জলপাইগুড়ি, 6 মার্চ: তৃণমূল কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসির (INTTUC) ডাকে সোমবার চার ঘণ্টা অবরোধে নাকাল সাধারণ মানুষ । সাধারণ মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ বলে অবরোধের দায় এড়ালেন জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি মহুয়া গোপ ও শ্রমিক সংগঠনের জেলা সভাপতি রাজেশ লাকড়া । এদিন বিকেল সাড়ে পাঁচটা থেকে অবরোধ শুরু হয় ৷ যা চলে কয়েক ঘণ্টা ধরে ।
অবরোধের কারণ:
জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের (Jalpaiguri Super Speciality Hospital) অস্থায়ী শ্রমিক সংগঠন কার দখলে থাকবে এই নিয়ে বারোপেটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তথা এসসি এসটি ওবিসি সেলের জলপাইগুড়ির প্রাক্তন সভাপতি কৃষ্ণ দাস ও আইএনটিটিইউসির জেলা সভাপতি রাজেশ লাকড়ার গোষ্ঠীর মধ্যে মারপিট বাঁধে হাসপাতাল চত্বরে ৷ ঘটনায় আহত হন দুই পক্ষের বেশ কয়েকজন ৷ অচল হয়ে পড়ে হাসপাতাল ৷
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন ডিএসপি হেড কোয়ার্টার সমীর পাল ও কোতোয়ালি থানার আইসি অর্ঘ্য সরকারের নেতৃত্বে বিরাট পুলিশ বাহিনী ৷ তাঁরা আহতদের উদ্ধার করেন ৷ মোতায়েন করা হয় পুলিশ বাহিনী ৷ এরপরেই কৃষ্ণ দাসের অনুগামীদের বিরুদ্ধে হাসপাতালের কর্তব্যরত অস্থায়ী কর্মীদের মারধরের অভিযোগে এনে আইএনটিটিইউসি কর্মীরা দিনভর বাজার ও শান্তিপাড়া মোড়-সহ শহরের বিভিন্ন জায়গায় অবরোধ করে । যার জেরে বিপাকে পড়ে শহরবাসী থেকে শুরু করে দূরদূরান্ত থেকে আসা মানুষজন । রাত পর্যন্ত চলে অবরোধ । ঘটনার পরই খবর পেয়ে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ছুটে আসেন তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি মহুয়া গোপ ।
সকলের বক্তব্য:
এই বিষয়ে তাঁর বক্তব্য, "এই অবরোধ সাধারণ মানুষের ৷ আমরা তাদের বোঝানোর চেষ্টা করছি । আইএনটিটিইউসির পক্ষ থেকে 21 জনের নামে কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ করা হয়েছে । আহত হয়েছেন 6 জন ।"
আইএনটিটিইউসির জেলা সভাপতির অনুগামী তথা সদর ব্লক সভাপতি পুর্নব্রত মিত্র বলেন,"আজ কৃষ্ণ দাসের নেতৃত্বে বহিরাগতরা কর্মরত অস্থায়ী কর্মীদের মারধর করে চলে গেল । তারা তীর ধনুক নিয়ে এসেছিল । আমাদের পরিবারের কোনও ক্ষতি হলে কৃষ্ণ দাস দায়ী থাকবে ৷"
এদিকে কৃষ্ণ দাসের কথায়, "সারা বাংলা হাসপাতাল রোগী কল্যাণ অস্থায়ী ঠিকা কর্মী ঐক্যমঞ্চ নামে এক সংগঠন দীর্ঘদিন ধরেই সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে আছে । আমি আজ তাদের সঙ্গে কথা বলতে এসেছিলাম । আমাকে দেখে আইএনটিটিইউসির কর্মীরা স্লোগান দিতে থাকে । অকথ্য ভাষায় কথা বললে তখনই স্থানীয়রা তাদের ধরে ফেলে । কে কাকে মেরেছে আমার জানা নেই । যিনি এখানকার নেতা তিনি টাউন ব্লকের আইএনটিটিইউসির সভাপতি ৷ তিনি পঞ্চায়েত এলাকায় এসে ঝামেলা করছেন । আমরাও তৃণমূল তারাও তৃণমূল । এগুলো কেন হবে । এখানে অঞ্চল সভাপতিও আমার সঙ্গে ছিল ।
এদিকে জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি মহুয়া গোপ বলেন,"সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে মারপিট হচ্ছে শুনে এলাম ।যারা সারা বাংলা হাসপাতাল রোগী কল্যাণ অস্থায়ী ঠিকাকর্মী ঐক্যমঞ্চ নামে এক সংগঠন করেন সেটা তৃণমূল কংগ্রেসের সংগঠন নয় । কৃষ্ণ দাস এই সংগঠন কোনভাবে করেন আমি জানি না । আমি বলেছি আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মেটাতে ।
এদিকে জলপাইগুড়ির ডিএসপি হেডকোয়ার্টার সমীর পাল বলেন দুইপক্ষের মধ্যে মারপিট হয়েছিল । এখন পরিস্থিতি শান্ত হয়েছে । পুলিশ পিকেট রয়েছে ।
আরও পড়ুন : স্বাস্থ্য দফতরের জমি দখলের অভিযোগ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের কর্মীর বিরুদ্ধে