জলপাইগুড়ি, 15 এপ্রিল: জলপাইগুড়িতে দুই সমাজকর্মীর আত্মহত্যার ঘটনায় মূল অভিযুক্তরা ঘুরে বেড়াচ্ছে । তাঁদের লেখা সুইসাইড নোটে উল্লিখিত অভিযুক্ত ও তার সাগরেদরা মৃতার মেয়ে তানিয়া ভট্টাচার্যকে হুমকি দিচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠল । হোয়াটসঅ্যাপে, ফোনে হুমকি দেওয়া হচ্ছে তানিয়া ভট্টাচার্যকে, ফলে তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
শনিবার, বাধ্য হয়ে জেলা পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হয়েছেন তানিয়া। আত্মহত্যায় প্ররোচনার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত তৃণমূল কংগ্রেসের যুব সভাপতি ও তার সাগরেদদের বিরুদ্ধে জেলা পুলিশ সুপারের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ করেছেন তানিয়া ভট্টাচার্য। এই অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "আমার মা ও বাবার আত্মহত্যার পর বাড়ি থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার হয় । আমার পিসি শিখা চট্টোপাধ্যায় সুইসাইড নোটে অভিযুক্তদের নামে কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু অভিযুক্তরা এখনও ঘুরে বেড়াচ্ছে, পুলিশ তাদের ধরছে না । তাদের মদতপুষ্ট লোকেরাও আমাকে হুমকি দিচ্ছে নানাভাবে । মানসিক চাপ দেওয়া হচ্ছে । অন্যের নম্বর থেকে হোয়াটসঅ্যাপে ফোন করে মূল অভিযুক্ত সৈকত চট্টোপাধ্যায় আমাকে হুমকি দিচ্ছেন ৷"
তানিয়া ভট্টাচার্যের অভিযোগ, এর সঙ্গে কোতয়ালি থানার কিছু পুলিশ অফিসারও জড়িত ৷ তরুণীর আরও অভিযোগ, তাঁর বিরুদ্ধে গোপন জবানবন্দি দিলে বা অভিযোগ দায়ের করলে ফল খারাপ হবে বলে হুমকি দিয়েছেন সৈকত চট্টোপাধ্যায় ৷ তাঁর আরও বক্তব্য, "সুইসাইড নোটে যে দলিলের কথা বলা ছিল সেই দলিলটি 13 তারিখ আমার কাছে একজন দিয়ে যায়। সৈকত চট্টোপাধ্যায় অন্যের হোয়াটসঅ্যাপে ফোন করে জানান দলিলটি আমার কাছে গচ্ছিত রাখতে ।" তানিয়ার অভিযোগ তাঁর বাবা-মা'কে যেভাবে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে দেওয়া হয়েছে, সেভাবে তাঁকেও মেরে ফেলা হতে পারে ৷
এই অভিযোগ প্রসঙ্গে, এদিন তৃণমূল কংগ্রেসের যুব সভাপতি তথা জলপাইগুড়ি পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সৈকত চট্টোপাধ্যায় বলেন,"আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে । আমার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে । আমি কাউকে হুমকি দিইনি। এমনকী তানিয়াকে আমি চিনিও না, তাঁর ফোন নম্বরও আমার কাছে নেই ।"
আরও পড়ুন: স্বামী, স্ত্রী'র অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় চাঞ্চল্য জলপাইগুড়িতে
উল্লেখ্য, গত 1 এপ্রিল জলপাইগুড়ি শহরের পান্ডাপাড়া রোডের বাসিন্দা তথা জলপাইগুড়ি পৌরসভার প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান অপর্ণা ভট্টাচার্য এবং তাঁর স্বামী আইনজীবী সুবোধ ভট্টাচার্যের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে ৷ পরে তাঁদের লেখা একটি সুইসাইড নোটও উদ্ধার হয় ৷ সেই চিঠিতে জেলা যুব তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি তথা পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সৈকত চট্টোপাধ্যায়, কাউন্সিলর সন্দীপ ঘোষ-সহ চার জনের নাম উঠে আসে ৷ অভিযোগ, এই ঘটনার পর মৃত সুবোধবাবুর দিদি তথা ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির বিজেপি বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায় এই চার জনের বিরুদ্ধে কোতয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও পুলিশ এখনও কোনও পদক্ষেপ করেনি ৷