্টা করলেও তা কাটা যায়নি । এরপর পরীক্ষাকেন্দ্রের পাশে থাকা একটি সাইকেলের দোকান থেকে এটি কাটা হয় । এরপর আমাকে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হয় ।" মাম্পির দাবি, "সমস্ত নিয়ম ঠিক ছিল পর্ষদের ৷ শুধু বিবাহিত গৃহবধূদের ক্ষেত্রে শাখা, পলা ও লোহা বাঁধানো বিষয়ে নিয়মটা একটু শিথিল করা উচিত ছিল । অযথা পরিক্ষার্থীদের এইগুলি নিয়ে হয়রানি করা হয়েছে ।"

আরও পড়ুন: অকেজো বায়োমেট্রিক পদ্ধতি ! মহিলা পরীক্ষার্থীদের শাখা-পলা খুলে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ বারাসতের পরীক্ষা কেন্দ্রে

এ দিকে, মৌমিতার স্বামী পেশায় শিক্ষক জিৎ বিশ্বাস বলেন, স্ত্রীকে পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার পর দেখলাম, বাঁধানো শাখা-পলাকে অলঙ্কারের মধ্যে ধরা হচ্ছে । এই ধারণা আমার ছিল না । আমি বলেছিলাম শাখা-পলা খুলে পরীক্ষা দাও । কিন্তু স্ত্রী তা খুলতে রাজি হয়নি । আমিও জোর করিনি । আমিও কোনও তর্কবিতর্ক করিনি ৷ কারণ এতদিন পর পরীক্ষা হচ্ছে । নিয়মটা ঠিক কী কী তা সঠিকভাবে বলে দেওয়া উচিত ছিল । শাখা, পলা পরে ঢোকা যাবে না, এতে অবাক হলাম ।"

এ দিকে, আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল বলেন, "শাখা-পলা পরে পরীক্ষার হলে ঢোকা যাবে না এটা কেমন নিয়ম । একজন বিবাহিত মহিলার কাছে শাখা-পলার গুরুত্বটা অনেক । সরকারের উচিত ছিল, কী কী পরে পরীক্ষা কেন্দ্রে যাওয়া যাবে তা স্পষ্ট করা । আমার কাছে এমন প্রচুর অভিযোগ এসেছে যে, শাখা-পলা খুলে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকতে হয়েছে । সরকার কড়াকড়ি করুক । কিন্তু বজ্র আঁটুনি ফক্সা গেরো না হয়ে যায় ।"

জলপাইগুড়ি জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান লৈক্ষ্যমোহন রায় বলেছেন, "শাখা-পলা খুলে টেট দিতে হবে এমন নিয়ম ছিল না । কিন্তু কোনও অলঙ্কার পরে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢোকা যাবে না সেটা নিয়মে বলা ছিল । মৌমিতার ক্ষেত্রে কী হয়েছে সেটা না জেনে মন্তব্য করব না ।"

Last Updated : Dec 12, 2022, 7:44 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.