জলপাইগুড়ি, 6 জানুয়ারি: চিকিৎসার গাফিলতিতে সদ্যোজাতর মৃত্যুর অভিযোগকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়াল জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের মাদার এন্ড চাইল্ড হাবে । শনিবার শিশুটির মৃত্যুর খবর শুনে বারে বারে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন প্রসূতির আত্মীয়া । জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের এমএসভিপি চিকিৎসক কল্যাণ খাঁ বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন ।
জানা গিয়েছে, ধূপগুড়ি ব্লকের 2 নম্বর গাদং গ্রাম পঞ্চায়েত শালবাড়ির বাসিন্দা বুলবুল রহমান ৷ তাঁর পুত্রবধূ সাবিনা ইয়াসমিনকে গত বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের মাদার এণ্ড চাইল্ড হাবে প্রসব যন্ত্রনা নিয়ে ভরতি করা হয় । শুক্রবার সকালে পেশায় শিক্ষিকা সাবিনার সন্তানের জন্ম দেন ৷ কিন্তু জন্মের পর শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা ৷ চিকিৎসার গাফিলতিতে নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে ঘটনার পর হাসপাতালে ক্ষোভে ফেটে পড়েন রোগীর আত্মীয়রা । মাদার এন্ড চাইল্ড হাবের স্বাস্থ্য কর্মীদের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ আনেন সাবিনার পরিবারের লোকেরা ।
মৃত শিশুর বাবা আবুল কালাম আজাদ বলেন, 26 ডিসেম্বর ধূপগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে স্ত্রীর চেকআপের জন্য নিয়ে গিয়েছিলাম । তারপর সেখান থেকে স্ত্রীকে জলপাইগুড়ি মাদার এন্ড চাইল্ড হাবে স্থানান্তরিত করা হয় । 27 ডিসেম্বর হাসপাতাল থেকে তাঁকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয় । এরপর গত 4 জানুয়ারি ফের সাবিনাকে মাদার এন্ড চাইল্ড হাবে ভরতি করা হয় । আজ সকালে শিশুর জন্ম দেন স্ত্রী ৷ তবে সন্তানকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা ।
আবুলের অভিযোগ, "চিকিৎসকদের গাফিলতিতে আমার সন্তানের মৃত্যু হয়েছে ৷ আজ আমার সঙ্গে যা হল আর যেন কারও সঙ্গে এমন ঘটনা না ঘটে । কুকুরের মত ব্যবহার করা হয় এই সরকারি হাসপাতালে । সবেতেই টাকা দিতে হয় । সিজারের জন্য গ্লাভস আনতে বা লিফটে রোগীকে নিয়ে যেতেও টাকা চাওয়া হয় ৷ সরকারি হাসপাতাল হলেও টাকা ছাড়া কিছুই হয় না এখানে । সন্তানের মৃত্যুতে আমি লিখিত অভিযোগ দায়ের করব ।"
মৃত শিশুর দাদু বুলবুল রহমানের কথায়, "কত আশা নিয়ে সরকারি হাসপাতালে ভরতি করিয়েছিলাম বউমাকে । কিন্তু সব শেষ হয়ে গেল । সরকার এত সুযোগসুবিধা দিচ্ছে কিন্তু হাসপাতালের কর্মী ও ডাক্তাররা পরিষেবা ঠিক দিচ্ছে না বলেই আমরা ভুক্তভোগী হচ্ছি । আমি সরকারের কাছে ও থানায় অভিযোগ জানাব । যারা চিকিৎসার গাফিলতির সঙ্গে জড়িতে আমি তাদের কঠোর শাস্তি চাই ।" সাবিনা পারভিনের জা আর্জিনা বেগম অভিযোগ করেন, বারবার নার্সদের সাবিনাকে দেখার জন্য অনুরোধ করেছিলাম । তারা কথা শোনেনি ৷ ডাক্তারকেও ডাকেননি ৷ এর ফলে পেটেই বাচ্চাটি মারা গেল ।
আরও পড়ুন: