জলপাইগুড়ি, 17 অগস্ট: জলপাইগুড়ি সমাজপাড়ার ব্রাহ্ম সমাজের জমিতে হঠাৎই প্রাচীর তুলছে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (IMA)। এমনটাই অভিযোগ স্থানীয়দের । দীর্ঘ 67 বছর ধরেই সমাজপাড়ার মাঠে দুর্গাপুজো করছে বাসিন্দারা । কিন্তু এবার হঠাৎ করেই খুঁটি পুজোর আগে মাঠে প্রাচীর দেওয়ার কাজ করতে গিয়ে স্থানীয়দের বাঁধায় পিছু হঠল ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের জলপাইগুড়ি শাখা (Locals fight with IMA after boundary wall constructed at Durga Puja ground) ।
ব্রাহ্ম সমাজের জমির প্রসঙ্গ উঠতেই সে সব পুরনো বিষয় বলে প্রশ্ন এড়ালেন আইএমএ-এর জলপাইগুড়ি শাখার সম্পাদক ডাঃ সুশান্ত রায় । এদিন স্থানীয়রা কাজ বন্ধ করিয়ে দেন । ডাঃ সুশান্ত রায় হুঁশিয়ারি দেন, সীমানা প্রাচীরের কাজ হবেই । আলোচনায় বসে পুজো কমিটির মহিলা সদস্যদের হুঁশিয়ারি দেওয়াতেই বিরোধ চরমে ওঠে ।
জলপাইগুড়ি শহরের 5 নম্বর ওয়ার্ডের সমাজপাড়া মাঠে বরাবরই দুর্গাপুজা হয় । দীর্ঘ 67 বছর ধরেই সমাজপাড়া মাঠেই স্থানীয়রা পুজো করে আসছে । বুধবার হঠাৎ করে আইএমএ মাঠের চারপাশে জেসিবি দিয়ে গর্ত করে সীমানা প্রাচীর দেওয়ার কাজ শুরু করলে এলাকাবাসীরা এসে বাঁধা দেয় । কোন মতেই তারা প্রাচীর দিতে দেবে না । স্থানীয় বাসিন্দা সোমা ঘোষ অভিযোগ করে বলেন, "আমরা জানতাম এটা ব্রাহ্ম সমাজের মাঠ । হঠাৎ করে কীভাবে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (Indian Medical Association) হয়ে গেল জানি না । আমরা চাই আমাদের বাচ্চারা যেভাবে খেলাধুলো করত সেইভাবেই খেলাধুলা করুক । আমাদের পুজোর অনুমতি দেওয়া হোক । হঠাৎ করে পুজো তো বন্ধ হতে পারে না । আইএমএ লিখিত কিছুই দিচ্ছে না ।"
স্থানীয় বাসিন্দা দেবারুন দাস ও সুকুমার সরকার বলেন, "হঠাৎ করে পুজোর জায়গায় প্রাচীর দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে । আমাদের 67 বছরের পুজো এটা বন্ধ করতে দেওয়া যায় না । ডাক্তারবাবুরা আমাদের না জানিয়ে হঠাৎ করে কেন এমন করল জানি না । সোমবার আমাদের খুঁটি পুজো তার আগে এটা কেন করল বুঝলাম না । আমরা চাই আলোচনায় বসে সমস্যার সমাধান হোক । আমরা চাই ছোটবেলা থেকে যেভাবে এই মাঠে খোলামেলা দেখে আসছি সেইভাবেই থাকুক ৷ পুজোপার্বন সব এখানে হোক । আমরা ছোটবেলা থেকে জানি এটা ব্রাহ্ম সমাজের কিন্তু হঠাৎ করে কীভাবে আইএমএ'র হয়ে গেল সেটাই প্রশ্ন ।"
এদিকে ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের জলপাইগুড়ি শাখার সম্পাদক ডাঃ সুশান্ত রায় বলেন, "কোন সমস্যা নেই । আমাদের জমি আমরা ঘিরে দেব তাতে সমস্যা কীসের ।" জমিটি ব্রাহ্ম সমাজের কি না, প্রশ্ন করা হলে সুশান্ত রায় বলেন, "পুরনো কথা বলে লাভ নেই । ব্রাহ্ম সমাজের জমি না কোন সমাজের জমি, কিন্তু তাঁদের(পুজো কমিটির)নয় । এটা আইএমএ-এর জমি । সব কাগজ আমাদের আছে । মাঠে সব কিছুই হবে আমি বলে দিয়েছি । তাঁরা মানবেন কি না মানবেন সেটা তাঁদের বিষয় ।"
আরও পড়ুন: চিতাবাঘ ও রেড পান্ডার চামড়া উদ্ধার, গ্রেফতার নেপালের 3 বাসিন্দা
অন্যদিকে স্থানীয় 5 নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সন্দীপ মাহাত বলেন, "আমি বাইরে আছি । ফিরে গিয়ে আলোচনা করে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করব ।"