জলপাইগুড়ি, 1 এপ্রিল: চাঞ্চল্যকর মোড় নিল জলপাইগুড়ির 12 নম্বর ওয়ার্ডে দম্পতির অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ৷ জানা গিয়েছে, ওই দম্পতির ঘর থেকে যে সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে পুলিশ তাতে জেলার এক প্রভাবশালী নেতা-সহ 4 জনের নাম রয়েছে ৷ শনিবার সুবোধ ভট্টাচার্য (59) ও অপর্ণা ভট্টাচার্যের (51) দেহ উদ্ধার হয় তাঁদের ঘর থেকে ৷ প্রাথমিক অনুমান বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন তাঁরা ৷
2000-2002 সাল পর্যন্ত ফরওয়ার্ড ব্লকের কাউন্সিলর হিসেবে পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন অপর্ণা ভট্টাচার্য ৷ পরে তিনি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন ৷ জলপাইগুড়ি ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশনের চাইল্ডলাইনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন অপর্ণাদেবী ৷ তাঁর স্বামী জেলা চাইল্ড লাইন কমিটির প্রাক্তন সদস্য ছিলেন ৷ এই দম্পতির মৃত্যুর পর পুলিশ যে চার পাতার সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে, তাতে স্বাক্ষর রয়েছে সুবোধ ভট্টাচার্য ও অপর্ণা ভট্টাচার্যের ৷
এই অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় ইতিমধ্যেই সিবিআই তদন্তের দাবি তুলেছেন সুবোধ ভট্টাচার্যের দিদি তথা ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায় । তবে পুলিশ এই সুইসাইড নোট সম্পর্কে এখনই কোনও মন্তব্য করতে নারাজ । কী কারণে এই দুই সমাজসেবীর মৃত্যু তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে । এই প্রসঙ্গে কোতয়ালি থানার আইসি অর্ঘ্য সরকার জানিয়েছেন, এই অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়েছে । সব খতিয়ে দেখা হচ্ছে । ঘর থেকে উদ্ধার হয়েছে বিষের একটি শিশি, একটি গ্লাস ৷
এই প্রসঙ্গে, সুবোধ ভট্টাচার্যের দিদি তথা ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির বিজেপি বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায় বলেন, "আমি ভাবতেই পারছি না আমার ভাই এবং ভাইের বউ এর উপর তৃণমূল এভাবে মানষিক অত্যাচার চালিয়েছে । সুইসাইড নোটে কয়েকজনের নাম রয়েছে । ঘটনার সিবিআই তদন্তের দাবি জানাব আমি ।" অপর্ণা ভট্টাচার্য জলপাইগুড়ি পাণ্ডাপাড়া মোড়ের বাসিন্দা ছিলেন । তাঁদের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে ৷
আরও পড়ুন: স্বামী, স্ত্রী'র অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় চাঞ্চল্য জলপাইগুড়িতে
চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির সদস্য হিসেবে জলপাইগুড়ি শিশু পাচার কান্ডের পর্দাফাঁস করেছিলেন এই দম্পতি । এই ঘটনায় সুবোধ ভট্টাচার্য সে সময় জেলাশাসক-সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ ও অভিযোগ দায়ের করেছিলেন । এরপরেই সিআইডি শিশু পাচারকান্ডে বিমলা শিশু গৃহের কর্ণধার চন্দনা চক্রবর্তী-সহ জেলা শিশু সুরক্ষা আধিকারিক ও আরও অনেককে গ্রেফতার করে ৷ জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার খান্ডালবাহালে উমেশ গণপত এই প্রসঙ্গে বলেন, "আমরা অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করা করেছি । ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলেই মৃত্যুর কারণ জানা যাবে । সুইসাইড নোটের বিষয়ে আপডেট এখনও পাইনি ।"